মহান আল্লাহর অন্য একটি বিশেষণ ‘নুযূল’ বা অবতরণ। এ অর্থের একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
يَنْزِلُ رَبُّنَا كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِى فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِى فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِى فَأَغْفِرَ لَهُ
‘‘প্রতি রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে তখন আমাদের মহিমান্বিত মহা-কল্যাণময় প্রতিপালক নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন। তিনি বলেন: আমাকে ডাকার কেউ আছ কি? আমি তার ডাকে সাড়া দিব। আমার কাছে চাওয়ার কেউ আছ কি? আমি তাকে প্রদান করব। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার কেউ আছ কি? আমি তাকে ক্ষমা করব।’’[1]
এ বিশেষণও জাহমী-মু’তাযিলীগণ অস্বীকার করেন। তারা বলেন, স্থান পরিবর্তন আল্লাহর অতুলনীয়ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি আরশ থেকে অবতরণ করলে আরশ কি শূন্য থাকে? তাঁরা বলেন: অবতরণ অর্থ নৈকট্য বা বিশেষ করুণা। কিন্তু প্রশ্ন হলো: আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তো অনেক স্থানেই নৈকট্য ও করুণা শব্দ ব্যবহার করেছেন। এখানে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নৈকট্য বা করুণা না বলে অবতরণ বললেন কেন? আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য বিশ্বাসকে কঠিন ও জটিল করতে চান? না সহজ করতে চান?
আহলুস সুন্নাতের ইমামগণ অন্যান্য বিশেষণের মত এটিকেও তুলনামুক্তভাবে মেনে নেন। তাঁরা বলেন: এটি মহান আল্লাহর একটি বিশেষণ। আমরা সরল অর্থে বিশ্বাস করি যে, মহান আল্লাহ অতুলনীয়, তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠান গ্রহণ করেন এবং তিনি যখন এবং যেভাবে ইচ্ছা অবতরণ করেন। তাঁর অবতরণ কোনোভাবেই কোনো সৃষ্টির অবতরণের মত নয়। তাঁর অবতরণের স্বরূপ ও প্রকৃতি কি তা আমরা জানি না এবং জানার চেষ্টাও করি না। ইমাম আবূ হানীফা (রা) কে মহান আল্লাহর অবতরণ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি উত্তরে বলেন:
ينزل بلا كيف
‘‘মহান আল্লাহ অবতরণ করেন, কোনোরূপ পদ্ধতি বা স্বরূপ ব্যতিরেকে।’’[2]
[2] বাইহাকী, আল-আসমা ওয়াস সিফাত ২/৩৮০; মোল্লা আলী কারী, শারহুল ফিকহিল আকবার, পৃ ৬৯।