মিথ্যা কসম খাওয়াও একটি কবীরা গুনাহ্। চাই তা কোন বিপদ থেকে বাঁচার জন্যই হোক অথবা কারোর কোন সম্পদ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করার জন্যই হোক।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
الْكَبَائِرُ : الْإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ، وَالْيَمِيْنُ الْغَمُوْسُ.
‘‘কবীরা গুনাহ্গুলো হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া, অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম খাওয়া’’। (বুখারী ৬৬৭৫, ৬৮৭০, ৬৯২০)
মিথ্যা কসম খেয়ে পণ্য বিক্রেতার সাথে আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন কোন কথা বলবেন না, তার দিকে তাকাবেনও না এমনকি তাকে গুনাহ্ থেকে পবিত্রও করবেন না উপরন্তু তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ، وَلَا يُزَكِّيْهِمْ، وَلَـهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ، قَالَ: فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ ثَلَاثَ مِرَارٍ، قَالَ أَبُوْ ذَرٍّ: خَابُوْا وَخَسِرُوْا، مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ!؟ قَالَ: الْـمُسْبِلُ، وَالْـمَنَّانُ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: الْـمَنَّانُ الَّذِيْ لَا يُعْطِيْ شَيْئًا إِلاَّ مَنَّهُ، وَالْـمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْـحَلِفِ الْكَاذِبِ.
‘‘তিন ব্যক্তি এমন যে, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেনও না এমনকি তাদেরকে গুনাহ্ থেকে পবিত্রও করবেন না উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাগুলো তিন বার বলেছেন। আবূ যর (রাঃ) বলেন: তারা সত্যিই ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত। তবে তারা কারা হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরিধানকারী, কাউকে কোন কিছু দিয়েই খোঁটা দানকারী এবং মিথ্যা কসম খেয়ে পণ্য সাপ্লাইকারী’’। (মুসলিম ১০৬)
আব্দুল্লাহ্ বিন মাস্’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِيْنٍ كَاذِبًا لِيَقْتَطِعَ مَالَ رَجُلٍ لَقِيَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ.
‘‘কেউ কারোর সম্পদ অবৈধভাবে আহরণের জন্য মিথ্যা কসম খেলে সে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে এমতাবস্থায় সাক্ষাৎ দিবে যে, তিনি (আল্লাহ্) তার উপর খুবই রাগান্বিত’’। (বুখারী ২৩৫৬, ২৩৫৭, ২৪১৬, ২৪১৭, ২৫১৫, ২৫১৬, ২৬৬৬, ২৬৬৭, ২৬৬৯, ২৬৭০, ২৬৭৩, ২৬৭৬, ২৬৭৭)
আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنِ اقْتَطَعَ حَقَّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِيَمِيْنِهِ، فَقَدْ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ النَّارَ، وَحَرَّمَ عَلَيْهِ الْـجَنَّةَ، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: وَإِنْ كَانَ شَيْئًا يَسِيْرًا، يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: وَإِنْ قَضِيْبًا مِنْ أَرَاكٍ.
‘‘কেউ (মিথ্যা) কসমের মাধ্যমে কোন মুসলিমের অধিকার হরণ করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার জন্য জাহান্নাম বাধ্যতামূলক করেন এবং জান্নাত হারাম করে দেন। জনৈক (সাহাবী) বলেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল! যদিও সামান্য কোন কিছু হোক না কেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যদিও ‘‘আরাক’’ গাছের ডাল সমপরিমাণ হোক না কেন। যা মিসওয়াকের গাছ’’। (মুসলিম ১৩৭)