আল-ফিকহুল আকবর মহান আল্লাহর বিশেষণ, তাকদীর ইত্যাদি ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
১৩. ইমামগণের ব্যাখ্যা-বিরোধিতার কারণ / ১৩. ১. আল্লাহর নির্দেশনা গ্রহণ ও অনুমান-নির্ভর কথা বর্জন

সালফ সালিহীন অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর প্রথম যুগগুলোর বুজুর্গগণের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিভিন্ন কারণে তাঁরা মহান আল্লাহর বিশেষণ ব্যাখ্যা করার বিরোধিতা করেছেন। তন্মধ্যে নিন্মের কারণগুলো অন্যতম:

১৩. ১. আল্লাহর নির্দেশনা গ্রহণ ও অনুমান-নির্ভর কথা বর্জন

মহান আল্লাহই তাঁর নিজের সত্তা ও বিশেষণাদি সম্পর্কে সঠিক জানেন। তিনি চান যে বান্দা তাঁর প্রকৃত মারিফাত অর্জন করে তাঁর ইবাদত করুক। এজন্যই তিনি কুরআন অবতরণ করেছেন, অনুধাবনের জন্য সহজ করেছেন, সকল মুমিনের জন্য সালাতে ও সালাতের বাইরে নিয়মিত কুরআন পাঠের বিধান করেছেন এবং কুরআনের মধ্যে তাঁর পরিচয় সহজ ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। এজন্য মুমিনের বিশ্বাস করা উচিত যে, কুরআনে মহান আল্লাহ নিজের বিষয়ে যা বলেছেন তা সরলভাবে বিশ্বাস করা এবং এগুলো থেকে মহান আল্লাহর মারিফাত, ঈমান, মহববত ও ইবাদত অর্জন করাই মুমিনের দায়িত্ব। এ সকল বিশেষণের কোনো রূপক জানিয়ে দেওয়া তো দূরের কথা, এগুলোর সরল অর্থ বাদ দিয়ে কোনো রূপক অর্থ অনুসন্ধানের প্রয়োজন আছে বলেও আল্লাহ জানান নি। এজন্য এ সকল বিশেষণের কোনো রূপক অর্থ আছে বলে দাবি করা যেমন ওহীর ইলম ছাড়া আন্দাযে আল্লাহর বিষয়ে কথা বলা, তেমনি কোনো একটি বিশেষণের এক বা একাধিক রূপক অর্থ নির্ধারণ করাও ওহীর জ্ঞান ছাড়া অনুমানের উপর আল্লাহর নামে কথা বলা। মহান আল্লাহ তাঁর বিষয়ে আন্দাযে কথা বলতে বারবার নিষেধ করেছেন।[1] এ অর্থেই ইমাম আবূ হানীফা বলেছেন: ‘‘মহান আল্লাহর সত্তার বিষয়ে নিজের পক্ষ থেকে কিছু বলা কারো জন্য বৈধ নয়; বরং তিনি নিজেকে যে বিশেষণে বিশেষিত করেছেন তাঁর বিষয়ে শুধু সে বিশেষণই আরোপ করতে হবে। এ বিষয়ে নিজের মত, যুক্তি বা ইজতিহাদ দিয়ে কিছুই বলা যাবে না।’’

[1] সূরা (২) বাকারা: ৮০, ১৬৯ আয়াত; সূরা (৭) আ’রাফ: ২৮, ৩৩ আয়াত; সূরা (১০) ইউনুস: ৬৮ আয়াত।