আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে কুরআনে ও হাদীসে যা বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে তা সরলভাবে বিশ্বাস করা ইসলামী আকীদার মূল ভিত্তি। কুরআন ও হাদীসের বাণী অত্যন্ত সুস্পষ্ট। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের (ﷺ) শিক্ষার মধ্যে কোনো জটিলতা, গোপনীয়তা বা স্ববিরোধিতা নেই। তারপরও কখনো জ্ঞানের দুর্বলতার কারণে কুরআন-হাদীস অনুধাবন বা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে মতপার্থক্য বা দ্বিধা সৃষ্টি হলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাহাবীগণ এবং পরবর্তী দু প্রজন্ম ‘তাবিয়ী’ ও ‘তাবি-তাবিয়ীগণের’ ব্যাখ্যা ও মতামতই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। বিশেষত তাঁদের ইজমা বা ঐকমত্য আকীদার প্রমাণ হিসেবে গণ্য। কুরআন ও হাদীসই তাঁদের বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছে। আমরা পরবর্তী আলোচনায় এ বিষয়ক কিছু আয়াত ও হাদীস দেখব, ইনশা আল্লাহ।
মুসলিম সমাজের প্রথম বিভ্রান্ত ফিরকা ‘‘খারিজীগণ’’ কুরআন ও হাদীসকে ইসলামী শরীয়ত ও আকীদার উৎস বলে স্বীকার করত। তাদের বিভ্রান্তির শুরু ‘‘জ্ঞানের অহঙ্কার’’ থেকে। ওহী অনুধাবনের জন্য সাহাবীগণের মতামত ও ব্যাখ্যার গুরুত্ব তারা অস্বীকার করত। এছাড়া ‘‘সুন্নাত’’-এর গুরুত্বও অস্বীকার করত। অর্থাৎ তাঁরা কুরআনের আয়াত বা হাদীস দিয়ে যে মতটি গ্রহণ করছে সে মত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কর্মধারা বা রীতির মধ্যে বা প্রায়োগিক সুন্নাতের মধ্যে আছে কিনা তা বিবেচনা করত না। সর্বোপরি তারা কুরআন ও হাদীসের কিছু বক্তব্যের ভিত্তিতে নিজেদের মত গ্রহণ করত। এর বিপরীতে কুরআন-হাদীসের অন্যান্য বক্তব্য ব্যাখ্যা করে বাতিল করে দিত। এভাবে আমরা দেখছি যে, খারিজীগণের বিভ্রান্তির উৎস (১) সুন্নাতের গুরুত্ব অস্বীকার, (২) সাহাবীগণের মতামত অস্বীকার ও (৩) ‘‘পছন্দ’’ অনুসারে কুরআন-হাদীসের কিছু বক্তব্য গ্রহণ ও কিছু ব্যাখ্যার নামে বাতিল করা।