হজের শর্তাবলী ও যার ওপর হজ ওয়াজিব
- হজ একটি অবশ্য পালনীয় ইবাদত, তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে।
- নিম্নোক্ত ৭/৮টি মৌলিক শর্ত পূরণ সাপেক্ষে হজ প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরয, যা জীবনে অন্তত একবার পালন করতে হবে।
শর্তগুলো হলো:
- মুসলিম হওয়া।
- প্রাপ্তবয়স্ক/বালিগ হওয়া (১৫ বছর)।
- স্বাধীন বা মুক্ত হওয়া (কৃতদাস না হওয়া)।
- শারীরিকভাবে সুস্থ ও মানসিক ভারসাম্য থাকা।
- হজে গমনের ও সম্পূর্ণ খরচ বহনের সামর্থ্য থাকা।
- হজ পালনের জন্য যাত্রাপথের নিরাপত্তা থাকা।
- মহিলার সঙ্গে মাহরাম থাকা।
* হজে থাকাকালীন সময়কাল পরিবারের ভরণপোষণের নিশ্চয়তা করা।
- একজন মহিলার মাহরাম হলেন তার স্বামী অথবা তার পরিবার ও আত্মীয়ের মধ্যে এমন একজন পুরুষ যার সাথে ইসলামী শরী‘আহ্ মোতাবেক বিবাহ বৈধ নয়। (যথা -পিতা, ভাই, ছেলে, চাচা, মামা, ভাইয়ের/বোনের ছেলে)
- যদি কেউ আপনাকে হজ করার জন্য খরচ বা অর্থ (হালাল অর্থ) প্রদান করেন তবে তা বৈধ। আপনি যদি এ টাকায় হজ পালন করেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার ওপর হজ আর বাধ্যতামূলক হবে না; এমনকি পরবর্তীতে আপনি যদি আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হনও।
- আপনি যদি আপনার সন্তানকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই হজে নিয়ে যান তাহলে সেই হজ সেবামূলক হজ হিসেবে গণ্য হবে ও এ হজের সাওয়াব আপনি লাভ করবেন এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর যদি সে আর্থিক সামর্থ্যবান হয়, তবে আপনার সন্তানের ওপর পুনরায় হজ ফরয হবে।
- যে নারীর হজ সফর সম্পন্ন করার অর্থমূল্যের নিজস্ব অলঙ্কার রয়েছে তার ওপর হজ ফরয। সে এ অলঙ্কার বিক্রি করেই হজে যেতে পারবে তবে অবশ্যই মাহরাম সঙ্গে নিতে হবে। কোনো মহিলার যদি মাহরাম না থাকে তবে হজ তার জন্য প্রযোজ্য নয়। সে কাউকে দিয়ে তার বদলি হজ করিয়ে নিবে। যদি কোনো মহিলা মাহরাম ছাড়াই হজে যায় তাহলে বড় ধরনের গোনাহে লিপ্ত হলো বলে আলেমগণ মত প্রকাশ করেছেন।
- একজন ব্যক্তি টাকা ধার/কর্জ করেও হজ পালন করতে পারবেন, যদি তিনি এ টাকা ভবিষ্যতে পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখেন, তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ধার করে হজ করা জরুরি নয়।
- যদি কোনো ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও হজ পালন না করেই মারা যায়, তাহলে অন্য কেউ তার পক্ষে বদলী হজ করতে পারবেন। তবে একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, তা হচ্ছে, বদলী হজকারীকে সর্বপ্রথম তার নিজের হজ পালন করেছেন এমন হতে হবে।
- অনেক লোক ভুল করে প্রচার করে থাকেন যে, যিনি উমরাহ করেছেন তার ওপর হজ ফরয হয়ে যায়। হজ তার ওপর ফরয নয় যার এটা পালন করার মতো যথেষ্ট সামর্থ্য নেই, এমনকি সে যদি হজের মাসেও উমরাহ পালন করে।
একটি ধারণা প্রচলিত আছে, যার ঘরে অবিবাহিত কন্যা রয়েছে সেই কন্যার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তার ওপর হজ ফরয নয়। এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত কথা।