১. মাথা মুণ্ডন করা হোক বা চুল ছোট করা হোক পুরো মাথাব্যাপী করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা মাথাই মুণ্ডন করেছিলেন। মাথার কিছু অংশ মুণ্ডন করা বা ছোট করা, আর কিছু অংশ ছেড়ে দেয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত বিরোধী। নাফে‘ রহ. ইবন উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন,
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কাযা‘) قَزَعٌ থেকে বারণ করেছেন। কাযা‘ সম্পর্কে নাফে‘ রহ. কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, শিশুর মাথার কিছু অংশ মুণ্ডন করা এবং কিছু অংশ রেখে দেয়া।[1]
২. কসর অর্থাৎ চুল ছোট করার অর্থ পুরো মাথা থেকে চুল কেটে ফেলা। ইবন মুনযির বলেন, যতটুকু কাটলে চুল ছোট করা বলা হয়, ততটুকু কাটলেই যথেষ্ট হবে।[2]
৩. কারো টাক মাথা থাকলে মাথায় ব্লেড অথবা ক্ষুর চালিয়ে দিলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।
৪. মহিলাদের ক্ষেত্রে চুলের গোছা থেকে হাতের আঙুলের এক কর পরিমাণ চুল কেটে ফেলাই যথেষ্ট। মহিলাদের জন্য হলক নেই। ইবন আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لَيْسَ عَلَى النِّسَاءِ الْحَلْقُ ، وَإِنَّمَا عَلَى النِّسَاءِ التَّقْصِيْرُ».
‘মহিলাদের ব্যাপারে মাথা কামানোর বিধান নেই, তাদের ওপর রয়েছে ছোট করার বিধান’।[3]
আলী রা. থেকে বর্ণিত,
«نَهَى رَسُوْلُ الله صلى الله عليه وسلم أَنْ تَحْلِقَ الْمَرْأَةُ رَأْسَهَا».
‘রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীকে মাথা মুণ্ডন করতে নিষেধ করেছেন।’[4]
সুতরাং মহিলাদের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে, তারা তাদের মাথার সব চুল একত্রে ধরে অথবা প্রতিটি বেণী থেকে এক আঙুলের প্রথম কর পরিমাণ কাটবে।
৫. মাথা মুণ্ডনের পর শরীরের অন্যান্য অংশের অবিন্যস্ত অবস্থা দূর করা সুন্নত। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নখ কেটেছিলেন।[5] ইবন উমর রা. হজ অথবা উমরার পর গোঁফ কাটতেন।[6] অনুরূপভাবে বগল ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করাও বাঞ্ছনীয়। কেননা তা কুরআনুল কারীমের নির্দেশوليَقْضُوْا تَفَثَهُمْ ‘এবং তারা যেন তাদের ময়লা পরিষ্কার করে।’[7]-এর আওতায় পড়ে।
[2]. সাইয়িদ আস-সাবিক : ফিকহুসসুন্নাহ, ১/৭৪৩।
[3]. আবূ দাউদ : ১৯৮৫।
[4]. তিরমিযী : ৯১৫।
[5]. সাইয়িদ আস-সাবেক : প্রাগুক্ত ১/৭৪৩।
[6]. বায়হাকী : ৯১৮৬।
[7]. হজ : ২৯।