পরস্পর সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ ও সতেজ রাখার জন্য ইসলামের বিধানে সালাম একটি সুন্দর ব্যবস্থা। সাক্ষাতের সময় একে অন্যের চেহারার দিকে না তাকালে, একটু মুচকি না হাসলে, কথা না বললে স্বাভাবিকভাবে উভয়ের মনে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়। কিন্তু হাসিমুখে সালাম দিয়ে কথা বললে মহববত ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। আর সেটাই হল ইসলামের কাম্য।
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘প্রত্যেক কল্যাণমূলক কর্মই হল সদকাহ (করার সমতুল্য)। আর তোমার ভায়ের সাথে তোমার হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা এবং তোমার বালতির সাহায্যে (কুয়ো থেকে পানি তুলে) তোমার ভায়ের পাত্র (কলসী ইত্যাদি) ভরে দেওয়াও কল্যাণমূলক (সৎ)কর্মের পর্যায়ভুক্ত।’’[1]
তিনি আরো বলেন, ‘‘কল্যাণমূলক কোন কর্মকেই অবজ্ঞা করো না, যদিও তা তোমার ভায়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করেও হয়।’’[2]
আস্-সালাম হল মহান আল্লাহর অন্যতম নাম এবং সালাম মানে শান্তি। সুতরাং সালাম দিয়ে ও নিয়ে এ দু‘আই করা হয় যে, আস্-সালাম আল্লাহ তোমার সাথী হোক অথবা তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
সালাম দেওয়ার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব রয়েছে ইসলামে। মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ- فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ وَإِنْ قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারো গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে ও তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না। এটিই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা সতর্ক হও। যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদেরকে যতক্ষণ পর্যন্ত অনুমতি না দেওয়া হয় ততক্ষণ ওতে প্রবেশ করবে না। আবার যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও’ তবে তোমরা ফিরে যাবে। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম। আর তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।’’ (সূরা নূর-২৪:২৭-২৮)
নিজ ঘরেও প্রবেশকালে সালাম দেওয়ার গুরুত্ব আরোপ করে মহান আল্লাহ বলেন,
فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِنْ عِنْدِ اللَّهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
অর্থাৎ, সুতরাং তোমরা যখন গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র। (সূরা নূর-২৪:৬১)
সালামের জবাবে সালাম প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,
وَإِذَا حُيِّيتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ حَسِيبًا
অর্থাৎ, আর যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করবে অথবা অনুরূপই করবে। (সূরা নিসা-৪:৮৬)
একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, মুসলিমের উপর মুসলিমের ৬টি হক রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হল, তা কি কি হে আল্লাহর রসূল? বললেন, ‘‘যখন তার সাথে দেখা হবে, তখন তাকে সালাম দেবে।---’’[3]
রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘হে মানুষ! তোমরা সালাম প্রচার কর, অন্নদান কর, জ্ঞাতি-বন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখ এবং লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তোমরা নামায পড়। এতে তোমরা নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’’[4]
আনাস (রাঃ) বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল (ﷺ) আমাকে বললেন, ‘‘বেটা! তুমি তোমার পরিবারে প্রবেশ করলে সালাম দিও; এতে তোমার ও তোমার পরিবারের জন্য বরকত হবে।’’[5]
এক ব্যক্তি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করল যে, ‘কোন্ ইসলাম উত্তম? (ইসলামের কোন্ কোন্ কাজ উত্তম কাজ?) উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘(অভাবীকে) খাদ্যদান করা এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।’’[6]
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না মু’মিন হয়েছ; আর ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতেও পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপোসে সম্প্রীতি কায়েম করেছ। আমি কি তোমাদেরকে এমন এক কাজের সংবাদ দেব না, যা করলে তোমাদের আপোসে সম্প্রীতি কায়েম হবে? তোমরা আপোসের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’’[7]
আসলে যে সালাম দিতে কার্পণ্য করে, সে সবচেয়ে বড় কৃপণ। রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় চোর সে, যে নামায চুরি করে এবং সবচেয়ে বড় বখীল সে, যে সালাম দিতে বখীলি করে।’’[8] তিনি আরো বলেন,
إِنَّ أَعْجَزَ النَّاسِ مَنْ عَجَزَ فِي الدُّعَاءِ، وَأَبْخَلَ النَّاسِ مَنْ بَخِلَ بِالسَّلَامِ
‘‘সবচেয়ে বড় অক্ষম সে, যে দু‘আ করতে অক্ষমতা প্রকাশ করে এবং সবচেয়ে বড় কৃপণ সে, যে সালাম দিতে কৃপণতা করে।’’[9]
[2]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৬২৬
[3]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২১৬২
[4]. তিরমিযী হা/, ইবনে মাজাহ, সহীহ তারগীব হা/৬১০
[5]. তিরমিযী হা/২৬৯৮
[6]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/ ৬২৩৬, মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/৩৯
[7]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/৫৪
[8]. সহীহুল জা’মে হা/৯৬৬
[9]. সহীহুল জা’মে হা/৯৬৬, আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১০৪৪
সালাম দেওয়া সুন্নাত এ কথা পূর্বোক্ত হাদীসসমূহে বর্ণিত হয়েছে। আর তার উত্তর দেওয়া ওয়াজেব হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহর নির্দেশ উপরে বর্ণিত হয়েছে। বলা বাহুল্য সালাম না দিলে সুন্নাত তরক হবে। কিন্তু সালামের উত্তর না দিলে ওয়াজেব তরক তথা তার জন্য কাবীরা গোনাহ হবে।
অবশ্য একটি জামাআত যদি অন্য জামাআতকে সালাম দেয়, তাহলে তাদের মধ্যে একটি লোক সালাম দিলেই যথেষ্ট। অনুরূপ জামাআতের মধ্যে যদি একটি লোক তার উত্তর দেয়, তাহলে ওয়াজেব আদায় হয়ে যাবে।[1] অবশ্য প্রত্যেকের উত্তর দেওয়াটাই উত্তম।
সালামের সবচেয়ে উত্তম বাক্য হলঃ
আস্-সালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ।
অতঃপরঃ আস্-সালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহ।
অতঃপরঃ আস্-সালামু আলাইকুম।
এক ব্যক্তি রাসুল (ﷺ)-এর নিকট এসে বলল, ‘আসসালা-মু আলাইকুম।’ তিনি তার জওয়াব দিলেন। অতঃপর লোকটি বসলে রসূল (ﷺ) বললেন, ‘‘১০টি সওয়াব এর জন্য। অতঃপর দ্বিতীয় এক ব্যক্তি এসে বলল, ‘আসসালা-মু আলাইকুম অরাহমাতুল্লা-হ।’ তিনি তার উত্তর দিলেন। অতঃপর লোকটি বসলে তিনি বললেন, ‘‘২০টি (সওয়াব এর জন্য।)’’ অতঃপর তৃতীয় আর একজন এসে বলল, ‘আসসালা-মু আলাইকুম অরাহমাতুল্লা-হি অবারাকা-তুহ।’ (অর্থাৎ আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর করুণা ও তাঁর অনেক বরকত বর্ষণ হোক।) অতঃপর লোকটি বসলে তিনি বললেন, ‘‘৩০টি (সওয়াব এর জন্য।)’’[1]
মহান আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করে বললেন, ‘যাও ঐ সকল ফিরিশ্তাকে সালাম জানাও এবং মনোযোগ সহকারে শুনে দেখ, তারা কি উত্তর দেয়। সেটা হল তোমার ও তোমার বংশধরদের অভিবাদন।’ সুতরাং আদম গিয়ে তাঁদেরকে সালাম জানালেনঃ ‘আসসালামু আলাইকুম।’ উত্তরে তাঁরা বললেন, ‘আস্সালামু আলাইকা অরাহমাতুল্লাহ।’ উত্তরে তাঁরা ‘অরাহমাতুল্লাহ’ অতিরিক্ত করলেন।[2]
প্রকাশ থাকে যে, যাকে সালাম দেওয়া হয় সে একা হলে ‘আসসালামু আলাইকা’ এবং মহিলা হলে ‘আসসালামু আলাইকি’ অথবা উভয়ের জন্য ‘আসসালামু আলাইক’ বলা বৈধ। পক্ষান্তরে একা পুরুষ অথবা মহিলার ক্ষেত্রে এবং একাধিক লোকের ক্ষেত্রেও ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দেওয়া বিধেয়।
পক্ষান্তরে সালামদাতার জন্য ‘অবারাকাতুহ’র পরে অতিরিক্ত অন্য কোন শব্দ বলা বৈধ নয়।
যেমন ‘আলাইকাস সালাম’ বলে সালাম দেওয়া বৈধ নয়। কারণ, তা মৃতের জন্য অভিবাদন।[3] অর্থাৎ, সে যুগের কবিরা সাধারণতঃ ঐ বলে মৃতকে সম্বোধন করে সালাম জানাতো।
উত্তরের বাক্যাবলী হবে সালামের থেকে উত্তম; বাক্যে, গলার স্বরে, ভাবে ও ভঙ্গিতে। তা না হলে সালামের অনুরূপ হওয়া জরুরী। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করবে অথবা অনুরূপই করবে। (সূরা নিসা-৪:৮৬)
অতএব ‘আস্-সালামু আলাইকুম’-এর জবাবে ‘অআলাইকুমুস্-সালামু অরাহমাতুল্লাহ’ এবং ‘আস্-সালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহ’-এর জবাবে ‘অআলাইকুমুস্-সালামু অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ’ বলা উত্তম। নচেৎ সালামদাতা যে বাক্যে সালাম দেবে, সেই বাক্য দিয়েই তার উত্তর দেওয়া জরুরী। সালাম অপেক্ষা তার উত্তর যেন নিকৃষ্টতর না হয়, নচেৎ সম্প্রীতির স্থানে বিদ্বেষ জন্ম নেবে।
পক্ষান্তরে ‘আস্-সালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ’র জবাবে অনুরূপ বাক্যই বলতে হবে। কারণ, অনেকের মতে এই শব্দাবলীর উপর বাড়তি কোন শব্দ (যেমনঃ ‘অমাগফিরাতুহ, অরিযওয়ানুহ, অইহসানুহ’ ইত্যাদি) অতিরিক্ত করা যাবে না। যেহেতু রাসুল (ﷺ) কর্তৃক সেরূপ কোন প্রমাণ নেই। মহান আল্লাহও আহলে বায়তের জন্য কেবল ‘অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। (সূরা হূদ ৭৩ আয়াত দ্রঃ) তাছাড়া ইবনে উমার (রাঃ) ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) ‘অবারাকাতুহ’র পর অন্য শব্দ বাড়তি বলতে অপছন্দ করতেন।[4]
কিন্তু সালামের জবাবে ‘অবারাকাতুহ’র পর ‘অমাগফিরাতুহ’ অতিরিক্ত করা সাহাবী যায়দ বিন আরকাম থেকে প্রমাণিত আছে। তিনি বলেন, ‘নবী (ﷺ) যখন আমাদেরকে সালাম দিতেন, তখন আমরা তার উত্তরে বলতাম, অআলাইকাস সালামু অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু অমাগফিরাতুহ।’[5]
[2]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/ ৩৩২৬, মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৮৪১
[3]. আবূ দাঊদ হা/৫২০৯, তিরমিযী হা/২৭২২, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১৪০৩
[4]. তামহীদ, ইবনু আব্দুল বার্র ৫/২৯৩
[5]. বুখারীর তারীখ কাবীর, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১৪৪৯
সালাম ও তার উত্তর এমন উচ্চস্বরে বলতে হবে, যাতে শোনা যায়। বিশেষ করে সালামের উত্তর যদি এমন শব্দে দেওয়া হয়, যাতে সালামদাতা শুনতে না পায়, তাহলে ওয়াজেব আদায় হবে না। আর তাতে গোনাহগার থেকে যেতে হবে।[1]
সালাম দেওয়ার পর যদি সন্দেহ হয় যে, যাকে সালাম দেওয়া হল সে শুনতে পায়নি, তাহলে ৩ বার সালাম বলা মুস্তাহাব। আল্লাহর রসূল (ﷺ) এরূপই করতেন।[1]
এক ব্যক্তি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করল যে,
أَيُّ الْإِسْلَامِ خَيْرٌ قَالَ تُطْعِمُ الطَّعَامَ وَتَقْرَأُ السَّلَامَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَعَلَى مَنْ لَمْ تَعْرِفْ
‘কোন্ ইসলাম উত্তম? (ইসলামের কোন্ কোন্ কাজ উত্তম কাজ?) উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘(অভাবীকে) খাদ্যদান করা এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।’’[1]
মহানবী (ﷺ) বলেন, ‘‘কিয়ামতের একটি আলামত এই যে, লোকেরা কেবল পরিচিত লোককে সালাম দেবে।’’[2]
[2]. আহমাদ ১/৪০৭-৪০৮, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/৬৪৮
অর্থাৎ, যে বাইরে থেকে আসবে, সে ঘরে, মজলিসে বা মসজিদে এসে সালাম দেবে। যে ব্যক্তি ঘরে, মজলিসে বা মসজিদে থাকবে তার জন্য আগে বেড়ে আগন্তুককে সালাম দেওয়া সুন্নাত নয়।
সুন্নাত হল উট, ঘোড়া, সাইকেল বা গাড়ির উপর সওয়ার লোক পায়ে হেঁটে যাওয়া লোককে, পায়ে হেঁটে যাওয়া লোক বসে থাকা লোককে, অল্প সংখ্যক লোক বেশী সংখ্যক লোককে, বয়সে ছোট মানুষ অপেক্ষাকৃত বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষকে সালাম দেবে।[1]
কিন্তু যদি এর বিপরীতভাবে কেউ সালাম দেয়, তাহলে তা দোষের কিছু নয়। তবে অবশ্যই সে সুন্নাহ ও আফযলের খিলাপ কাজ করবে।
পক্ষান্তরে উভয় পক্ষ যদি মানে ও পরিমাণে সমান হয়, তাহলে তাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে প্রথমে সালাম দিয়ে থাকে।[2]
[2]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/৬০৭৭, সিলসিলাহ সহীহাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১১৪৬
একজনকে সালাম দেওয়ার পর গাছ বা দেওয়ালের আড়াল হয়ে পুনরায় দেখা হলে আবার সালাম দেওয়া সুন্নাত। যেহেতু আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘তোমাদের কারো নিজ ভায়ের সাথে সাক্ষাৎ হলে তাকে সালাম কর। অতঃপর উভয়ের মাঝে কোন গাছ কিংবা দেওয়াল কিংবা পাথর আড়াল হওয়ার পর আবার সাক্ষাৎ হলে আবার সালাম দাও।’’[1]
মহিলা কোন মাহরাম হলে অথবা গায়র মাহরাম বৃদ্ধা হলে তাকে সালাম দেওয়া বৈধ। নচেৎ গায়র মাহরাম কোন যুবতী মহিলাকে - বিশেষ করে ফিতনার ভয় থাকলে - তাকে সালাম দেওয়া এবং তার মুখ খোলানো বৈধ নয়।
আল্লাহর রসূল (ﷺ) ও তাঁর সাহাবাগণ মহিলাকে সালাম দেওয়ার কথা স্বতন্ত্র। কারণ তাঁদের মাঝে সে ফিতনার ভয় মোটেই ছিল না।