আল-ফিকহুল আকবর আল-ফিকহুল আকবারের বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
১. তাওহীদ [১. ১. তাওহীদ: অর্থ ও পরিচিতি]

১. ১. তাওহীদ: অর্থ ও পরিচিতি

ইমাম আযম (রাহ) প্রথমেই তাওহীদের কথা উল্লেখ করেছেন। ‘তাওহীদ’ শব্দটি ‘ওয়াহাদা (وَحَدَ) ক্রিয়ামূল থেকে গৃহীত, যার অর্থ ‘এক হওয়া’, ‘একক হওয়া’ বা ‘অতুলনীয় হওয়া’ (to be alone, unique, unmatched, incomparable)। তাওহীদ অর্থ ‘এক করা’, ‘এক বানানো’, ‘একত্রিত করা’, ‘একত্বের ঘোষণা দেওয়া’ বা ‘একত্বে বিশ্বাস করা’। এখানে তাওহীদ বলতে ‘‘আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস’’ বুঝানো হয়েছে।

আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস বলতে ‘‘আল্লাহ এক’’ শুধু এতটুকু বিশ্বাস বুঝানো হয় না। কারণ কুরআন ও হাদীসের বিবরণ থেকে আমরা জানতে পারি যে, আরবের কাফিরগণ এবং অন্যান্য যুগের কাফিরগণ প্রায় সকলেই এরূপ একত্বে বিশ্বাস করত। তারা বিশ্বাস করত যে, আল্লাহ এক এবং তিনিই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও সর্বশক্তিমান প্রভু-প্রতিপালক।[1] এছাড়া তারা আল্লাহর ইবাদত করত, তাঁকে ডাকত, প্রার্থনা করত এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মানত, কুরবানী ইত্যাদি করত।[2] কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের ‘‘তাওহীদের’’ বিশ্বাস পূর্ণ হয় নি। কারণ তারা আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করার পাশাপাশি আল্লাহর ফিরিশতাগণ, নবীগণ, ওলীগণ বা কল্পিত ‘পুত্রকন্যাগণের’ ইবাদত পাওয়ার অধিকার আছে বলে বিশ্বাস করত।[3]

[1] দেখুন: সূরা (১০) ইউনূস: ৩১ আয়াত; সূরা (২৩) মুমিনুন: ৮৪-৮৯ আয়াত।

[2] দেখুন: সূরা (৬) আনআম: ১৩৩ আয়াত; সূরা (৮) আনফাল: ৩২ আয়াত।

[3] দেখুন: সূরা (৯) তাওবা: ৩১ আয়াত; সূরা (৩৪) সাবা: ৪০ আয়াত; সূরা (৭১) নূহ: ২৩ আয়াত।