আল-ফিকহুল আকবর আল-ফিকহুল আকবারের বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
১. ৩. ৪. নাম ও গুণাবলির তাওহীদে বিভ্রান্তি

মহান আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলি গাইবী বিষয়। মানুষ যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে আল্লাহর অস্তিত্বের বাস্তবতা অনুভব করতে পারে, কিন্তু যুক্তি বা বুদ্ধি দিয়ে তাঁর সত্তা ও গুণাবলির খুঁটিনাটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ এ বিষয়ে দর্শন, যুক্তি ইত্যাদির উপর নির্ভর করে বিভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত হয়েছে। যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে কেউ বলেছেন, আল্লাহর কোনো বিশেষণ থাকতে পারে না, তিনি ‘‘নির্গুণ’’। কেউ বলেছেন, তাঁর অমুক গুণ থাকতে পারে, কিন্তু তমুক গুণ থাকতে পারে না। মক্কার কাফিরগণ আল্লাহকে একমাত্র স্রষ্টা হিসেবে বিশ্বাস করলেও তাঁকে ‘রাহমান’ বা ‘মহা-করুণাময়’ নামে ডাকতে অস্বীকার করত। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন:


وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اسْجُدُوا لِلرَّحْمَنِ قَالُوا وَمَا الرَّحْمَنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا


‘‘যখন তাদেরকে বলা হয় ‘সাজদাবনত হও রাহমান-এর প্রতি’, তখন তারা বলে, ‘রাহমান আবার কি? তুমি কাউকে সাজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সাজদা করব?’ এতে তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়।’’[1]

তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত বা মহান আল্লাহর নাম ও গুণাবলির একত্বের বিষয়ে দ্বিতীয় হিজরী শতাব্দী থেকে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভিন্ন বিভ্রান্তির উদ্ভব ঘটে। ইমাম আবূ হানীফা (রাহ) তাঁর এ গ্রন্থে এ জাতীয় অনেক বিভ্রান্তি আলোচনা করেছেন, যা আমরা দেখব ইনশা আল্লাহ।

[1] সূরা (২৫) ফুরকান: ৬০ আয়াত।