আর-রাহীকুল মাখতূম মক্কা বিজয়ের যুদ্ধ (غَزْوَةُ فَتْحِ مَكَّةَ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
মাসজিদুল হারামের রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর প্রবেশ ও মূর্তি অপসারণ (الرَّسُوْلُ ﷺ يَدْْخُلُ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ وَيُطَهِّرُهُ مِنْ الْأَصْنَامِ):

এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উঠলেন এবং সম্মুখে পেছনে ডান ও বাম পাশে মোতায়েন আনসার ও মুহাজির পরিবেষ্টিত অবস্থায় অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে মাসজিদুল হারামে আগমন করলেন। মাসজিদুল হারামে আগমনের পর সর্বাগ্রে তিনি হাজার আসওয়াদ চুম্বন করলেন এবং তার পর আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করলেন। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাতে একটি কামান (ধনুক) ছিল এবং আল্লাহর ঘরের আশপাশে ও ছাদের উপর ৩৬০টি মূর্তি ছিল। নাবী কারীম (ﷺ) সে ধনুক দ্বারা মূর্তিগুলোকে আঘাত করতে করতে বলেছিল,

‏(‏جَاء الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوْقًا‏) ‏‏[‏الإسراء‏:‏81‏]‏

(‏قُلْ جَاء الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيْدُ‏)‏ ‏[‏سبأ‏:‏49‏]‏

‘হক এসেছে এবং বাতিল বিলুপ্ত হয়েছে। আর বাতিল বিলুপ্ত হওয়ারই বিষয়।’ (আল-ইসরা (১৭) : ১৮]

‘বল- সত্য এসে গেছে, আর মিথ্যের নতুন করে আবির্ভাবও ঘটবে না, আর তার পুনরাবৃত্তিও হবে না।’ [সাবা (৩৪) : ৪৯]

নাবী কারীম (ﷺ)-এর আঘাতে মূর্তিগুলো ভূপতিত হচ্ছিল।

নিজের (ﷺ) উটের পিঠে আরোহণ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন এবং ইহরাম অবস্থায় না থাকার কারণে শুধু তাওয়াফ করাই যথেষ্ট মনে করেন। তাওয়াফ সম্পন্ন করার পর উসমান বিন ত্বালহাহ (রাঃ)-কে ডেকে নিয়ে তাঁর কাছ থেকে কা‘বা ঘরের চাবি গ্রহণ করেন। অতঃপর তাঁর নির্দেশক্রমে কা‘বা ঘর খোলা হয় এবং তিনি ভিতরে প্রবেশ করেন। এ সময় অভ্যন্তরস্থিত ছবিগুলো তাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। তাঁদের মধ্যে ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর প্রতিকৃতদ্বিয়ও ছিল। তাঁদের হাতে ভবিষ্যত কথন সম্পর্কিত তীর ছিল। এ দৃশ্য দেখে বললেন, ‏قَاتَلَهُمُ اللهُ، وَاللهُ مَا اسْتَقْسَمَا بِهَا قَطٌّ ‘আল্লাহ তা‘আলা ঐ সকল মুশরিকদেরকে ধ্বংস করুন! আল্লাহর কসম! ঐ দু’ জন কখনই ভবিষ্যত জানার জন্য এ ধরণের তীর ব্যবহার করেন নি।

কা‘বাহ ঘরের অভ্যন্তরে কাঠের তৈরি একটি কবুতরীর প্রতিকৃতিও তাঁর চোখে পড়ে। এ প্রতিকৃতিটি তিনি নিজ হাতে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলেন। অন্যান্য মূর্তিগুলোকেও তাঁর নির্দেশে মুছে ফেলা হয়।