إسْنادُه ولمْ يَشُذَّ أو يُعَلْ
أَوَّلُها الصَّحِيحُ وَهْوَ ما اتَّصَلْ

مُعْتَمَدٌ في ضَبْطِهِ ونَقْلِهِ
يَرْوِيهِ عَدْلٌ ضابِطٌ عَنْ مِثْلِهِ

“তার প্রথম প্রকার ‘সহি’, আর তা হচ্ছে যার সনদ মুত্তাসিল এবং যা ‘শায’ বা ‘মুয়াল’ নয়। যে হাদিস আদিল ও দাবেত রাবি তার ন্যায় রাবি থেকে বর্ণনা করে, যিনি স্বীয় দ্বাবত ও বর্ণনায় গ্রহণযোগ্য”। লেখকের বর্ণনাক্রম অনুসারে হাদিসের প্রথম প্রকার সহি। এ প্রকারের সম্পর্ক সনদ ও মতন উভয়ের সাথে।

লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ সর্বপ্রথম ‘সহি’ উল্লেখ করেছেন। কারণ ‘সহি’ সর্বোত্তম প্রকার। দ্বিতীয়ত হাদিস শাস্ত্র পঠন ও পাঠন দ্বারা উদ্দেশ্য সহি হাদিস জানা ও তার উপর আমল করা। সহি দু’প্রকার: ১. সহি লি-যাতিহি, অর্থাৎ নিজ সত্তাগুণে সহি, ২. সহি লি-গায়রিহি, অর্থাৎ অপর হাদিস থেকে শক্তি অর্জন করে সহি। দ্বিতীয় প্রকার সহি মূলত হাসান, তবে অপর হাদিসের কারণে সহির মানে উন্নীত হয়েছে। লেখক ‘সহি লি-যাতিহি’র সংজ্ঞা পেশ করেছেন।

أوَّلُها শব্দের সর্বনাম দ্বারা উদ্দেশ্য উসুলে হাদিসের প্রথম প্রকার।

صحيح এর আভিধানিক অর্থ সুস্থ। সাধারণত মানুষের শারীরিক সুস্থতার জন্য ‘সহি’ ব্যবহৃত হয়, যেমন হাদিসে এসেছে: " وَأَنْتَ صَحِيحٌ " ‘তুমি সুস্থাবস্থায়’[1] এ থেকে সনদ ও মতন দোষমুক্ত হলে হাদিসকে সহি বলা হয়।

‘সহি’-র পারিভাষিক সংজ্ঞা প্রসঙ্গে লেখক বলেন: “যে হাদিসের সনদ মুত্তাসিল, যা শায ও মু‘আল্‌ নয় এবং যার রাবি আদিল ও দাবেত, তার ন্যায় আদিল ও দাবেত রাবি থেকে বর্ণনা করে, যার দ্বাবত ও আদালত গ্রহণযোগ্য”।[2]

লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ ‘সহি’-র পাঁচটি শর্ত উল্লেখ করেছেন:
১. সনদ মুত্তাসিল হওয়া।
২. শায না হওয়া।
৩. মু‘আল্‌ না হওয়া।
৪. রাবির আদিল হওয়া।
৫. রাবির দ্বাবিত হওয়া।
প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম তিনটি শর্ত সনদের সাথে সম্পৃক্ত, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শর্ত দু’টি সনদ ও মতন উভয়ের সাথে সম্পৃক্ত।লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ সহি হাদিসের শর্ত বর্ণনার ক্ষেত্রে পরম্পরা রক্ষা করেননি। আমরা পরম্পরা রক্ষা করে সনদের সাথে সম্পৃক্ত তিনটি শর্ত প্রথম বর্ণনা করব, অতঃপর শায ও মু‘আল্‌ না হওয়া দু’টি শর্ত স্ব-স্ব স্থানে বর্ণনা করব।[3] ইনশাআল্লাহ।

[1] “জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল, কোন সদকা মহান? তিনি বললেন: «أَنْ تَصَدَّقَ وَأَنْتَ صَحِيحٌ شَحِيحٌ ...» ‘তোমার সদকা করা যে, তুমি সুস্থাবস্থায় ও সম্পদ আকাঙ্খী ...। বুখারি: (১৪১৯), মুসলিম: (১০৩৪)

[2] সনদ, মুত্তাসিল, সায, মুয়াল, রাবি, আদেল বা আদালত ও দাবত বা দাবেত ইত্যাগি শব্দগুলো আরবি পরিভাষার বাংলা উচ্চারণ। শায ও মু‘আল্‌ ব্যতীত সবক’টি পরিভাষার ব্যাখ্যা ‘সহি’র অধীনে সামনে আসছে। শায-এর জন্য ২১-নং পঙক্তি এবং মু‘আলের জন্য ২৪-নং পঙক্তির ব্যাখ্যা দেখুন।

[3] শায দেখুন ২১-পঙক্তিতে। মু‘আল্‌ দেখুন ২৬-পঙক্তিতে।