এরপর নাবী কারীম (ﷺ) ভিতর থেকে কা‘বাহ ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। উসামা ও বিলাল (রাঃ) ভিতরেই ছিলেন। অতঃপর তিনি দরজার সামনের দেয়ালের অভিমুখী হন এবং দেয়াল থেকে মাত্র তিন হাত দূরত্বে থেমে যান। এ অবস্থায় নাবী কারীম (ﷺ)-এর বাম পাশে থাকে দুটি স্তম্ভ, ডান পাশে একটি এবং পিছনে তিনটি। ঐ সময়ে কা‘বাহ ঘরটি ছিল ছয় স্তম্ভবিশিষ্ট। অতঃপর নাবী কারীম (ﷺ) সেখানেই সালাত আদায় করেন। সালাতান্তে আল্লাহর ঘরের ভিতরের অংশগুলো তিনি ঘুরে ফিরে দেখতে থাকেন এবং তাকবীর ও একত্ববাদের আয়াতগুলো উচ্চারণ করতে থাকেন। অতঃপর কা‘বা ঘরের দরজা খুলে দেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কী করেন তা প্রত্যক্ষ করার জন্য বিশাল সংখ্যক কুরাইশ কা‘বাহ ঘরের সম্মুখে কাতারবন্দী অবস্থায় ছিল। দরজার দু’ অংশ ধারণ করে নিম্নভাগে দন্ডায়মান কুরাইশদের সম্বোধন করে নাবী কারীম (ﷺ) বললেন,
(لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، صَدَقَ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ، أَلَا كُلُّ مَأْثُرَةٌ أَوْ مَالٌ أَوْ دَمٌ فَهُوَ تَحْتَ قَدَمَيَّ هَاتَيْنِ، إِلَّا سِدَانَةَ الْبَيْتِ وَسِقَايِةَ الْحَاجِّ، أَلَاوَقُتَيْلُ الْخَطَأِ شِبْهُ الْعَمَدِ ـ السَّوْطُ وَالْعَصَا ـ فَفِيْهِ الدِّيَةُ مُغَلَّظَةٌ، مِائَةٌ مِّنْ الْإِبِلِ أَرْبَعُوْنَ مِنْهَا فِيْ بُطُوْنِهَا أَوْلَادٌ.
يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٌ إِنَّ اللهَ قَدْ أَذْهَبَ عَنْكُمْ نخْوَةَ الْجَاهِلِيَّةِ وَتَعَظَّمَهَا بِالْآبَاءِ، النَّاسُ مِنْ آدَمٍ، وَآدَمُ مِنْ تُرَابٍ
‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করে দেখিয়েছেন, তাঁর বান্দাদের সাহায্য করেছেন এবং তিনি একক ভাবেই সমস্ত দলকে পরাজিত করেছেন। শুনে রাখ, আল্লাহর ঘরের চাবি সংরক্ষণ এবং হাজীদের পানি পান করানো সম্মান ছাড়া সমস্ত সম্মান, অথবা র্পূণতা, অথবা রক্ত প্রবাহিত করা আমার এ দুই পদতলে রইল। স্মরণ রেখ, ভুলবশত হত্যা যা লাঠি সোটা দ্বারা হয়ে থাকে, তা ইচ্ছাকৃত হত্যার অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তার জন্য শোনিতপাতের খেসারত দিতে হবে। অর্থাৎ একশ উট দিতে হবে যার মধ্যে ৪০টি হবে গর্ভবতী।
হে কুরাইশগণ! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের হতে জাহেলিয়াত যুগের অহংকার এবং পূর্ব পুরুষদের গৌরব খতম করে দিয়েছেন। সমস্ত মানুষ আদম (আঃ)-এর সন্তান এবং তিনি ছিলেন মাটির তৈরি।’
এরপর পরবর্তী আয়াতটি পাঠ করেন,
(يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوْبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوْا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ) (سورة الحجرات : 13)
‘হে মানব জাতি! আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা থেকে সৃষ্টি এবং সম্প্রদায় ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যেন তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট ঐ ব্যক্তি অধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেজগার। অবশ্যই আল্লাহ সব কিছু জ্ঞাত আছেন এবং সব খবর রাখেন। [আল-হুজুরাত (৪৯) : ১৩]