“আমি আরম্ভ করছি আল্লাহর প্রশংসা ও সর্বোত্তম নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ দ্বারা, যাকে [রাসূল করে] প্রেরণ করা হয়েছে”।

লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ ‘মানযূমার’ শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা পাঠ করেছেন, কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারিম আরম্ভ করেছেন তার প্রশংসার মাধ্যমে। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ﴾ [الفاتحة: ٢]

“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব”।[1] অপর আয়াতে তিনি আসমান-যমিন ও আলো-আধার সৃষ্টি সম্পর্কে সংবাদ দেওয়ার পূর্বে নিজের প্রশংসা করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَجَعَلَ ٱلظُّلُمَٰتِ وَٱلنُّورَۖ ثُمَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِمۡ يَعۡدِلُونَ ١ ﴾ [الانعام: ١]

“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও জমিন এবং সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো। তারপর কাফিররা তাদের রবের সমতুল্য স্থির করে”।[2]

দ্বিতীয়ত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা পাঠ করতেন। ইমাম বুখারি ও মুসলিম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সূত্রে বর্ণনা করেন:

«ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْعَشِيِّ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: مَا بَالُ أُنَاسٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ، مَنِ اشْتَرَطَ شَرْطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهُوَ بَاطِلٌ»

“অতঃপর সন্ধ্যায় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করলেন, যেরূপ তিনি হকদার। অতঃপর বললেন: লোকদের কি হল, তারা এমন কতক শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই। যে এমন শর্তারোপ করল, যা আল্লাহর কিতাবে নেই তা বাতিল”।[3]

ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহ্ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«كُلُّ خُطْبَةٍ لَيْسَ فِيهَا تَشَهُّدٌ فَهِيَ كَالْيَدِ الْجَذْمَاءِ»

“যেসব খুৎবায় তাশাহহুদ নেই, তা কর্তিত হাতের ন্যায়”।[4] আল্লাহর হাম্‌দ তথা প্রশংসা ও গুণকীর্তন একপ্রকার তাশহহুদ। অতএব লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ হামদ দ্বারা ‘মানযূমাহ’ আরম্ভ করে কুরআনুল কারিম ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নার যথাযথ অনুসরণ করেছেন।

حمد অর্থ মহব্বত ও সম্মানসহ পরিপূর্ণ গুণাবলি ও বিশেষণের কারণে প্রশংসিত সত্তার প্রশংসা করা। যদি মহব্বত ও সম্মান ব্যতীত শুধু ভয় ও শঙ্কা থেকে প্রশংসা করা হয়, তাহলে مدح বলা হয়, হাম্‌দ বলা হয় না। একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা পরিপূর্ণ গুণাবলি ও বিশেষণের মালিক, তাই পরিপূর্ণ প্রশংসা তিনি ব্যতীত কারো জন্য বৈধ নয়। তিনি সুন্দর নামসমূহ, পরিপূর্ণ গুণাবলি ও যাবতীয় কর্মের মালিক; তিনি একক, সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী ও বে-হিসাব নিয়ামত প্রদানকারী। অতএব তিনি ব্যতীত কেউ সর্বদা ও সকল প্রশংসার যোগ্য নয়।

লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ এখানে প্রশংসিত সত্তার নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে স্পষ্ট যে, প্রশংসিত সত্তা মহান আল্লাহ তা‘আলা। কারণ তিনি মুসলিম, তিনি কেবল আল্লাহ তা‘আলার হামদ তথা-ভালোবাসা ও সম্মান মিশ্রিত প্রশংসা করবেন এটাই স্বাভাবিক।

দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠ করেছেন। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে বলেছেন, যে দরূদ ব্যতীত দো‘আ আরম্ভ করেছিল: "عَجِلَ هَذَا" “সে দ্রুত করে ফেলল”। অতঃপর তিনি তাকে বা অপর কাউকে বলেন:

«إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ، ثُمَّ لَيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ لَيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ»

“যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে, সে যেন আল্লাহর প্রশংসা ও তার গুণকীর্তন দ্বারা আরম্ভ করে। অতঃপর সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত আদায় করে। অতঃপর যা ইচ্ছা তাই যেন দো‘আ করে”।[5] দ্বিতীয়ত আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا ٥٦ ﴾ [الاحزاب : ٥٦]

“নিশ্চয় আল্লাহ এবং তার মালায়েকাগণ নবীর উপর দরূদ পাঠ করেন। হে মুমিনগণ তোমরাও নবীর উপর দরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও”।[6]

লেখক রাহিমাহুল্লাহ দ্বিতীয় পর্যায়ে দরূপ পাঠ করে কুরআনুল কারিম ও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার উপর আমল করেছেন।

صلاة শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহর ‘সালাত’ পাঠ করার অর্থ রহমত প্রেরণ করা। মানুষ ও মালায়েকার সালাত পাঠ করার অর্থ তার জন্য মাগফেরাত তলব করা। অধিকাংশ আলেমের নিকট এ অর্থ প্রসিদ্ধ, কিন্তু বিজ্ঞ আলেমদের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহর সালাত পাঠ করার অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে তার প্রশংসা করা। ইমাম বুখারি, আবুল আলিয়া থেকে এ অর্থ নিয়েছেন। অতএব যখন আপনি বললেন:صلى الله على محمد তার অর্থ: اللهم اثن على محمد في الملأ الأعلى ثناءً حسناً. “হে আল্লাহ ঊর্ধ্ব জগতে আপনি মুহাম্মদের উপর সুন্দর প্রশংসা করুন”। এ অর্থের প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿أُوْلَٰٓئِكَ عَلَيۡهِمۡ صَلَوَٰتٞ مِّن رَّبِّهِمۡ وَرَحۡمَةٞۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُهۡتَدُونَ ١٥٧﴾ [البقرة: ١٥٧]

“তাদের উপর রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে অনেক প্রশংসা ও রহমত এবং তারাই হিদায়েত প্রাপ্ত”।[7] এ আয়াতে সালাত অর্থ রহমত মানলে অর্থ হয়: ‘তাদের উপর তাদের রবের পক্ষ থেকে অনেক রহমত ও রহমত’। এ অর্থ সুন্দর ও যথাযথ নয়, কারণ অলঙ্কার শাস্ত্রের নিয়মানুযায়ী বাক্যে ব্যবহৃত দু’টি শব্দ থেকে একার্থ নেয়ার চেয়ে ভিন্নার্থ নেয়া অধিক শ্রেয়। কারণ صلوات শব্দের অর্থ রহমত হলে একার্থ বিশিষ্ট দু’টি শব্দ একটির সাথে অপরটি যোগ বা আত্‌ফ করা হয়, যা বিনা প্রয়োজনে শুদ্ধ নয়, তাই ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ্ পেশ করা অর্থ অধিক বিশুদ্ধ। এভাবে তাকিদের পরিবর্তে তাসিস তথা নতুন অর্থ হাসিল হয়। অতএব আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত পাঠ করি, তার অর্থ আমরা তার জন্য আল্লাহর প্রশংসা তলব করি। যখন স্বয়ং আল্লাহ তার উপর সালাত পাঠ করেন, তার অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে মালায়েকার মাঝে তিনি তার প্রশংসা করেন।[8]

শায়খ আব্দুল হামিদ ইব্‌ন বাদিস রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন: “পূর্ববর্তী ও পরবর্তী অনেক আলেম সালাতের বিভিন্ন অর্থ করেছেন: রহমত, মাগফেরাত, মালায়েকার মাঝে প্রশংসা করা, আল্লাহর ইহসান, অনুগ্রহ ও তার সম্মান ইত্যাদি। মূলত এসব ব্যাখ্যায় কোন বৈপরীত্য নেই, কারণ মাগফেরাত একপ্রকার রহমত, প্রশংসা একপ্রকার রহমত, ইহসান ও অনুগ্রহ একপ্রকার রহমত, সম্মান দেওয়া একপ্রকার রহমত। তবে সালাতের প্রকৃত অর্থ রহমত, অন্যান্য অর্থ আনুষঙ্গিক”।[9]

محمد নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম, তিনি বলেছেন:

«أَنَا مُحَمَّدٌ، وَأَنَا أَحْمَدُ، وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يُمْحَى بِيَ الْكُفْرُ، وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى عَقِبِي، وَأَنَا الْعَاقِبُ، وَالْعَاقِبُ الَّذِي لَيْسَ بَعْدَهُ نَبِيٌّ»

“আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ; আমি ধ্বংসকারী, যার দ্বারা কুফর ধ্বংস করা হয়; আমি হাশের, মানুষদেরকে আমার পশ্চাতে জমা করা হবে; এবং আমি আকেব, যার পরবর্তী কোনো নবী নেই সে আকেব”।[10]

কুরআনুল কারিমে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’টি নাম রয়েছে: আহমদ ও মুহাম্মদ। ঈসা ‘আলাইহিস সালাম স্বীয় কওম বনি ইসরাইলের নিকট আহমদ নামে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিচয় পেশ করেছেন। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এ নামের অহি তথা প্রত্যাদেশ পেয়েছেন, কিংবা বনি ইসরাইলের মাঝে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য এ নাম নির্বাচন করেছেন। কারণ আহমদ অর্থ ‘সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী’, যে সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ এ কথা বনি ইসরাইল জানত। অতএব আহমদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ।

محمد কর্মবাচক বিশেষ্য, অর্থ প্রশংসিত সত্ত্বা। أحمد অগ্রাধিকার সূচক বিশেষণ, অর্থ সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে আল্লাহর বেশী প্রশংসাকারী, অতএব তিনি বেশী প্রশংসার হকদার। তাই তার নাম মুহাম্মদ ও আহমদ যথাযথ হয়েছে।

ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন: “ইব্‌ন ফারেস প্রমুখগণ বলেছেন: আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারকে ইলহাম করেছেন, যার ফলে তারা মুহাম্মদ ও আহমদ নামের তৌফিক লাভ করেছেন”।[11]

خير نبي أرسلا লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ নবুওয়ত ও রিসালাত উভয় জমা করেছেন। نبي কর্তাবাচক বিশেষ্য, فعيلٌ এর ওজনে نبأ ধাতু থেকে উৎপত্তি, অর্থ সংবাদদাতা, অথবাنبا ينبوا ক্রিয়ার ধাতু نبوة থেকে উৎপত্তি, অর্থ উঁচু হওয়া। প্রথম অর্থ হিসেবে তিনি আল্লাহর সংবাদবাহক। দ্বিতীয় অর্থ হিসেবে তিনি উঁচু মর্যাদার অধিকারী। তার উঁচু মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:

﴿تِلۡكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۘ مِّنۡهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعۡضَهُمۡ دَرَجَٰتٖۚ ٢٥٣﴾ [البقرة: ٢٥٣]

“ঐ রাসূলগণ, আমি তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, তাদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কারো কারো মর্যাদা উঁচু করেছেন”।[12] অন্যত্র তিনি ইরশাদ করেন:

﴿ٱنظُرۡ كَيۡفَ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۚ وَلَلۡأٓخِرَةُ أَكۡبَرُ دَرَجَٰتٖ وَأَكۡبَرُ تَفۡضِيلٗا ٢١﴾ [الاسراء: ٢١]

“ভেবে দেখ, আমি তাদের কতককে কতকের উপর কিভাবে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। আর আখিরাত নিশ্চয় মর্যাদায় মহান এবং শ্রেষ্ঠত্বে বৃহত্তর”।[13] অন্যত্র তিনি ইরশাদ করেন:

﴿ وَلَقَدۡ فَضَّلۡنَا بَعۡضَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ ٥٥ ﴾ [الاسراء: ٥٥]

“আর আমি তো কতক নবীকে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি”।[14] তার আরেকটি বিশেষ মর্যাদা হচ্ছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে ‘মাকামে মাহমুদ’ তথা প্রশংসিত স্থান দান করবেন। তিনি বলেন:

﴿وَمِنَ ٱلَّيۡلِ فَتَهَجَّدۡ بِهِۦ نَافِلَةٗ لَّكَ عَسَىٰٓ أَن يَبۡعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامٗا مَّحۡمُودٗا ٧٩﴾ [الاسراء: ٧٩]

“আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় কর তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। আশা করা যায়, তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন”।[15] নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

«أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

“আমি কিয়ামতের দিন মানুষের সরদার”।[16] অতএব তিনি যেরূপ সংবাদদাতা, সেরূপ উঁচু মর্যাদার অধিকারী। তাই উভয় অর্থ হিসেবে ‘নবী’ নাম তার জন্য যথাযথ হয়েছে।

[1] সূরা ফাতেহা: (১)

[2] সূরা আনআম: (১)

[3] বুখারি: (২০২০), মুসলিম: (২৭৭০)

[4] তিরমিযি: (১০২০), তিনি বলেন: এ হাদিসটি হাসান, সহি ও গরিব।

[5] তিরমিযি: (৩৪২৪), আবু দাউদ: (১২৬৪), তিরমিযি রহ. বলেন: এ হাদিসটি হাসান ও সহি।

[6] সূরা আহযাব: (৫৬)

[7] সূরা বাকারা: (১৫৭)

[8] মানযুমাহ বায়কুনিয়ার ব্যাখ্যাকার খালেদ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ আল-মুসলিহ বলেন: “সালাত অর্থ কেউ বলেন: রহমত, কেউ বলেন: উর্ধ্বজগতের মজলিসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করা। কেউ বলেন: তার জন্য অফূরন্ত কল্যাণ তলব করা। তৃতীয় অর্থ অধিক সুন্দর। কারণ, আবুল আলিয়ার বাণী ব্যতীত সালাত অর্থ ‘উর্ধ্ব জগতে প্রশংসা’র স্বপক্ষে কোনো দলিল নেই। এ জাতীয় অর্থ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করা প্রয়োজন, তিনি সাহাবি নন বিধায় তার বাণীকে আমরা মারফূর হুকুমে মানতে পারি না”। শারহুল মানযূমাহ আল-বায়কুনিয়াহ: (পৃ.৬)

[9] মাজালেসুত তাজকির মিন হাদিসিল বাশিরিন নাজির: (পৃ.২২০-২২১)

[10] বুখারি: (৪৫৪২) ও মুসলিম: (৪৩২৯)

[11] ‘শারহুল মানযুমাতুল বাইকুনিয়াহ’: (১২) লি শায়খ ইয়াহইয়া ইব্‌ন আলি আল-হাজুরি।

[12] সূরা বাকারা: (২৫৩)

[13] সূরা ইসরা: (২১)

[14] সূরা ইসরা: (৫৫)

[15] সূরা ইসরা: (৭৯)

[16] বুখারি: (৪৩৬৮), মুসলিম: (২৯২)

 আল্লাহ তা‘আলা নবীদের মর্যাদায় তারতম্য করেছেন। কেউ কারো থেকে শ্রেষ্ঠ। শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল। শ্রেষ্ঠত্বের বিবেচনায় দ্বিতীয় ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

«فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى، قَدِ اتَّخَذَنِي خَلِيلًا، كَمَا اتَّخَذَ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا».

“নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে খলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন, যেমন তিনি খলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন ইবরাহীমকে”।[1] অতঃপর মর্যাদার বিবেচনায় তৃতীয় স্থানে আছেন মূসা ‘আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿ وَكَلَّمَ ٱللَّهُ مُوسَىٰ تَكۡلِيمٗا ١٦٤ ﴾ [النساء : ١٦٤]

“আর আল্লাহ মূসার সাথে সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছেন”।[2] দ্বিতীয় দলিল তার উম্মতের সংখ্যা অধিক হবে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

«وَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الْأُفُقَ، فَرَجَوْتُ أَنْ تَكُونَ أُمَّتِي، فَقِيلَ هَذَا مُوسَى وَقَوْمُهُ».

“আমি বিরাট একদল দেখলাম, যা দিগন্ত আড়াল করে রেখেছে। আমি আশা করেছি দলটি আমার উম্মত হোক, আমাকে বলা হল: এ হচ্ছে মূসা ও তার কওম”।[3] অপর হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لَا تُخَيِّرُونِي عَلَى مُوسَى، فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ، فَإِذَا مُوسَى بَاطِشٌ بِجَانِبِ الْعَرْشِ، فَلَا أَدْرِي، أَكَانَ فِيمَنْ صَعِقَ، فَأَفَاقَ قَبْلِي، أَمْ كَانَ مِمَّنْ اسْتَثْنَى اللَّهُ ؟».

“তোমরা আমাকে মূসার উপর প্রাধান্য দিয়ো না, কারণ মানুষেরা সংজ্ঞাহীন হবে, আমি সর্বপ্রথম সংজ্ঞা ফিরে পাব, তখন দেখব মূসা আরশের পার্শ্ব ধরে আছেন। আমি জানি না, তিনি সংজ্ঞাহীনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন আমার পূর্বে জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন, না আল্লাহ যাদেরকে সংজ্ঞামুক্ত রেখেছেন তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন”?[4] ইসরা ও মেরাজের হাদিসে তার মর্তবা ষষ্ঠ আসমানে বিধৃত হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় মর্যাদার বিবেচনায় মূসা ‘আলাইহিস সালাম তৃতীয় স্থানে।

চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছেন ঈসা ও নূহ ‘আলাইহিমুস সালাম। তাদের দু’জনের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণে আলেমগণ দ্বিমত করেছেন। কেউ বলেন ঈসা ‘আলাইহিস সালাম শ্রেষ্ঠ, কেউ বলেন নূহ ‘আলাইহিস সালাম শ্রেষ্ঠ। কেউ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণে নীরবতা অবলম্বন করেন। উল্লেখিত পাঁচজন সবাই শ্রেষ্ঠ রাসূল। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿فَٱصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ أُوْلُواْ ٱلۡعَزۡمِ مِنَ ٱلرُّسُلِ ٣٥﴾ [الاحقاف: ٣٥]

“অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের রাসূলগণ”।[5] অন্যত্র ইরশাদ করেন:

﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ مِيثَٰقَهُمۡ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٖ وَإِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۖ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّيثَٰقًا غَلِيظٗا ٧﴾ [الاحزاب : ٧]

“আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহিম, মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম”।[6]

এখানে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বাগ্রে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ لَخَاتَمُ النَّبِيِّينَ، وَإِنَّ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَام لَمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ».

“আমি আল্লাহর বান্দা, নিশ্চয় সর্বশেষ নবী, তখন আদম ‘আলাইহিস সালাম ছিল মাটিতে মিশ্রিত”।[7]


[1] মুসলিম: (৮৩২)

[2] সূরা নিসা: (১৬৪)

[3] বুখারি: (৩১৮১)

[4] মুসলিম: (৪৩৮৪)

[5] সূরা আহযাব: (৩৫)

[6] সূরা আহযাব: (৭)

[7] আহমদ: (১৬৮১৭)

 নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক হাদিসে অন্যান্য নবীর উপর তাকে প্রাধান্য দিতে নিষেধ করেছেন। কোথাও তিনি বলেছেন:

«لَا تُخَيِّرُوا بَيْنَ الْأَنْبِيَاءِ».

“নবীদের মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণ কর না”।[1] অথচ উপরের আলোচনা থেকে জানলাম যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ এবং নবীদের মাঝে মর্যাদার তারতম্য রয়েছে। ইব্‌ন কাসির রাহিমাহুল্লাহ্ সূরা বাকারার (২৫৩)নং আয়াতের ব্যাখ্যায় এ প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর দিয়েছেন:

১. মর্যাদার তারতম্য জানার পূর্বে তিনি নিষেধ করেছেন।

২. বিনয়ী ও নম্রতার খাতিরে তিনি নিষেধ করেছেন।

৩. তর্কের সময় অহংকার করে প্রাধান্য দিতে নিষেধ করেছেন।

৪. সাম্প্রদায়িকতার জন্য প্রাধান্য দিতে নিষেধ করেছেন।

৫. তার নিষেধ করার অর্থ মর্যাদার বিষয়টি তোমাদের উপর ন্যস্ত নয়, আল্লাহর উপর ন্যস্ত। তোমাদের দায়িত্ব শুধু আনুগত্য করা।

নবী ও রাসূল উভয় বলা উত্তম:

লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ خير نبي أرسلا বলে নবী ও রাসূল উভয় বিশেষণ উল্লেখ করেছেন, যদিও শুধু রাসূল দ্বারা নবী বুঝা যেত, কারণ প্রত্যেক রাসূল নবী, তবে তা হত প্রাসঙ্গিক। তিনি প্রাসঙ্গিকতা ত্যাগ করে নবী ও রাসূল দু’টি বিশেষণ স্পষ্ট বলেছেন। এভাবে বলাই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা। বুখারি ও মুসলিম[2] বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবি বারা ইব্‌ন আযেবকে বলেন: “যখন তুমি বিছানায় আস সালাতের ন্যায় অজু কর। অতঃপর ডান পার্শ্বে শয়ন কর এবং বল:

«اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ، اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ»

যদি এ রাতে মারা যাও, তবে স্বভাবের উপর মারা যাবে। তুমি এ বাক্যগুলোকে তোমার সর্বশেষ বাক্য বানাও”। তিনি বলেন: আমি দো‘আটি পড়ে শুনাই: اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ শেষে বলি: وَبِرَسُولِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ তিনি বললেন: না, وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ বল, [যেভাবে আমি তোমাকে বলেছি]। ‘বারা’ ইব্‌ন আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু وَبِرَسُولِكَ বলতে চাইলেন, কিন্তু তিনি وَبِنَبِيِّكَ বলতে বললেন, অথচ রাসূল শব্দে প্রাসঙ্গিকভাবে নবীর উল্লেখ ছিল।

দ্বিতীয়ত লেখক নবী ও রাসূল বলে উভয়ের মাঝে পার্থক্য নির্দেশ করেছেন। কারও কারও মতে, নতুন শরীয়ত নিয়ে আগমনকারীকে রাসূল বলা হয়, আর পূর্বের রাসূলের শরীয়ত প্রচারকারীকে বলা হয় নবী। প্রত্যেক রাসূল নবী, কিন্তু প্রত্যেক নবী রাসূল নয়।

[1] বুখারি: (৬৪৩৩), ও মুসলিম: (৪৩৮৫)

[2] বুখারি: (৬৩১১), মুসলিম: (২৭১২)

 আমাদের সামনে বিদ্যমান ‘মানযুমায়’[1] বিসমিল্লাহ নেই। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মুহাম্মদ আশ-শামরানি সংকলিত

الجامع للمتون العلمية

গ্রন্থেও[2] বিসমিল্লাহ নেই। মানযূমার প্রথম লাইন থেকে অনুমেয় লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ শুরুতে বিসমিল্লাহ লিখেননি, তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ দ্বারা ‘বিসমিল্লাহ’ লিখার অজিফা আঞ্জাম দিয়েছেন।

[1] ‘দারুস সালাম’ কায়রো, মিসর থেকে প্রকাশিত।

[2] ‘মাদারুল ওয়াতন’ রিয়াদ থেকে প্রকাশিত।
বিসমিল্লাহর প্রতি গুরুত্বারোপকরী হাদিসগুলো দুর্বল

প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলার প্রতি গুরুত্ব প্রদানকারী যেসব হাদিস নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়, তার সবক’টি দুর্বল। সেগুলো ত্যাগ করে কুরআনুল কারিম এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুক্তি ও চিঠি-পত্রের আদর্শকে বিসমিল্লাহ বলার স্বপক্ষে দলিল হিসেবে গ্রহণ করা উত্তম[1]।

[1] তবে বিশেষ বিশেষ কাজের আগে বিসমিল্লাহ বলার ব্যাপারে সহীহ হাদীস রয়েছে। যেমন, খাওয়ার আগে, অজুর আগে, কাপড় ছাড়ার আগে, মসজিদে ঢোকার আগে, স্ত্রী সহবাসের আগে ইত্যাদিতে বিশেষভাবে বিসমিল্লাহ বলার ব্যাপারে সহীহ হাদীস রয়েছে। [সম্পাদক]

আমাদের সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআনুল কারিমের তিলাওয়াত ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে কতিপয় হাম্‌দ ও না‘ত আবৃতি করা হয়। আলেম সমাজেও যার রেওয়াজ রয়েছে, কিন্তু সুন্নায় তার কোনো প্রমাণ নেই। তাই এ নীতিকে বাধ্যতামূলক মনে করা পরিহার করা উত্তম। প্রত্যেকের উচিত আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠ করে স্বীয় খুৎবা আরম্ভ করা। যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবিগণ খুৎবা প্রদান করতেন।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে