জ্বিন ও শয়তানের অস্তিত্বের প্রমাণঃ জ্বিন ও যাদুর মাঝে গভীর সম্পর্ক রয়েছে; বরং জ্বিন ও শয়তানই হল মূলতঃ যাদুর প্রধান চালিকা শক্তি। কতিপয় লোক জ্বিনের অস্তিত্বের বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং যাদুও অস্বীকার করেছে। তাই আমি এখানে এসবের অস্তিত্বের প্রমাণসমূহ উপস্থাপন করবঃ
প্রথমঃ কুরআন দ্বারা প্রমাণঃ
১। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ
অর্থ “স্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জিনকে, যারা কুরআন পাঠ শুনছিল। (সূরা আহকাফঃ ২৯)
২। আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ
يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ أَلَمْ يَأْتِكُمْ رُسُلٌ مِنْكُمْ يَقُصُّونَ عَلَيْكُمْ آيَاتِي وَيُنْذِرُونَكُمْ لِقَاءَ يَوْمِكُمْ هَٰذَا
অর্থঃ “হে জ্বিন ও মানব জাতি! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য হতেই নবী রাসূল আসেনি, যারা তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করতো এবং আজকের দিনের সাথে তোমাদের সাক্ষাত হওয়ার ভীতি প্রদর্শন করতো?” (সূরা আনআমঃ ১৩০)
৩। অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ
يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوا لَا تَنْفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ
অর্থঃ “হে জিন ও মানুষ সম্প্রদায় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার, অতিক্রম কর; কিন্তু তোমরা তা পারবে না, শক্তি ব্যতিরেকে।" (সূরা রহমানঃ ৩৩)
৪। আল্লাহ বলেনঃ
قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا
অর্থঃ “বলঃ আমার প্রতি অহী প্রেরিত হয়েছে যে, জীনদের একটি দল
মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেছে এবং বলেছেঃ আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শ্রবণ করেছি।" (সূরা জিনঃ ১)
৫ । মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِنَ الْإِنْسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
অর্থঃ “আর কতিপয় মানুষ কতক জিনের আশ্রয় প্রার্থনা করতো, ফলে তারা জিনদের আত্ম গৌরব বাড়িয়ে দিতো।” (সূরা জিনঃ ৬)
৬। আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ
অর্থঃ "শয়তান তো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শক্রতা ও হিংসা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর স্মরণ হতে ও নামায হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে, সুতরাং এখনও কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?" (সূরা আল মায়েদাঃ ৯১)
৭। আল্লাহ বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ وَمَنْ يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ
অর্থঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়।" (সূরা নূরঃ ২১)
কুরআনে এ সম্পর্কে অনেক প্রমাণাদি রয়েছে। আর একথা সকলেই জানে যে, কুরআনে কারীমে একটি সূরাই জ্বিন সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। আর প্রমাণের জন্য এটাই যথেষ্ট যে, জ্বিন একবচন শব্দটি কুরআনে কারীমে ২২ বার উল্লেখ করা হয়েছে। আর الجان “আল-জান” বহুবচন শব্দটি সাতবার এবং الشيطان শব্দটি ৬৮ বার আর (الشياطين) বহুবচন শব্দটি সতের বার বর্ণিত হয়েছে। মূলকথা জ্বিন ও শয়তান সম্পর্কে কুরআনে বহু আয়াত রয়েছে।