জ্ঞান পর্যায়ের তাওহীদের দুটি মূল বিষয় রয়েছে: ১) সৃষ্টি ও প্রতিপালনের একত্ব, ও ২) নাম ও গুণাবলির একত্ব।
১. ৩. ১. সৃষ্টি ও প্রতিপালনের একত্ব
আরবীতে একে ‘তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ্’ (توحيد الربوبية) ‘‘প্রতিপালনের একত্ব’’ বলা হয়।[1] অর্থাৎ এ কথা বিশ্বাস করা যে, মহান আল্লাহই এ মহাবিশ্বের একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক, সংহারক, রিযিকদাতা, নিয়ন্ত্রক ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
১. ৩. ২. কাফিরগণ এ তাওহীদ বিশ্বাস করত
কুরআন-হাদীসের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, কাফির-মুশরিকগণ এ পর্যায়ের তাওহীদ বিশ্বাস ও স্বীকার করত। কুরআনে বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এক স্থানে মহান আল্লাহ বলেছেন:
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ إِنْ أَرَادَنِيَ اللَّهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهِ أَوْ أَرَادَنِي بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكَاتُ رَحْمَتِهِ قُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُونَ
‘‘যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ।’ বল, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আল্লাহ আমার অনিষ্ট চাইলে তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ডাক তারা কি সে অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে তারা কি সে অনুগ্রহ রোধ করতে পারবে? বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।’ নির্ভরকারীগণ আল্লাহর উপরেই নির্ভর করে।’’[2]
এ আয়াত এবং এ অর্থের অন্যান্য আয়াত থেকে আমরা জানছি যে, কাফিররা স্বীকার ও বিশ্বাস করত যে, আল্লাহই বিশ্বের সকল কিছুর একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক, সকল ক্ষমতার মালিক, সর্বশক্তিমান, তাঁর উপরে কেউ আশ্রয়দাতা নেই, তিনি অনিষ্ট চাইলে কেউ তা দূর করতে পারে না এবং তিনি কল্যাণ চাইলে কেউ তা রোধ করতে পারে না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিরোধিতা করা সত্ত্বেও এ কথা তারা অকপটে স্বীকার করতো। তবে তাদের ধারণা ছিল যে, তাদের উপাস্যগণ আল্লাহর প্রিয়পাত্র। আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে কিছু করতে সক্ষম না হলেও এবং আল্লাহ চূড়ান্ত ফয়সালা দিলে তা পরিবর্তনের ক্ষমতা না রাখলেও সাধারণভাবে কিছু অলৌকিক নিষ্ট-অনিষ্টের ক্ষমতা তাদের আছে, যা আল্লাহই তাদের দিয়েছেন।
[2] সূরা (৩৯) যুমার: ৩৮ আয়াত।