আল-ফিকহুল আকবর ইমাম আবূ হানীফার রচনাবলি ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৫. বিদ্যমান গ্রন্থগুলোর সনদ পর্যালোচনা

আমরা দেখলাম যে, উপরের ৭টি পুস্তিকা ইমাম আবূ হানীফার রচিত বলে প্রচারিত। এগুলোর মধ্যে সর্বশেষ পুস্তিকা দুটোর কোনো সনদ পাওয়া যায় না। পূর্ববর্তী কোনো গবেষক, ঐতিহাসিক বা জীবনীকারও এগুলোর কোনোরূপ উল্লেখ করেন নি। এগুলোর প্রাচীন কোনো পান্ডুলিপিও পাওয়া যায় না। এজন্য এ পুস্তিকাদ্বয় বিগত কয়েক শতকের মধ্যে কেউ রচনা করে ইমাম আযমের নামে জালিয়াতি করে প্রচার করেছেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া পুস্তিকা দুটোর বিষয়বস্ত্ত, ভাষা ও পরিভাষাও জালিয়াতি নিশ্চিত করে।[1] অবশিষ্ট ৫টি পুস্তিকার সনদ আমরা এখানে উল্লেখ করছি।

(১) আল-ফিকহুল আকবার (শ্রেষ্ঠ ফিকহ)

মদীনা মুনাওয়ারার সুপ্রসিদ্ধ প্রাচীন গ্রন্থাগার ও প্রাচীন পান্ডুলিপির সংরক্ষণাগার ‘শাইখুল ইসলাম আরিফ হিকমাত-এর লাইব্রেরি’তে বিদ্যমান এ গ্রন্থটির প্রাচীন পান্ডুলিপির (নং ২৩৪) সনদ নিম্নরূপ: পুস্তিকাটি শুনেছেন ও বর্ণনা করেছেন প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ নাসীর ইবন ইয়াহইয়া বালখী (২৬৮ হি) প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ মুহাম্মাদ ইবন মুকাতিল রাযী (২৪৮ হি) থেকে, তিনি প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও হানাফী ফকীহ ইসাম ইবন ইউসূফ বালখী (২১৫ হি) থেকে, তিনি ইমাম আবূ হানীফার পুত্র প্রসিদ্ধ ফকীহ ইমাম হাম্মাদ ইবন আবী হানীফা (১৭৬ হি) থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে।[2]

(২) আল-ফিকহুল আবসাত (বিস্তারিত ফিকহ)

এ গ্রন্থটি মূলত ‘আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাষ্য। গ্রন্থটির সংকলক ইমাম আবূ হানীফার ছাত্র ইমাম আবূ মুতী বালখী হাকাম ইবন আব্দুল্লাহ ইবন মুসলিম খুরাসানী (১৯৯ হি)। তিনি ইমাম আবূ হানীফাকে আকীদা বিষয়ে কিছু প্রশ্ন করেন। এ সকল প্রশ্ন ও উত্তরের সংকলন এ গ্রন্থটি। অনেকেই এ পুস্তিকাটিকে ‘‘আল-ফিকহুল আকবার’’ নামে উল্লেখ করেছেন। পরবর্তী অনুচ্ছেদে আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করব।

ইমাম আবূ মুতী বালখী অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ফকীহ ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন বিচারক বা কাযীর দায়িত্ব পালন করেন। ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধে তিনি আপোষহীন ছিলেন। ইমাম যাহাবী ও ইবন হাজার উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর ইলমের প্রশস্ততা এবং তাঁর অতুলনীয় দীনদারীর কারণে প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক তাঁকে অত্যন্ত সম্মান ও ভক্তি করতেন। তবে তিনি মুতাযিলী ও মুরজিয়া মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন এবং হাদীস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন বলে ইমাম আহমদ, বুখারী, আবূ দাউদ, আবূ হাতিম রাযী, নাসাঈ, ইবন হিব্বান, ইবন আদী প্রমুখ মুহাদ্দিস উল্লেখ করেছেন। মহান আল্লাহই ভাল জানেন।[3]

মিসরের প্রাচীন রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগার ‘‘দারুল কুতুব’’-এ বিদ্যমান এ গ্রন্থের পান্ডুলিপির (নং ২১৫-৬৪) সনদ নিম্নরূপ। গ্রন্থটি বর্ণনা করেছেন হানাফী ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ বাদাইউস সানাই-এর প্রণেতা শাইখ আবূ বকর আলাউদ্দীন কাসানী (৫৮৭হি), তিনি তাঁর শ্বশুর সুপ্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ আলাউদ্দীন মুহাম্মাদ ইবন আহমদ সামারকান্দী থেকে, তিনি আবুল মুয়ীন মাইমূন ইবন মুহাম্মাদ নাসাফী (৫০৮ হি) থেকে, তিনি প্রসিদ্ধ ওয়ায়িয ও মুহাদ্দিস আবূ আব্দুল্লাহ হুসাইন ইবন আলী ফাদল (৪৮৪ হি) থেকে, তিনি আবূ মালিক নুসরান ইবন নাসর খাতালী থেকে, তিনি আবুল হাসান আলী ইবন আহমদ ফারিস থেকে, তিনি নাসীর ইবন ইয়াহইয়া (২৬৮ হি) থেকে, তিনি আবূ মুতী বালখী থেকে, তিনি ইমাম আবূ হানীফা থেকে।[4]

(৩) আল-আলিম ওয়াল মুতাআল্লিম (জ্ঞানী ও শিক্ষার্থী)

এ গ্রন্থের বিষয়বস্ত্ত প্রশ্ন ও উত্তর। এ গ্রন্থে ইমাম আবূ মুকাতিল হাফস ইবন সালম সামারকান্দী (২০৮ হি) তাঁর উস্তাদ ইমাম আবূ হানীফাকে আকীদা বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন এবং তিনি এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আবূ মুকাতিল নিজের ভাষায় এ সকল প্রশ্ন ও উত্তর সংকলন করেছেন।

এভাবে আমরা দেখছি যে, গ্রন্থটি ইমাম আবূ হানীফার রচনা নয়, বরং আবূ মুকাতিলের রচনা, যাতে তিনি ইমাম আবূ হানীফার মতামত সংকলন করেছেন, যেমন ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শাইবানী তাঁর আল-মাবসূত গ্রন্থে ইমাম আবূ হানীফার মতামত প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে সংকলন করেছেন। তবে যেহেতু এ গ্রন্থে শুধু তাঁর মত ও কথাই সংকলিত এজন্য গ্রন্থটি তাঁর রচিত বলে উল্লেখ করেছেন অনেক আলিম। অন্যান্য আলিম উল্লেখ করেছেন যে, এ গ্রন্থটির রচয়িতা ইমাম আবূ মুকাতিল।[5]

এ গ্রন্থের সংকলক আবূ মুকাতিল অত্যন্ত প্রসিদ্ধ আবিদ, যাহিদ ও দরবেশ ছিলেন। তবে হাদীস, ফিকহ ও ইলমের বর্ণনায় মুহাদ্দিসগণ তাঁকে দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন। অধিকাংশ আবিদ ও যাহিদই অতিরিক্ত ইবাদতের কারণে ইলমী বিষয়ে তত মনোযোগ ও সতর্কতা রাখতে পারতেন না। ওকী ইবনুল জার্রাহ, আব্দুর রাহমান ইবন মাহদী, কুতাইবা ইবন সাঈদ, জূযজানী, হাকিম নাইসাপূরী, আবূ নুআইম ইসপাহানী প্রমুখ মুহাদ্দিস তাঁকে বর্ণনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ ইয়ালা আল-খালীলী তাঁকে সত্যপরায়ণ বলে উল্লেখ করেছেন।[6] ইমাম আবূ হানীফার অন্য ছাত্র প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক বলেন:
خذوا عن أبي مقاتل عبادته وحسبكم


‘‘তোমরা আবূ মুকাতিল থেকে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি গ্রহণ করবে এবং তা-ই তোমাদের জন্য যথেষ্ট।’’[7]

এ প্রসঙ্গে ইমাম তিরমিযী বলেন:
أَخْبَرَنِى مُوسَى بْنُ حِزَامٍ قَالَ سَمِعْتُ صَالِحَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ يَقُولُ كُنَّا عِنْدَ أَبِى مُقَاتِلٍ السَّمَرْقَنْدِىِّ فَجَعَلَ يَرْوِى عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِى شَدَّادٍ الأَحَادِيثَ الطِّوَالَ الَّتِى كَانَ يَرْوِى فِى وَصِيَّةِ لُقْمَانَ وَقَتْلِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ وَمَا أَشْبَهَ هَذِهِ الأَحَادِيثَ فَقَالَ لَهُ ابْنُ أَخِى أَبِى مُقَاتِلٍ يَا عَمِّ لاَ تَقُلْ حَدَّثَنَا عَوْنٌ فَإِنَّكَ لَمْ تَسْمَعْ هَذِهِ الأَشْيَاءَ. قَالَ يَا بُنَىَّ هُوَ كَلاَمٌ حَسَنٌ. وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِى قَوْمٍ مِنْ جِلَّةِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَضَعَّفُوهُمْ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِمْ وَوَثَّقَهُمْ آخَرُونَ مِنَ الأَئِمَّةِ بِجَلاَلَتِهِمْ وَصِدْقِهِمْ وَإِنْ كَانُوا قَدْ وَهِمُوا فِى بَعْضِ مَا رَوَوْا


‘‘আমাদেরকে মূসা ইবন হিযাম (২৫০ হি) বলেছেন, আমি সালিহ ইবন আব্দুল্লাহ (২৩১ হি)-কে বলতে শুনেছি, আমরা আবূ মুকাতিল সামারকান্দীর নিকট ছিলাম। তিনি আওন ইবন আবী শাদ্দাদ থেকে বড় বড় হাদীস বর্ণনা করছিলেন, যে সকল হাদীসে লুকমান হাকীমের ওসীয়ত, সাঈদ ইবন জুবাইরের নিহত হওয়ার ঘটনা ও অনুরূপ বিষয়াদি ছিল। তখন আবূ মুকাতিলের ভাতিজা বলেন: চাচা, আপনি বলেন না যে, আওন আমাদেরকে এ হাদীস বলেছেন; কারণ আপনি তো এ সকল হাদীস তাঁর থেকে শুনেন নি। তখন আবূ মুকাতিল বলেন: বেটা, ‘এ কথাগুলিতো সুন্দর!’ তিরমিযী বলেন, অনেক সুপ্রসিদ্ধ মহান আলিমের বিষয়ে অনেক মুহাদ্দিস আপত্তি প্রকাশ করেছেন এবং তাঁদেরকে দুর্বল বলেছেন তাঁদের স্মৃতিশক্তি ও হাদীস নির্ভুল মুখস্থ রাখার দুর্বলতার কারণে। আবার অনেকে তাঁদেরকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন তাঁদের মর্যাদা ও সত্যবাদিতার কারণে, যদিও তাঁরা তাঁদের বর্ণিত কিছু হাদীসে অসাবধানতা জনিত ভুলভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছেন।’’[8]

ইমাম তিরমিযী সংকলিত এ ঘটনার সনদ সহীহ। এ থেকে আমরা জানতে পারি যে, ইমাম আবূ মুকাতিল বর্ণনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত অসতর্ক ছিলেন। অন্যান্য অনেক দরবেশের মতই মনে করতেন, কথা যদি ভাল হয় তবে তা কোনো ভাল মানুষের নামে বললে দোষ নেই!! পাশাপাশি ইমাম তিরমিযীর বক্তব্য থেকে বুঝতে পারি যে, ইবন মুকাতিল অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও মর্যাদাসম্পন্ন আলিম ছিলেন, যারা তাঁর বিষয়ে আপত্তি করেছেন তাঁরা শুধু নির্ভুল বর্ণনায় তাঁর দুর্বলতার কারণেই তা করেছেন। আবার যারা তাঁকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন তারাও তাঁর এ দুর্বলতার বিষয়ে সচেতন। তবে তাঁর মর্যাদা ও মূল সত্যপরায়ণতার কারণে তাঁকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন।

বিভিন্ন পান্ডুলিপিতে গ্রন্থটির একাধিক সনদ পাওয়া যায়। মিসরের দারুল কুতুবে বিদ্যমান পান্ডুলিপির (নং ৩৪১৪৭) সনদ নিম্নরূপ: পুস্তিকাটি বর্ণনা করেছেন শাইখ আবুল হাসান আলী ইবন খলীল দিমাশকী (৬৫১ হি), তিনি আবুল হাসান বুরহানুদ্দীন আলী ইবনুল হাসান বালখী (৫৪৮ হি) থেকে, তিনি আবুল মুয়ীন মাইমূন ইবন মুহাম্মাদ নাসাফী (৫০৮ হি) থেকে, তিনি তাঁর পিতা মুহাম্মাদ নাসাফী থেকে, তিনি আব্দুল কারীম ইবন মূসা বাযদাবী নাসাফী (৩৯০ হি) থেকে, তিনি (মাতুরিদী মতের প্রতিষ্ঠাতা) ইমাম আবূ মানসূর মাতুরীদী (৩৩৩ হি) থেকে, তিনি আবূ বকর আহমদ ইবন ইসহাক জূযজানী থেকে, তিনি ইমাম আবূ ইউসূফের ছাত্র প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও ফকীহ আবূ সুলাইমান মূসা ইবন সুলাইমান জূযজানী থেকে এবং প্রসিদ্ধ ফকীহ ও মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইবন মুকাতিল রাযী (২৪৮ হি) থেকে, তারা উভয়ে আবূ মূতী হাকাম ইবন আব্দুল্লাহ বালখী (১৯৯ হি) ও আবূ ইসমাহ ইসাম ইবন ইউসুফ বালখী (২১৫ হি) থেকে তাঁরা উভয়ে আবূ মুকাতিল সামারকান্দী থেকে, ইমাম আবূ হানীফা থেকে।[9]

(৪) আর-রিসালাহ বা উসমান বাত্তীকে লেখা পত্র

ইমাম আবূ হানীফার সমসাময়িক বসরার সুপ্রসিদ্ধ কাপড় ব্যবসায়ী, মুহাদ্দিস, কিয়াসপন্থী ফকীহ ও বিচারক ছিলেন আবূ আমর উসমান ইবন মুসলিম আল-বাত্তী (১৪৩ হি)। তিনি মূলত কূফার অধিবাসী ছিলেন, পরে বসরায় বসবাস করেন। বাত্তী শুনেন যে, ইমাম আবূ হানীফা মুরজিয়া মতবাদ গ্রহণ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ইমাম আবূ হানীফাকে পত্র লিখেন। এ পত্রের উত্তরে ইমাম আবূ হানীফা তাঁর মত ব্যাখ্যা করে ও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ খন্ডন করে এ পত্রটি তাকে লিখে পাঠান।

মদীনা মুনাওয়ারার ‘‘আরিফ হিকমাত লাইব্রেরি’’-তে সংরক্ষিত এ পুস্তিকার পান্ডুলিপির (নং ২৩৪) সনদ নিম্নরূপ: পত্রটি বর্ণনা করেছেন হুসামুদ্দীন হুসাইন ইবন আলী সিগনাকী (৭১০ হি), তিনি হাফিযুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন নাসর বুখারী (৬৯৩ হি) থেকে, তিনি শামসুল আয়িম্মাহ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুস সাত্তার কারদারী (৬৪২ হি) থেকে, তিনি (হেদায়ার প্রণেতা) আল্লামা বুরহানুদ্দীন আলী ইবন আবী বাকর মারগীনানী (৫৯৩ হি) থেকে, তিনি যিয়াউদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন ইয়ারসূখী (৫৪৫ হি) থেকে, তিনি আলাউদ্দীন আবূ বকর মুহাম্মাদ ইবন আহমদ সামারকান্দী (৫৩৯ হি) থেকে, তিনি আবুল মুয়ীন মাইমূন ইবন মুহাম্মাদ নাসাফী (৫০৮ হি) থেকে, তিনি আবূ যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন মুতরিফ বালখী থেকে, তিনি আবূ সালিহ মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন সামারকান্দী থেকে, তিনি আবূ সাঈদ সা’দান ইবন মুহাম্মাদ ইবন বাকর বুসতী থেকে, তিনি আবুল হাসান আলী ইবন আহমদ ফারিস থেকে, তিনি নাসীর ইবন ইয়াহইয়া (২৬৮ হি) থেকে, তিনি মুহাম্মাদ ইবন সামাআহ তামীমী (২৩৩ হি) থেকে তিনি ইমাম আবূ ইউসূফ (১৮২ হি) থেকে, তিনি ইমাম আবূ হানীফা থেকে।’’[10]

(৫) ওসিয়্যাহ

এ পুস্তিকাটিতে ঈমান-আকীদা বিষয়ে ইমাম আযমের কিছু ‘ওসিয়ত’ সংকলিত। মদীনা মুনাওয়ারার ‘‘শাইখুল ইসলাম আরিফ হিকমাত লাইব্রেরি’’-তে সংরক্ষিত এ পুস্তিকার পান্ডুলিপির (নং ২৩৪) সনদ নিম্নরূপ:

ওসিয়্যাতটি বর্ণনা করেছেন হুসামুদ্দীন হুসাইন ইবন আলী সিগনাকী (৭১০ হি), তিনি হাফিযুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন নাসর বুখারী (৬৯৩ হি), তিনি শামসুল আয়িম্মাহ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুস সাত্তার কারদারী (৬৪২ হি) থেকে, তিনি হেদায়ার প্রণেতা আল্লামা বুরহানুদ্দীন আলী ইবন আবী বাকর মারগীনানী (৫৯৩ হি) থেকে, তিনি যিয়াউদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন নূসূখী (৫৪৫ হি) থেকে, তিনি আলাউদ্দীন আবূ বকর মুহাম্মাদ ইবন আহমদ সামারকান্দী (৫৩৯ হি), তিনি আবুল মুয়ীন মাইমূন ইবন মুহাম্মাদ নাসাফী (৫০৮ হি) থেকে, তিনি ইমাম আবূ তাহির মুহাম্মাদ ইবনুল মাহদী হুসাইনী থেকে, তিনি ইসহাক ইবন মানসূর আল-মিসইয়ারী থেকে, তিনি আহমদ ইবন আলী সুলাইমানী থেকে তিনি হাতিম ইবন আকীল জাওহারী থেকে, তিনি আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবন সামাআহ তামীমী (২৩৩ হি) থেকে, তিনি ইমাম আবূ ইউসূফ ইয়াকূব ইবন ইবরাহীম (১৮২ হি) থেকে, তিনি ইমাম আবূ হানীফা থেকে।’’[11]

উপরের আলোচনা থেকে আমরা দেখছি যে, ইমাম আবূ হানীফা রচিত তিনটি পুস্তকের কথা তৃতীয়-চতুর্থ শতক থেকেই প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। পরবর্তীকালে আরো কয়েকটি পুস্তিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে ‘‘আল-ফিকহুল আকবার’’ গ্রন্থটির কথা অনেক প্রাচীন আলিম উল্লেখ করেছেন। গ্রন্থটির সনদ বিদ্যমান এবং বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে গ্রন্থটির অনেক প্রাচীন পান্ডুলিপি বিদ্যমান।

৬. আল-ফিকহুল আকবার ও আবসাত

আমরা দেখছি যে, ‘আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থটির দুটি ভাষ্য বিদ্যমান: একটি তাঁর পুত্র হাম্মাদের সূত্রে বর্ণিত এবং অন্যটি তাঁর ছাত্র আবূ মুতী বালখীর সূত্রে বর্ণিত এবং ‘আল-ফিকহুল আবসাত’ নামে প্রসিদ্ধ। পুস্তিকা দুটির সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ:

(১) আল-ফিকহুল আবসাত পুস্তিকাটি আকারে আল-ফিকহুল আকবার-এর প্রায় তিনগুণ। আল্লামা মুহাম্মাদ যাহিদ কাওসারীর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আল-ফিকহুল আবসাত’-এর পৃষ্ঠাসংখ্যা ১৮ এবং ‘আল-ফিকহুল আকবারের’ পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬।

(২) আল-ফিকহুল আবসাতে মূলত দুটি বিষয় অতি বিশদ ও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে: (১) ঈমানের পরিচয়, সংজ্ঞা, ঈমান ও আমালের সম্পর্ক, খারিজী-মুরজিয়া প্রান্তিকতা, তাকফির বা মুমিনকে কাফির বলা এবং (২) তাকদীর প্রসঙ্গ। এর মধ্যে আকীদার আরো কিছু বিষয়, যেমন: সাহাবীগণের ভালবাসা, জালিম সরকারের আনুগত্য, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, উম্মাতের বিভক্তি, বিদআত, মহান আল্লাহর আরশে অধিষ্ঠান ও ঊর্ধ্বত্ব, মহান আল্লাহর বিশেষণ ইত্যাদি বিষয় প্রসঙ্গত উল্লেখ করা হয়েছে। এর বিপরীতে আল-ফিকহুল আকবারে উপরের বিষয়গুলো ছাড়াও তাওহীদ, শিরক, আরকানুল ঈমান, নবীগণের নিষ্পাপত্ব, পাপীর ইমামত্ব, নেক আমল কবুলের শর্ত ও বিনষ্টের কারণাদি, মুজিযা-কারামত, মিরাজ, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- আত্মীয়-স্বজন, কবরের অবস্থা, কিয়ামতের আলামত, আখিরাতে আল্লাহর দর্শন, শাফাআত, মীযান, হাউয ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। ফিকহুল আবসাতের মূল বিষয়দুটো তুলনামূলক সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে এবং মহান আল্লাহর বিশেষণ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

(৩) ‘আল-ফিকহুল আকবার’-এ আকীদার বিষয়গুলো সংক্ষেপে সহজবোধ্য ভাষায় আলোচনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে ‘আল-ফিকহুল আবসাত’-এ ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে কথোপকথনের মাধ্যমে দীর্ঘ ও জটিল যুক্তিতর্ক পেশ করা হয়েছে।

এভাবে আমরা দেখছি যে, পুস্তিকা দুটোর বিষয়বস্ত্ত মূলত এক। এখন প্রশ্ন হলো কোন্টি মূল ‘ফিকহুল আকবার’? কোনো কোনো গবেষক মত প্রকাশ করেছেন যে, ‘আল-ফিকহুল আবসাত’ গ্রন্থটিই মূল ‘আল-ফিকহুল আকবার’। তাঁদের যুক্তি নিম্নরূপ:

(ক) চতুর্থ হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ ইমাম আবুল লাইস সামারকান্দী নাসর ইবন মুহাম্মাদ (৩৭৩ হি) ‘আল-ফিকহুল আকবার’ বলতে আবূ মুতীর সূত্রে বর্ণিত পুস্তিকাটি বুঝিয়েছেন এবং পুস্তিকাটির ব্যাখ্যা রচনা করেন।[12]

(খ) আমরা দেখেছি পঞ্চম হিজরী শতকে আল্লামা আবুল মুযাফ্ফার শাহফূর (৪৭১ হি) উল্লেখ করেছেন যে, আল-ফিকহুল আকবার গ্রন্থটি আবূ মুতীর সূত্রে বর্ণিত। অষ্টম শতকে শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া (৭২৮ হি) ও অন্যান্য আলিম ‘আল-ফিকহুল আকবার’ বলতে আবূ মুতীর সূত্রে বর্ণিত পুস্তিকাটিই বুঝিয়েছেন।[13]

আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ‘আল-ফিকহুল আকবার’ নামে প্রসিদ্ধ পুস্তিকাটিও পূর্ববর্তীদের নিকট প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষণীয়:

(ক) ইমাম তাহাবী (২৩৮-৩২১ হি) রচিত ‘আকীদাহ তাহাবিয়্যাহ’ পুস্তিকার বিষয়বস্ত্ত, বক্তব্য ও উপস্থাপনার সাথে ইমাম হাম্মাদের সূত্রে বর্ণিত ‘আল-ফিকহুল আকবার’ নামে প্রসিদ্ধ গ্রন্থটির অনেক মিল রয়েছে। ইমাম তাহাবী উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম আবূ হানীফা ও তাঁর সাথীদ্বয়ের আকীদা বর্ণনায় তিনি পুস্তিকাটি রচনা করেছেন। ইমাম আবূ হানীফা রচিত আকীদা বিষয়ক পুস্তিকাগুলোর মধ্য থেকে হাম্মাদ বর্ণিত ‘আল-ফিকহুল আকবার’-এর সাথেই তাহাবীর পুস্তিকাটির বিষয় ও উপস্থাপনার সর্বোচ্চ মিল রয়েছে। এছাড়া ইমাম তাহাবী আকীদা বিষয়ক এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন যা ইমাম হাম্মাদ বর্ণিত পুস্তিকা ছাড়া ইমাম আযমের অন্য কোনো পুস্তিকায় নেই। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ইমাম তাহাবী এ গ্রন্থটির উপর নির্ভর করেছিলেন।

(খ) আমরা দেখেছি যে, ইমাম বাযদাবী (৪০০-৪৮২ হি) বলেছেন, ইমাম আবূ হানীফা তাঁর আল-ফিকহুল আকবার গ্রন্থে ‘মহান আল্লাহর বিশেষণগুলো প্রমাণ করেছেন’। এতে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি হাম্মাদ ইবন আবী হানীফার সূত্রে বর্ণিত ‘আল-ফিকহুল আকবার’ নামে প্রসিদ্ধ পুস্তিকাটিই বুঝাচ্ছেন। এ পুস্তিকাতেই ইমাম আযম বিশেষণ প্রসঙ্গ ও তাকদীর প্রসঙ্গ সমান গুরুত্ব দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। পক্ষান্তরে আল-ফিকহুল আবসাত পুস্তিকায় তাকদীর ও ঈমান প্রসঙ্গ অতি বিশদভাবে আলোচনা করলেও বিশেষণ বিষয়ে অতি-সংক্ষেপ কিছু কথা বলেছেন।

(গ) অষ্টম হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ ও আকীদাবিদ ইবন আবিল ইজ্জ হানাফী (৭৯২ হি) ‘‘শারহুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ’’ গ্রন্থে বিভিন্ন স্থানে ‘ইমাম আবূ হানীফা রচিত আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি প্রদান করেছেন। এ উদ্ধৃতিগুলো হাম্মাদের সূত্রে বর্ণিত ‘আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থে হুবহু বিদ্যমান।[14]

(ঘ) দশম-একাদশ হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ শাইখ আহমদ ইবন মুহাম্মাদ মাগনীসাবী (১০০০ হি) এবং মোল্লা আলী ইবন সুলতান কারী হানাফী (১০১৪ হি) হাম্মাদ-এর সূত্রে বর্ণিত ‘আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থের ব্যাখ্যা রচনা করেছেন। গ্রন্থদুটো মুদ্রিত।

(ঙ) আমরা দেখছি যে, গ্রন্থটির পাণ্ডুলিপিগুলোর সনদ বিদ্যমান। বিষয়বস্ত্তর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখি যে, ইমাম আবূ হানীফা রচিত আকীদা বিষয়ক অন্য চারটি পুস্তিকার সকল বিষয় এ পুস্তিকায় সন্নিবেশিত। এজন্য সনদ ও মতনের দিক থেকে পুস্তিকাটি ইমাম আবূ হানীফা রচিত বলে জানা যায়।

বাহ্যত প্রতীয়মান হয় যে, দুটো পুস্তিকা-ই ‘আল-ফিকহুল আকবার’। পুস্তিকাদুটো একই গ্রন্থের দুটি ভাষ্য (version)। আমরা দেখেছি, সে সময়ের প্রসিদ্ধ আলিমগণ তাঁদের সংকলিত বিষয়গুলো বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদেরকে পড়ে শুনাতেন বা লেখাতেন। এতে বিষয়বস্ত্ত এবং বিন্যাসের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম হতো। এজন্য ইমাম মালিকের ‘মুআত্তা’-র কয়েক ডজন ভাষ্য এবং ইমাম আবূ হানীফার ‘কিতাবুল আসার’-এর কয়েকটি ভাষ্যের ন্যায় ‘আল-ফিকহুল আকবার’-এরও দুটি ভাষ্য রয়েছে।

ইমাম হাম্মাদের সূত্রে বর্ণিত ও ‘আল-ফিকহুল আকবার’ নামে পরিচিত গ্রন্থটিতে সহজ সরল ভাষায় আকীদার মূল বিষয়গুলি সংকলিত। বাহ্যত তা ইমামের নিজের লেখা বা তাঁর মুখের বক্তব্যের সংকলন। আর দ্বিতীয় গ্রন্থটিতে ইমাম আবূ মুতী ইমাম আবূ হানীফার মত ও বক্তব্য নিজের পদ্ধতিতে সংকলন করেন। অর্থাৎ দ্বিতীয় গ্রন্থটির লেখক ও সংকলক ইমাম আবূ মুতী, তবে এর বিষয়বস্ত্ত ইমাম আবূ হানীফার বক্তব্য। সম্ভবত এজন্য ইমাম যাহাবী, আব্দুল হাই লাখনবী প্রমুখ আলিম ইমাম আবূ মুতী বালখীকেই ‘আল-ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থের রচয়িতা বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁরা আল-ফিকহুল আকবারের দ্বিতীয় ভাষ্য বা ‘আল-ফিকহুল আবসাত’ বুঝিয়েছেন।[15]

উপরে আমরা আল-ফিকহুল আকবারের কয়েকজন ব্যাখ্যাকারের নাম উল্লেখ করেছি। আরো অনেকেই পুস্তিকাটির ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:

(১) আল্লামা মুহাম্মাদ ইবন মুহাম্মাদ বাবরতী (৭৮৬ হি)[16]

(২) শাইখ ইলইয়াস ইবন ইবরাহীম সীনূবী তুর্কী (৮৯১ হি)[17]

(৩) মুহাম্মাদ ইবন বাহাউদ্দীন যাদাহ রাহমাবী (৯৫২ হি)[18]

(৪) শাইখ মুহিউদ্দীন মুহাম্মাদ ইবন লুৎফুল্লাহ বীরামী (৯৫৬ হি)[19]

(৫) শাইখ নূরুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ শারওয়ানী (১০৬৫ হি)[20]

বিগত কয়েক শতকে মধ্যপ্রাচ্যে অনেক আলিম গ্রন্থটির ব্যাখ্যা রচনা করেছেন।

[1] ড. খোন্দার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর: ফুরফুরার পীর আবূ জাফর সিদ্দিকী রচিত আল-মাউদূআত: একটি বিশেস্নষণাত্মক পর্যালোচনা, পৃষ্ঠা ৫১৫-৫১৮।

[2] ড. খুমাইয়িস, উসূলুদ্দীন ইনদাল ইমাম আবী হানীফাহ, পৃ. ১১৭-১১৮।

[3] ইবন মায়ীন, আত-তারীখ ৪/৩৫৬; নাসাঈ, আদ-দুআফা ওয়াল মাতরূকীন, পৃ. ২৫৯; ইবন হিব্বান, আল-মাজরূহীন ১/২৫০; ইবন আবী হাতিম, আল-জারহু ওয়াত তাদীল ৩/১২২; ইবন আদী, আল-কামিল ২/৬৩১; যাহাবী, মীযানুল ইতিদাল ১/৫৭৪; ইবন হাজার, লিসানুল মীযান ২/৩৩৪; কুরাশী, তাবাকাতুল হানাফিয়্যাহ ২/২৬৫-২৬৬।

[4] মুহাম্মাদ যাহিদ কাওসারী, আলিম ওয়াল মুতাআল্লিম, পৃ. ৬; ড. খুমাইয়িস, উসূলুদ্দীন, পৃ. ১২০-১২২।

[5] ইবন হাজার আসকালানী, লিসানুল মীযান ২/৩২৩।

[6] হাকিম, আল-মাদখাল ইলাস সহীহ, পৃ. ১৩০-১৩১; নাসাঈ, আদ-দুআফা, পৃ. ৫৭; ইবন হিব্বান, আল-মাজরূহীন ১/২৫৬; যাহাবী, মীযানুল ইতিদাল ১/৫৫৭-৫৫৮; ইবন হাজার, লিসানুল মীযান ২/৩২২-৩২৩; খালীলী, আল-ইরশাদ ৩/৯৭৫।

[7] ইবন হিব্বান, আল-মাজরূহীন ১/২৫৬।

[8] তিরমিযী, আস-সুনান (শামিলা: মুকান্নায) ১৪/১৪৯; আল-ইলালুস সাগীব, পৃষ্ঠা ৭৩৯-৭৪০।

[9] মুহাম্মাদ যাহিদ কাওসারী, আল-আলিম ওয়াল মুতাআলিস্নম গ্রন্থের ভূমিকা, পৃষ্ঠা ৪-৫।

[10] ড. খুমাইয়িস, উসূলুদ্দীন, পৃ. ১৩৫-১৩৮।

[11] ড. খুমাইয়িস, উসূলুদ্দীন, পৃ. ১৩৮-১৪০।

[12] আলিম ওয়াল মুতাআল্লিম-এর ভূমিকায় আল্লামা যাহিদ কাওসারীর আলোচনা, পৃ ৪।

[13] ইবন তাইমিয়া, মাজমূউল ফাতাওয়া ৫/৪৬, ৪৭, ১৪০, ১৮৩।

[14] ইবন আবিল ইজ্জ, শারহুল আকীদাহ আত-তাহাবিয়্যাহ, পৃ. ১১৭, ১৭৬-১৭৭, ২১৯।

[15] যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ১৩/১৫৮; আল-ইবার ১/২৫৭-২৫৮; লাখনবী, আল-ফাওয়াইদুল বাহিয়্যাহ, পৃ. ৬৮।

[16] যিরকলী, আল-আলাম ৭/৪২।

[17] যিরকলী, আল-আ’লাম ২/৮।

[18] যিরকলী, আল-আ’লাম ৬/৬০; কাহ্হালাহ, মু’জামুল মুআল্লিফীন ৯/১২০।

[19] ইসমাঈল পাশা, ঈদাহুল মাকনূন ২/২৫০।

[20] যিরকলী, আল-আ’লাম ৮/৫৩।