উপর্যুক্ত প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য উত্তরমালার মধ্যে সর্বপ্রথম এবং সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সমগ্র বিশ্ব জাহানের অনাদি অনন্ত অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান স্রষ্টা প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস এবং তাঁর অস্তিত্ব, হিকমত এবং কুদরত সম্পর্কে সঠিক এবং সুস্পষ্ট ধারণা বা জ্ঞান। কারণ, তাওহীদের সুস্পষ্ট ধারণা এবং তাওহিদী নূরে যখন মু’মিনের অন্তর আলোকিত, উদ্বেলিত ও পুলকিত হয়ে ওঠে, পর্বত-প্রমাণ প্রতিবন্ধকতাও তখন তাঁর সামনে শুষ্ক তৃণখন্ডের মতো তুচ্ছ মনে হয়। যে মু’মিন পরিপক্ক ও সুদৃঢ় ঈমান এবং মজবুত ইয়াকীনের অধিকারী হওয়ার দুর্লভ সৌভাগ্য লাভ করেন, তাঁর সম্মুখে পৃথিবীর যত প্রকট সমস্যাই আসুক না কেন, তা যতই ভয়ংকর এবং ভীতিপ্রদই হোক না কেন, তাঁর অটল বিশ্বাসে বলীয়ান চেতনা এবং তাওহীদের অলৌকিক আস্বাদে পরিতৃপ্ত মন এ সব কিছুকে স্যাঁতসেঁতে এদো পরিবেশে ভগ্ন ইষ্টকখন্ডের উপর জমে উঠা শেওলার চাইতে অধিক কিছুই মনে করেন না। এ কারণেই ঈমানী সুরার অলৌকিক আস্বাদে পরিতৃপ্ত কোন ঈমানদারের প্রাণের সজীবতা এবং উদার উন্মুক্ত চিত্তের আনন্দানুভূতি মূর্খ ও নিকৃষ্ট শ্রেণীর মানব সৃষ্ট দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণাকে কখনো পরোয়া করে না। কুরআন মাজীদে যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,
(فَأَمَّا الزَّبَدُ فَيَذْهَبُ جُفَاء وَأَمَّا مَا يَنفَعُ النَّاسَ فَيَمْكُثُ فِي الأَرْضِ) [الرعد:17]
‘‘ফেনা খড়কুটোর মত উড়ে যায়, আর যা মানুষের জন্য উপকারী তা যমীনে স্থিতিশীল হয়।’ (আর-রা‘আদ : ১৩ : ১৭)
তারপর এ কারণের সূত্র ধরেই অস্তিত্ব লাভ করে অজস্র কারণ যা সেই ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তাকে আরও মজবুত করে তোলে।