‘তাশাব্বুহ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ:
‘তাশাব্বুহ’ শব্দটি ‘মুশাবাহাহ’ শব্দ থেকে গৃহীত। তার অর্থ হলো: ‘মুমাসালাহ’ বা সাদৃশ্য গ্রহণ, মিল করা; অনুরূপ অপর অর্থ ‘মুহাকাত’ বা অনুকরণ করা, নকল করা; তদ্রূপ অন্য অর্থ হচ্ছে, তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করা।
আর ‘তাশবীহ’ মানে হলো: তামসীল বা দৃষ্টান্ত স্থাপন, সাদৃশ্য নির্ধারণ।
পক্ষান্তরে ‘মুতাশাবিহাত’ মানে হলো: ‘মুতামাসিলাত’ বা সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়াদি। যেমন, বলা হয়,
أشبه فلان فلانا أي ماثله وحاكاه وقلده
“অমুক ব্যক্তি অমুক ব্যক্তির মতো হয়েছে, অর্থাৎ সে তার সাদৃশ্য গ্রহণ করেছে, তার অনুকরণ করেছে এবং সে তাকে অন্ধভাবে অনুসরণ করেছে।
পরিভাষায় যে ‘তাশাব্বুহ’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করা নিষিদ্ধ করে কুরআন ও সুন্নায় বক্তব্য এসেছে, তা হলো: যে কোনো প্রকার কাফিরদের আকীদা-বিশ্বাস, তাদের পূজা-পার্বন, তাদের রীতি-নীতি, তাদের আচার-আচরণের অনুরূপ কাজ করা, যা একান্তভাবেই তাদের বৈশিষ্ট্যসমূহের অন্তর্ভুক্ত বলে স্বীকৃত।
অনুরূপভাবে অসৎ ব্যক্তিদের অনুকরণ করা, যদিও তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হোক না কেন। যেমন, ফাসিক (পাপচারী), জাহিল (অজ্ঞ) ও বেদুইন বা যাযাবরগণ, যাদের দীন পরিপূর্ণ হয় নি, যেমন খুব শীঘ্রই তার বিবরণ আসছে।
অতএব, আমরা মোটামুটিভাবে সংক্ষেপে বলতে পারি, যা কাফিরদের বৈশিষ্ট্য, আকীদা-বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও পূজা-পার্বনসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং যা শরী‘আতের বক্তব্য বা মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক নয় আর তার ওপর ভিত্তি করে কোনো গোলযোগেরও উদ্ভব হয় না, তা ‘তাশাব্বুহ’ বা ‘অনুসরণ-অনুকরণ’ এর অন্তর্ভুক্ত হবে না আর এটাই হলো সংক্ষিপ্ত মূলনীতি।