হজের মূল কাজ শুরু হয় ৮ যিলহজ থেকে। যিনি হজের নিয়তে এসেছেন তিনি তামাত্তুকারী হলে পূর্বেই উমরা সম্পন্ন করেছেন। এখন তাকে শুধু হজের কাজগুলো সম্পাদন করতে হবে। তিনি পরবর্তী কাজগুলো নিচের ধারাবাহিকতায় সম্পন্ন করবেন।
১. তারবিয়া[1]র দিন অর্থাৎ ৮ যিলহজ তামাত্তু হজকারী এবং মক্কাবাসিদের মধ্য থেকে যারা হজ করতে ইচ্ছুক তারা হজের জন্য ইহরাম বেঁধে মিনায় গমন করবেন। পক্ষান্তরে যারা মীকাতের বাইরে থেকে ইফরাদ বা কিরান হজের জন্য ইহরাম বেঁধে এসেছেন তারা ইহরামে বহাল থাকা অবস্থায় মিনায় গমন করবেন।
২. নতুন করে ইহরাম বাঁধার আগে ইহরামের সুন্নত আমলসমূহ যেমন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া, গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। যেমনটি পূর্বে মীকাত থেকে উমরার ইহরাম বাঁধার সময় করেছেন।
৩. অতঃপর নিজ নিজ অবস্থানস্থল থেকেই ইহরামের কাপড় পরিধান করবেন।
৪. তারপর যদি কোনো ফরয সালাতের পর ইহরাম বাঁধা যায় তবে তা ভালো। আর যদি তখন কোনো সালাত না থাকে, তবে ওযু করা সম্ভব হলে ওযুর পর দু’রাক‘আত তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়ে ইহরাম বাঁধা ভালো। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তাতে কোনো অসুবিধা নেই, শুধু নিয়ত করে নিলেই চলবে।
৫. তারপর মনে মনে হজের নিয়ত করে لَبَّيْكَ حَجًّا (লাব্বাইকা হাজ্জান্) বলে হজের কাজ শুরু করবেন।
৬. যদি হজ পূর্ণ করার ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতার আশংকা করেন, তাহলে তালবিয়ার পরপরই বলবেন,
اللَّهُمَّ مَحِلِّي حَيْثُ حَبَسْتَنِي
(আল্লাহুম্মা মাহাল্লী হাইছু হাবাসতানী)
‘হে আল্লাহ, আপনি আমাকে যেখানে আটকে দেবেন, সেখানেই আমি হালাল হয়ে যাব।’[2]
৭. যদি বদলী হজ হয় তাহলে মনে মনে তার নিয়ত করে বদলী হজকারীর পক্ষ থেকে বলবেন,
عَنْ .. لَبَّيْكَ حَجًّا (লাব্বাইকা হাজ্জান্ আন....) (উমুক পুরুষ/মহিলার পক্ষ থেকে লাব্বাইক পাঠ করছি।) [3]
৮. মিনায় গিয়ে যোহর-আসর, মাগরিব-এশা ও পরদিন ফজরের সালাত আদায় করবেন। এ কয়টি সালাত মিনায় আদায় করা সুন্নত। প্রতিটি সালাতই তার নির্ধারিত ওয়াক্তে আদায় করবেন। চার রাকাআত বিশিষ্ট সালাতকে দু’রাকাআত করে পড়বেন। এখানে সালাত জমা করবেন না অর্থাৎ দুই ওয়াক্তের সালাত একসাথে আদায় করবেন না। কারণ রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় একসাথে দু’ওয়াক্তের সালাত আদায় করেননি।
৯. মুস্তাহাব হলো, এ দিন বিশ্রাম নিয়ে হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করা, যিক্র ও ইস্তেগফার করা এবং বেশি করে তালবিয়া পড়া। সময়-সুযোগ পেলে হজের মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে পড়াশোনা করবেন। বিজ্ঞ আলেমগণের ওয়াজ-নসীহত ও হজ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুনবেন।
১০. ৯ যিলহজ রাতে মিনায় রাত্রি যাপন করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই রাত মিনায় যাপন করেছেন। কোনো কারণে রাত্রি যাপন করা সম্ভব না হলে কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহ তা‘আলা নিয়ত অনুযায়ী সওয়াব দেবেন ইনশাআল্লাহ।
[2]. বুখারী : ৫০৮৯; মুসলিম : ১২০৭।
[3]. আবূ দাউদ : ১৮১১; ইবন মাজাহ্ : ২৯০৩।