১। রোগীর জন্যে সেই সব আয়াত পড়তে হবে যা পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। তার মধ্যে সূরা বাকারার ১০২ না পড়ে বরং সূরা তাগাবুন-এর ১৪, ১৫ ও ১৬ নং আয়াত পড়বেঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ وَإِنْ تَعْفُوا وَتَصْفَحُوا وَتَغْفِرُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ، إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَاللَّهُ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ، فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَأَنْفِقُوا خَيْرًا لِأَنْفُسِكُمْ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

অর্থঃ হে মুমিনগণ! নিশ্চয় তোমাদের স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে কতক তোমাদের শক্র । অতএব এদের থেকে সাবধান থাক। আর যদি তাদের ক্ষমা করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল ও করুণাময়। নিশ্চয় তোমাদের সম্পদসমূহ ও সন্তানাদি পরীক্ষাস্বরূপ আর আল্লাহর কাছে অনেক নেকী রয়েছে। সুতরাং আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর এবং তার কথা শোন এবং মান আর তোমাদের নিজেদের মঙ্গলের জন্যে (আল্লাহর রাস্তায়) ব্যয় কর। আর যারা নিজেকে কৃপণতা থেকে বাঁচালো তারাই সফলকাম। (সূরা সোয়াদঃ ১০৮, ১১৬) পড়তে হবে।

২। এক্ষেত্রে রোগী সাধারণতঃ বেহুশ হবে না তবে পার্শ্বদেশ অবশ হয়ে আসবে। মাথা ব্যথা ও বুক ধড়ফড় অনুভব করবে অথবা সে বারবার বমি করবে অথবা পেটে চরম ব্যাথা করবে যদি বিশেষ করে যাদু পান করানো হয়। সুতরাং সে যদি পেটে ব্যাথা অনুভব করে অথবা বমি করতে চায় তবে নিম্নের আয়াতসমূহ পড়ে পানিতে ফু দিবে আর সেই পানি নিজের সামনেই রোগীকে পান করাবে। যদি পানি পান করার পর রোগীর কাল অথবা লাল বমি হয় তবে বুঝতে যে, যাদু শেষ হয়ে গেছে। আর না হয় এই পানি তিন সপ্তাহ অথবা এর বেশী পান করতে বলা হবে। যাতে যাদু শেষ হয়ে যায়। সেই আয়াত হল এইঃ

১।

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ، وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ

অর্থঃ “অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করলো, তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ যাদু এটাই; নিশ্চয়ই আল্লাহ এখনই এটাকে বানচাল করে দিবেন; (কেননা) আল্লাহ এমন বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাজ সম্পন্ন হতে দেন না। আর আল্লাহ স্বীয় অঙ্গীকার অনুযায়ী হক প্রতিষ্ঠিত করে দেন, যদিও পাপাচারীরা তা অপ্রীতিকর মনে করে।" (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)

২।

وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ، فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ، فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانْقَلَبُوا صَاغِرِينَ، وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ، قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ، رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ

অর্থঃ “তখন আমি মূসা-এর নিকট এই প্রত্যাদেশ পাঠালামঃ তুমি তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ কর, মূসা (আলাইহিস সালাম) তা নিক্ষেপ করলে ওটা একটা বিরাট সাপ হয়ে সহসা ওদের অলীক (মিথ্যা) সৃষ্টিগুলোকে গিলে ফেলল। পরিশেষে যা হক ছিল তা সত্য প্রমাণিত হলো, আর যা কিছু বানানো হয়েছিল তা বাতিল প্রমাণিত হলো। আর ফিরাউন ও তার দলবলের লোকেরা মুকাবিলার ময়দানে পরাজিত হলো এবং লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে গেল। যাদুকরগণ তখন সিজদায় পড়ে গেল। তারা আনলাম। (জিজ্ঞেস করা হলো— কোন বিশ্ব প্রতিপালকের প্রতি? তারা উত্তরে বললো) মূসা ও হারূনের প্রতিপালকের প্রতি " (সূরা আরাফঃ ১১৭-১২২)

৩।

إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ

অর্থঃ “তারা যা করেছে তা তো শুধু যাদুকরের কৌশল; যাদুকর যেখানেই আসুক সফল হবে না।" (সূরা ত্বো-হাঃ ৬৯)

৪।

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

অর্থঃ “আল্লাহ তিনি ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি চিরজীবন্ত ও সবার রক্ষণা-বেক্ষণকারী, তন্দ্রা ও নিদ্রা তাকে স্পর্শ করে না, নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সব তারই এমন কে আছে যে তার অনুমতি ব্যতীত তার নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখের ও পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন; তিনি যা ইচ্ছে করেন তা ব্যতীত তার অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না; তার কুরসী নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরিব্যপ্ত হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাকে পরিশ্রান্ত করে না এবং তিনি সমুন্নত, মহীয়ান!" (সূরা বাকরাঃ ২৫৫)

আয়াতগুলি পানির উপর পড়ুন তবে স্ত্রীর অগোচরে পড়তে হবে। কেননা সে জানতে পারলে পুনরায় সে যাদুর আশ্রয় নিবে।