হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
৩৬. নিজ অধীনস্থ মহিলাদের অশ্লীলতায় খুশি হওয়া অথবা তা চোখ বুজে মেনে নেয়া

নিজ অধীনস্থ মহিলাদের অশ্লীলতায় খুশি হওয়া অথবা তা চোখ বুজে মেনে নেয়াও আরেকটি কবীরা গুনাহ্ এবং হারাম কাজ। যাকে আরবী ভাষায় দিয়াসাহ্ এবং উক্ত ব্যক্তিকে দাইয়ূস বলা হয়।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

ثَلَاثَةٌ قَدْ حَرَّمَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَلَيْهِمُ الْـجَنَّةَ : مُـدْمِنُ الْـخَمْرِ، وَالْعَاقُّ، وَالدَّيُّوْثُ الَّذِيْ يُقِرُّ فِيْ أَهْلِهِ الْـخَبَثَ.

‘‘তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তারা হলো মধ্যপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান এবং এমন আত্মমর্যাদাহীন বা ঈর্ষাহীন ব্যক্তি যে নিজ পরিবারবর্গের ব্যাপারে ব্যভিচার তথা অশ্লীলতা মেনে নেয়’’।

(আহমাদ ২/৬৯, ১২৮ সা’হীহুল্ জা’মি’, হাদীস ৩০৫২ সা’হীহুত্ তারগীবি ওয়াত্ তার্হীব, হাদীস ২৩৬৬)

‘আম্মার বিন্ ইয়াসির (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

ثَلَاثَةٌ لَا يَدْخُلُوْنَ الْـجَنَّةَ أَبَدًا : الدَّيُّوْثُ، وَالرَّجُلَةُ مِنَ النِّسَاءِ، وَمُدْمِنُ الْـخَمْرِ، قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ اللهِ! أَمَّا مُدْمِنُ الْـخَمْرِ فَقَدْ عَرَفْنَاهُ فَمَا الدَّيُّوْثُ؟ قَالَ: الَّذِيْ لَا يُبَالِيْ مَنْ دَخَلَ عَلَى أَهْلِهِ، قُلْنَا: فَمَا الرَّجُلَةُ مِنَ النِّسَاءِ؟ قَالَ: الَّتِيْ تَشَبَّهُ بِالرِّجَالِ.

‘‘তিন ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তারা হলো আত্মমর্যাদাহীন বা ঈর্ষাহীন ব্যক্তি, পুরুষ মার্কা মেয়ে এবং মধ্যপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মধ্যপানে অভ্যস্ত ব্যক্তিকে তো আমরা চিনি তবে আত্মমর্যাদাহীন বা ঈর্ষাহীন ব্যক্তি বলতে আপনি কাকে বুঝাচ্ছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যে নিজ পরিবারবর্গের নিকট কে বা কারা আসা-যাওয়া করছে এর কোন খবরই রাখে না বা এর কোন পরোয়াই করে না। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন: তা হলে পুরুষ মার্কা মেয়ে বলতে আপনি কাদেরকে বুঝাতে চাচ্ছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যে মহিলা পুরুষের সাথে কোনভাবে সাদৃশ্য বজায় রাখে’’। (সা’হীহুত্ তারগীবি ওয়াত্ তার্হীব, হাদীস ২০৭১, ২৩৬৭)

আত্মমর্যাদাহীনতা বা ঈর্ষাহীনতার আরেকটি পর্যায় এই যে, কেউ নিজ মেয়ে বা স্ত্রীকে গায়রে মাহ্রাম তথা যার সাথে দেখা দেয়া হারাম এমন কারোর সাথে সরাসরি, টেলিফোন অথবা মোবাইলে কথা বলতে বা হাসাহাসি করতে কিংবা নির্জনে বসে গল্প-গুজব করতে দেখলো অথচ সে কিছুই বললো না।

আত্মমর্যাদাহীনতা বা ঈর্ষাহীনতার আরেকটি পর্যায় এও যে, কারোর কাজের ছেলে বা গাড়ি চালক তার অন্দরমহলে যখন-তখন ঢুকে পড়ছে এবং তার স্ত্রী-কন্যার সাথে কথাবার্তা বলছে। তার স্ত্রী-কন্যারা যখন-তখন গাড়ি চালকের সাথে একাকী মার্কেট, পার্ক, বিয়ে বাড়ি ইত্যাদির দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে অথচ সে তা জানা সত্ত্বেও তাদেরকে এ ব্যাপারে কিছুই বলছে না।

আত্মমর্যাদাহীনতা বা ঈর্ষাহীনতার আরেকটি পর্যায় এও যে, কারোর স্ত্রী-কন্যা বেপর্দাভাবে রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর পিপাসার্ত যুবকরা ওদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টিতে বার বার তাকিয়ে আত্মতৃপ্ত হচ্ছে অথচ সে তা জানা সত্ত্বেও তাদেরকে এ ব্যাপারে কিছুই বলছে না।

আত্মমর্যাদাহীনতা বা ঈর্ষাহীনতার আরেকটি পর্যায় এও যে, কারোর স্ত্রী-কন্যা টিভির পর্দায় অর্ধ উলঙ্গ নায়ক-নায়িকার গলা ধরাধরি, চুমোচুমি ইত্যাদি দেখে উক্ত নায়কের প্রতি নিজের অজান্তেই আসক্ত হয়ে পড়ছে অথচ সে নিজেই জেনে-শুনে তাদের জন্য এ কুব্যবস্থা চালু করে রেখেছে। আরো কত্তো কী?