হজ সম্পর্কে ভুল ধারণা ও শাস্তি
- অনেক সাধারণ মানুষই সামর্থ্য হওয়ার পরও মনে করেন -কেন কম বয়সে হজ করবো? হজ করলে তো আমাকে হজ ধরে রাখতে হবে! পূর্ণাঙ্গভাবে ইসলাম অনুসরণ না করা পর্যন্ত তো হজে যাওয়া ঠিক হবে না! হজ করলে তো আর টিভি, গান-বাজনা দেখা যাবে না! সহজ পন্থায় (অবৈধ) অর্থ উপার্জন করতে পারব না! হজ করার পর যদি আমি খারাপ কাজে লিপ্ত হই তাহলে লোকেই বা কী বলবে!.. সুতরাং এখন জীবনকে উপভোগ করি, আর কিছু টাকা পয়সা উপার্জন করে নেই। আর তারপর বৃদ্ধ বয়সে যখন কোনো কিছু করার থাকবে না তখন গিয়ে হজ করে আসব!! তখন আল্লাহ অবশ্যই আমার অতীতের সকল পাপ মাফ করে দেবেন এবং আমি ইনশা-আল্লাহ জান্নাতে যেতে পারবো!! কি যুক্তি আর বুদ্ধিমান আমরা চিন্তা করেছেন!
-হে আল্লাহ তুমি আমাদের দয়া ও হিদায়াত দান কর। আমরা যদি মনে করি, আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সঙ্গে চালাকি করব, তাহলে মনে রাখবেন এর মাধ্যমে আমরা আসলে আমাদের নিজেদেরকেই বোকা বানাচ্ছি, দোষী করছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
- যারা সামর্থ্য হওয়ার পরও হজকে মুলতবি করে রেখেছেন তাদের জন্য বড় সতর্কবাণী হলো, উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি হজের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ পরিত্যাগ করল, সে ইয়াহূদী হয়ে মরুক অথবা নাসারা হয়ে মরুক -তাতে কিছু যায় আসে না’’।[1]
- উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, ‘‘আমার ইচ্ছা হয় যে, কিছু লোককে রাজ্জ্যের শহরগুলোতে প্রেরণ করি এবং তারা খুঁজে দেখুক ঐ সমস্ত লোককে যাদের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ পালন করে না তাদের ওপর জিযিয়া কর আরোপ করা হোক। কেননা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা হজ পালন করে না তারা মুসলিম নয়, তারা মুসলিম নয়’’।
- ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে হজ পালন করতে চায় সে যেন দ্রুত তা পালন করে। কেননা সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে অথবা কোনো সমস্যায় জর্জরিত হয়ে হজ করার সুযোগ হারাতে পারে”।[2]
হজের সামর্থ্য হওয়ার সাথে সাথেই হজ পালন করা উচিত। কারণ মৃত্যু কখন চলে আসতে পারে তা জানা নেই। অলসতার কারণে একটি ফরয ইবাদত বাকি রেখে মারা গেলে তো আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
[1] সুনানুল কুবরা, হাদীস নং ৮৯২৩
[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭৩২
[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ১৭৩২