সাধারণত যাদুকর এবং শয়তান এই কথার উপর ঐক্যবদ্ধ হয় যে, যাদুকর কতক শিরকভুক্ত কাজ করবে অথবা প্রকাশ্য কুফুরি কাজ করবে। এর পরিবর্তে শয়তান যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত হবে বা অন্য কাউকে তার অধীন করে দিবে যে তার সেবা করবে। আর চুক্তিটি হয়ে থাকে সাধারণত যাদুকর এবং জ্বিন শয়তানের গোত্র প্রধানের সাথে । সুতরাং থাকে। আর সেই জ্বিন অথবা শয়তান গোপনীয় তথ্য যাদুকরকে প্রদান করে, দুজনের মাঝে শক্রতা সৃষ্টি বা উভয়ের মাঝে মুহাব্বাত সৃষ্টি করিয়ে দিয়ে থাকে বা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটায়। অনুরূপ আরো অনেক কিছু সম্পাদন করিয়ে থাকে যা বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে ইনশাআল্লাহ ষষ্ঠ অধ্যায়ে। এভাবে যাদুকর জ্বিন ও শয়তানকে তার অধীনে নিয়ে খারাপ কাজ করে থাকে। অতঃপুর যদি জ্বিন কখনও আনুগত্য না করে তবে যাদুকর তাবিজের মাধ্যমে সে নেতা জিনের নৈকট্য লাভ করে এবং তার গুণ কীর্তন ও তার নিকট ফরিয়াদ করে তার (গোত্রের প্রধান জিনের) কাছে অভিযোগ করে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা না করে তার কাছেই সাহায্য চায়। অতঃপর সেই জ্বিন সরদার সেই সাধারণ জিনকে শাস্তি প্রদান করে এবং যাদুকরের আনুগত্যে বাধ্য করে।
এভাবে যাদুকর আর তার অনুগত জ্বিনের মাঝে বৈরী সম্পর্ক এবং শক্ৰতা ও সৃষ্টি হয়, আর এই জ্বিন যাদুকরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে বিন্দুমাত্রও দ্বিধাবোধ করে না এমনকি তার সন্তান ও ধন-সম্পদে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে থাকে এবং যাদুকরকেও অনেক কষ্ট দিয়ে থাকে। যেমনঃ স্থায়ীভাবে মাথা ব্যথা, ঘুম না আসা, রাতে ভয় পাওয়া ইত্যাদি। আর যাদুকরের সাধারণত সন্তানও জন্ম লাভ করে না। কেননা জ্বিন মাতৃগর্ভে শিশুকে মেরে ফেলে। আর এই বিষয় যাদুকরদের নিকট প্রসিদ্ধ। এমনকি যাদুকর সন্তানের আশায় যাদু করা থেকে বিরত থাকে। এক্ষেত্রে আমার একটি স্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করছিঃ
আমি এক যাদুতে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করছিলাম। যখন আমি তার উপর কুরআন পড়ছিলাম তখন যাদুর হুকুমপ্রাপ্ত জ্বিন সেই মহিলা রোগীর মুখের দ্বারা বলতে লাগল আমি এই মহিলার ভিতর থেকে বের হব না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কেন? তখন সে বলল যাদুকর আমাকে মেরে ফেলবে। আমি বললাম তুই এমন স্থানে চলে যা যেখানে যাদুকর পৌছতে পারবে না। উত্তরে জ্বিনটি বললঃ যাদুকর আমাকে খোজার জন্যে অন্য জ্বিন প্রেরণ করবে। তখন আমি বললাম তুই সত্য ও নিষ্ঠার সাথে তাওবা করে শিখিয়ে দিব যা তোমাকে কাফের জিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে। তখন সে বললঃ “আমি মুসলমান কখনও হব না; বরং আমি সব সময় খ্রিস্টান থাকব। আমি বললামঃ ধৰ্মগ্রহণে কোন বাধ্য করা নেই; কিন্তু তুই এখন এই মহিলা থেকে বের হয়ে যা। সে বলল কখনও না। আমি বললাম এখন আমি তোর উপর কুরআন পড়ব যে পর্যন্ত তুই জ্বলে না যাবি। এরপর আমি ওকে অনেক মারলাম। যার ফলে সে কাদতে লাগল এবং বলতে লাগল যে, যাচ্ছি এখুনি যাচ্ছি।
অবশেষে আল-হামদুলিল্লাহ সেই জ্বিন মহিলা থেকে বের হয়ে চলে গেল। আল্লাহ সব কিছু থেকে পবিত্র ও মহান এটা সত্য যে, যাদুকর যত বেশি কুফুরী করবে জ্বিন তার আনুগত্য ততবেশি করবে। আর তা না হলে আনুগত্য করে না।