হারাম ও কবিরা গুনাহ গুনাহ্’র অপকার মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
গুনাহ্’র মাধ্যমে শয়তান ও তার সহযোগীদেরকে তাদের কাজে সহযোগিতা করা হয়

৪৭. গুনাহ্’র মাধ্যমে শয়তান ও তার সহযোগীদেরকে তাদের কাজে সহযোগিতা করা হয়। এ কথা সবারই জানা যে, আল্লাহ্ তা‘আলা শয়তানের মাধ্যমে মানব জাতিকে বিশেষ এক পরীক্ষায় ফেলেছেন। শয়তান মানুষের চরম শত্রু। মানুষের শত্রুতা করতে সে কখনো পিছপা হয় না। বরং সে তার সকল শক্তি বিনিয়োগ করছে এই একই পথে। তার সাথে সহযোগী হিসেবে রয়েছে বিশেষ এক সেনাদল মানুষ ও জিনদের মধ্য থেকে। ঠিক এরই বিপরীতে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁরই প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে শয়তানের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে বিশেষ এক সেনাদল দিয়েছেন এবং এ যুদ্ধের পরিণতিতে তাদের জন্য জান্নাত রয়েছে যেমনিভাবে ওদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা‘আলা স্বেচ্ছায় মু’মিনদের সাথে একটি ব্যবসায়িক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ أَلِيْمٍ، تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ وَتُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ، يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِيْ جَنَّاتِ عَدْنٍ، ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ، وَأُخْرَى تُحِبُّوْنَهَا نَصْرٌ مِّنَ اللهِ وَفَتْحٌ قَرِيْبٌ، وَبَشِّرِ الْـمُؤْمِنِيْنَ»

‘‘হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি বাণিজ্যের সংবাদ দেবো না? যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে। তোমরা আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল এর উপর ঈমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদ করবে। এটাই তো তোমাদের জন্য সর্বোত্তম যদি তোমরা তা জানতে! (আর এরই মাধ্যমে) আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন একটি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অনেকগুলো নদী। তিনি আরো প্রবেশ করাবেন তোমাদেরকে চিরস্থায়ী জান্নাতের উত্তম আবাসগৃহে এবং এটিই তো মহা সাফল্য। তিনি তোমাদেরকে আরেকটি পছন্দসই বস্ত্ত দান করবেন। আর তা হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে বিশেষ সাহায্য এবং অত্যাসন্ন বিজয়। অতএব (হে রাসূল!) তুমি মু’মিনদেরকে এ ব্যাপারে সুসংবাদ দাও’’।

(স্বাফ্ফ : ১০-১৩)

আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:

«إِنَّ اللهَ اشْتَرَى مِنَ الْـمُؤْمِنِيْنَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَـهُمْ بِأَنَّ لَـهُمُ الْـجَنَّةَ، يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَيُقْتَلُوْنَ، وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِيْ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيْلِ وَالْقُرْآنِ، وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللهِ! فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَيْعِكُمُ الَّذِيْ بَايَعْتُمْ بِهِ، وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ»

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা মু’মিনদের থেকে তাদের জান ও মাল জান্নাতের বিনিময়ে এ শর্তে ক্রয় করেছেন যে, তারা আল্লাহ্ তা‘আলার পথে যুদ্ধ করবে। তারা অন্যকে হত্যা করবে ও নিজে প্রয়োজনে নিহত হবে। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলার সত্যিকার ওয়াদা রয়েছে যা তিনি ব্যক্ত করেন তাওরাত, ইন্জীল ও কুর‘আনে। আর কে আছে আল্লাহ্ তা‘আলার চাইতেও বেশি ওয়াদা রক্ষাকারী? অতএব তোমরা আনন্দিত হতে পারো এ ব্যবসা নিয়ে যা তোমরা (আমার সাথে) সম্পাদন করেছো। আর এটিই তো মহা সাফল্য’’। (তাওবাহ্ : ১১১)

আল্লাহ্ তা‘আলা উক্ত যুদ্ধের ঝান্ডা অর্পণ করেছেন মানুষের অন্তরের হাতে এবং তার বিশেষ সহযোগী হিসেবে নির্ধারণ করেছেন নিজ ফিরিশ্তাদেরকে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُوْنَهُ مِنْ أَمْرِ اللهِ»

‘‘মানুষের জন্য তার সামনে ও পেছনে রয়েছে একের পর এক প্রহরী। তারা আল্লাহ্ তা‘আলার আদেশে মানুষকে রক্ষণাবেক্ষণ করে’’।

(রা’দ্ : ১১)

কুর‘আন মাজীদ এ যুদ্ধে আরো এক বিশেষ সহযোগী। আল্লাহ্ তা‘আলা মু’মিনের শরীর ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সুস্থ রেখে যুদ্ধকে আরো অগ্রসর করেন। জ্ঞান তার পরামর্শদাতা। ঈমান তাকে দৃঢ়পদ করে এবং ধৈর্য শিখায়। আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতি তার ইয়াক্বীন ও দৃঢ় বিশ্বাস সত্য উদঘাটনে তাকে আরো সহযোগিতা করে। যার দরুন সে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে চায়।

চোখ তাকে পর্যবেক্ষণের সহযোগিতা দেয়। কান সংবাদ সংগ্রহের। মুখ অভিব্যক্তির এবং হাত ও পা কর্ম বাস্তবায়নের। সাধারণ ফিরিশ্তারা বিশেষ করে আর্শবাহীরা তার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছে। তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর দো‘আ করছে। এমনকি আল্লাহ্ তা‘আলা নিজেই সে ব্যক্তি তাঁর অনুগতদের দলভুক্ত বলে তার সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«وَإِنَّ جُنْدَنَا لَـهُمُ الْغَالِبُوْنَ»

’’আমার বাহিনীই হবে নিশ্চিতভাবে বিজয়ী’’। (স্বাফ্ফাত : ১৭৩)

আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:

«أُوْلَآئِكَ حِزْبُ اللهِ، أَلَآ إِنَّ حِزْبَ اللهِ هُمُ الْـمُفْلِحُوْنَ»

‘‘এরাই আল্লাহ্’র দলের। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার দলই সর্বদা সফলকাম হবে’’। (মুজাদালাহ্ : ২২)

মূলতঃ চারটি বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হলেই উক্ত যুদ্ধে সফলকাম হওয়া সম্ভব। যা আল্লাহ্ তা‘আলা নিম্নোক্ত আয়াতে ব্যক্ত করেছেন।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا، وَاتَّقُوْا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ»

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধরো, ধৈর্যের সাথে শত্রুর মুকাবিলা করো, শত্রু আসার পথগুলো সতর্কভাবে পাহারা দাও এবং আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয় করো তবেই তোমরা সফলকাম হবে’’। (আ’লি ’ইমরা’ন : ২০০)

উক্ত চারটি বিষয়ের কোন একটি বাদ পড়ে গেলে অথবা কারোর নিকট তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়লে তার পক্ষে উক্ত যুদ্ধে সফলতা অর্জন করা কখনোই সম্ভবপর হবে না।

অতএব শত্রু ঢোকার বিশেষ পথগুলো তথা অন্তর, চোখ, কান, জিহবা, পেট, হাত ও পা খুব যত্নসহ পাহারা দিতে হবে। যাতে এগুলোর মাধ্যমে শয়তান অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না পারে।

শয়তান মানুষকে কাবু করার জন্য তার মনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কার মন কি কি জিনিস ভালোবাসে সেগুলোর প্রতি সে গুরুত্ব দেয় এবং তাকে সেগুলোর ওয়াদা এবং আশাও দেয়। এমনকি সেগুলোর চিত্রও তার মানসপটে অঙ্কন করে। যা শয়নে স্বপনে সে দেখতে থাকে। যখন তা তার অন্তরে পুরোভাবে বসে যায় তখন সে সেগুলোর প্রতি তার উৎসাহ জাগিয়ে তোলে। আর যখন অন্তর সেগুলো পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে যায় তখনই শয়তান অন্যান্য পথ তথা চোখ, কান, জিহবা, মুখ, হাত ও পায়ের উপরও জয়ী হয়। আর তখনই তারা তা আর ছাড়তে চায় না। তারা এ পথে অন্যকে আসতে প্রতিরোধ করে। সম্পূর্ণরূপে তাকে প্রতিরোধ না করতে পারলেও একেবারে অন্ততপক্ষে তাকে দুর্বলই করে ছাড়ে। আর তখনই অন্যদের প্রভাব তার উপর আর তেমন কার্যকরী হয় না।

যখন শয়তান কারোর উক্ত পথগুলো কাবু করতে পারে বিশেষ করে চক্ষুকে তখন সে ব্যক্তি কিছু দেখলেও তা থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করে না। বরং তা মন ভুলানোর জন্যই দেখে। আবার কখনো সে তা থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করতে চাইলে শয়তান তা দীর্ঘক্ষণ টিকতে দেয় না।

উক্ত পথগুলোর মধ্যে শয়তান চোখকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কারণ, এটাই কাউকে পথভ্রষ্ট করার একমাত্র সর্ব বৃহৎ মাধ্যম। শয়তান কোন অবৈধ বস্ত্তকে দেখার জন্য এ যুক্তি প্রদর্শন করে যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তো উক্ত বস্ত্তটি দেখার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং তা দেখতে তোমার অসুবিধে কোথায়? কখনো কখনো সে কোন কোন বুযুর্গ প্রকৃতির ব্যক্তিকে তো এভাবেও ধোকা দেয় যে, এ বস্ত্ত আর আল্লাহ্ তা‘আলার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সবই তো আল্লাহ্। আর যদি সে ব্যক্তি এ কথায় সন্তুষ্ট না থাকে তা হলে শয়তান তাকে এতটুকু পরামর্শ দেয় যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বস্ত্তটির মধ্যে ঢুকে আছেন অথবা বস্ত্তটি আল্লাহ্ তা‘আলার মধ্যে ঢুকে আছে। এ কথাগুলো যখন শয়তান কোন বুযুর্গ ব্যক্তিকে বুঝিয়ে দিতে পারে তখন সে তাকে দুনিয়া থেকে বিরাগ ও বেশি বেশি ইবাদাত করতে বলে এবং তারই মাধ্যমে সে অন্যকে গোমরাহ্ করতে শুরু করে।

শয়তান যখন কারোর কানকে কাবু করে ফেলে তখন সে সে পথে এমন কিছু প্রবেশ করতে দেয় না যা তার নেতৃত্বকে খর্ব করবে। বরং সে যাদুকরী ও সুমিষ্ট শব্দে উপস্থাপিত অসত্যকেই তার কানে ঢুকতে দেয় এবং কারোর নিকট এ জাতীয় কথা স্থান পেলে তাকে তা শুনার প্রতি আরো আগ্রহী করে তোলে। তখন এ জাতীয় কথা শুনার প্রতি তার মধ্যে এক ধরনের নেশা জন্ম নেয়। আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল এবং যে কোন উপদেশদাতার কথা এ পথে আর ঢুকতে দেয়া হয় না। এমনকি কোনভাবে কুর‘আন ও বিশুদ্ধ হাদীসের কথা তার কানে প্রবেশ করলেও তা বুঝা ও তা নিয়ে চিন্তা করা এবং তা কর্তৃক উপদেশ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কঠিন বাধা সৃষ্টি করা হয় এর বিপরীতমুখী চিন্তা তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে অথবা তা করা কঠিন এবং তা করতে গেলে কঠিন প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হবে এ কথা বলেও তাকে বুঝানো হয়। এ কথাও তাকে বুঝানো হয় যে, এ ব্যাপারটি খুবই সাধারণ। এর চাইতে আরো কতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়ে গেছে যা নিয়ে ব্যস্ত হওয়া আরো দরকার অথবা এ কথা শুনার লোক কোথায়? এ কথা বললে তোমার শত্রু বেড়ে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। বরং যারা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কাজে নিয়োজিত তাদেরকে হেয় করা এবং তাদের যে কোন দোষ খুঁজে বের করা, তারা বেশি বাড়াবাড়ি করছে বলে আখ্যা দেয়া এবং তারাই একমাত্র এলাকার মধ্যে ফিৎনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করছে বলেও বুঝানো হয় তথা তাদের কথার অপব্যাখ্যা দেয়া হয়। পরিশেষে কখনো কখনো উক্ত ব্যক্তিই শয়তানের পুরো কাজ হাতে নিয়ে সমাজের অপনেতৃত্ব দিতে থাকে। তখনই শয়তান তার উপর নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে উক্ত এলাকা থেকে বিদায় নেয়।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِيْنَ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ يُوْحِيْ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُوْرًا، وَلَوْ شَآءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوْهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُوْنَ»

‘‘আর এমনিভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য জিন ও মানব বহু শয়তানকে সৃষ্টি করেছি। তারা একে অপরকে কতগুলো মনোমুগ্ধকর ও ধোঁকাপূর্ণ কথা শিক্ষা দেয়। তোমার প্রভুর ইচ্ছে হলে তারা এমন কাজ করতে পারতো না। সুতরাং তুমি তাদেরকে ও তাদের বানানো কথাগুলোকে বর্জন করে চলবে’’। (আন্‘আম : ১১২)

শয়তান কারোর জিহবাকে কাবু করতে পারলে সে এমন কথাই তাকে বলা শেখাবে যা তার শুধু ক্ষতিই সাধন করবে। বরং তাকে যিকির, তিলাওয়াত, ইস্তিগ্ফার এবং অন্যকে সদুপদেশ দেয়া থেকেও সর্বদা বিরত রাখবে।

শয়তান এ ক্ষেত্রে দু’টি ব্যাপারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আর তা হচ্ছে অসত্য বলা অথবা সত্য বলা থেকে বিরত থাকা। কারণ, দু’টিই তার জন্য বিশেষ লাভজনক।

শয়তান কখনো এ কৌশল গ্রহণ করে যে, সে কোন ব্যক্তির মুখ দিয়ে একটি অসত্য কথা বলে দেয় এবং শ্রোতার নিকট তা মনোমুগ্ধকর করে তোলে। তখন ধীরে ধীরে তা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এরপরই শয়তান মানুষের হাত ও পা কাবু করার চেষ্টা চালায়। যাতে সে ক্ষতিকর বস্ত্তই ধরতে যায় এবং ক্ষতিকর বস্ত্তর দিকেই অগ্রসর হয়।

মানুষের অন্তরকে কাবু করার জন্য বিশেষ করে শয়তান তার কুপ্রবৃত্তির সহযোগিতা নিয়ে থাকে। যাতে তার মধ্যে কখনো ভালোর স্পৃহা জন্ম না নিতে পারে এবং এ ব্যাপারে দু’টি মাধ্যমই ভালো ফল দেয়। আর তা হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলা ও আখিরাতের ব্যাপারে গাফিলতি এবং প্রবৃত্তির পূজা।

শয়তান মানুষের খারাপ চাহিদা পূরণা©র্থ তাকে সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে এবং নিজে না পারলে এ ব্যাপারে অন্য মানব শয়তানেরও সহযোগিতা নেয়। তাতেও তাকে কাবু করা সম্ভব না হলে সে তার রাগ ও উত্তেজনাকর সময়ের অপেক্ষায় থাকে। কারণ, তখন মানুষ নিজের উপর নিজ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর তখনই শয়তান তাকে দিয়ে নিজ ইচ্ছানুযায়ী যে কোন কাজ করিয়ে নিতে পারে।