“আমি আরম্ভ করছি আল্লাহর প্রশংসা ও সর্বোত্তম নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ দ্বারা, যাকে [রাসূল করে] প্রেরণ করা হয়েছে”।
লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ ‘মানযূমার’ শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা পাঠ করেছেন, কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারিম আরম্ভ করেছেন তার প্রশংসার মাধ্যমে। ইরশাদ হচ্ছে:
﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ﴾ [الفاتحة: ٢]
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব”।[1] অপর আয়াতে তিনি আসমান-যমিন ও আলো-আধার সৃষ্টি সম্পর্কে সংবাদ দেওয়ার পূর্বে নিজের প্রশংসা করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:
﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَجَعَلَ ٱلظُّلُمَٰتِ وَٱلنُّورَۖ ثُمَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بِرَبِّهِمۡ يَعۡدِلُونَ ١ ﴾ [الانعام: ١]
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও জমিন এবং সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো। তারপর কাফিররা তাদের রবের সমতুল্য স্থির করে”।[2]
দ্বিতীয়ত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা পাঠ করতেন। ইমাম বুখারি ও মুসলিম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সূত্রে বর্ণনা করেন:
«ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْعَشِيِّ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: مَا بَالُ أُنَاسٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ، مَنِ اشْتَرَطَ شَرْطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهُوَ بَاطِلٌ»
“অতঃপর সন্ধ্যায় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করলেন, যেরূপ তিনি হকদার। অতঃপর বললেন: লোকদের কি হল, তারা এমন কতক শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই। যে এমন শর্তারোপ করল, যা আল্লাহর কিতাবে নেই তা বাতিল”।[3]
ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহ্ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«كُلُّ خُطْبَةٍ لَيْسَ فِيهَا تَشَهُّدٌ فَهِيَ كَالْيَدِ الْجَذْمَاءِ»
“যেসব খুৎবায় তাশাহহুদ নেই, তা কর্তিত হাতের ন্যায়”।[4] আল্লাহর হাম্দ তথা প্রশংসা ও গুণকীর্তন একপ্রকার তাশহহুদ। অতএব লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ হামদ দ্বারা ‘মানযূমাহ’ আরম্ভ করে কুরআনুল কারিম ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নার যথাযথ অনুসরণ করেছেন।
حمد অর্থ মহব্বত ও সম্মানসহ পরিপূর্ণ গুণাবলি ও বিশেষণের কারণে প্রশংসিত সত্তার প্রশংসা করা। যদি মহব্বত ও সম্মান ব্যতীত শুধু ভয় ও শঙ্কা থেকে প্রশংসা করা হয়, তাহলে مدح বলা হয়, হাম্দ বলা হয় না। একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা পরিপূর্ণ গুণাবলি ও বিশেষণের মালিক, তাই পরিপূর্ণ প্রশংসা তিনি ব্যতীত কারো জন্য বৈধ নয়। তিনি সুন্দর নামসমূহ, পরিপূর্ণ গুণাবলি ও যাবতীয় কর্মের মালিক; তিনি একক, সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী ও বে-হিসাব নিয়ামত প্রদানকারী। অতএব তিনি ব্যতীত কেউ সর্বদা ও সকল প্রশংসার যোগ্য নয়।
লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ এখানে প্রশংসিত সত্তার নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে স্পষ্ট যে, প্রশংসিত সত্তা মহান আল্লাহ তা‘আলা। কারণ তিনি মুসলিম, তিনি কেবল আল্লাহ তা‘আলার হামদ তথা-ভালোবাসা ও সম্মান মিশ্রিত প্রশংসা করবেন এটাই স্বাভাবিক।
দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠ করেছেন। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে বলেছেন, যে দরূদ ব্যতীত দো‘আ আরম্ভ করেছিল: "عَجِلَ هَذَا" “সে দ্রুত করে ফেলল”। অতঃপর তিনি তাকে বা অপর কাউকে বলেন:
«إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ، ثُمَّ لَيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ لَيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ»
“যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে, সে যেন আল্লাহর প্রশংসা ও তার গুণকীর্তন দ্বারা আরম্ভ করে। অতঃপর সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত আদায় করে। অতঃপর যা ইচ্ছা তাই যেন দো‘আ করে”।[5] দ্বিতীয়ত আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন:
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا ٥٦ ﴾ [الاحزاب : ٥٦]
“নিশ্চয় আল্লাহ এবং তার মালায়েকাগণ নবীর উপর দরূদ পাঠ করেন। হে মুমিনগণ তোমরাও নবীর উপর দরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও”।[6]
লেখক রাহিমাহুল্লাহ দ্বিতীয় পর্যায়ে দরূপ পাঠ করে কুরআনুল কারিম ও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার উপর আমল করেছেন।
صلاة শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহর ‘সালাত’ পাঠ করার অর্থ রহমত প্রেরণ করা। মানুষ ও মালায়েকার সালাত পাঠ করার অর্থ তার জন্য মাগফেরাত তলব করা। অধিকাংশ আলেমের নিকট এ অর্থ প্রসিদ্ধ, কিন্তু বিজ্ঞ আলেমদের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহর সালাত পাঠ করার অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে তার প্রশংসা করা। ইমাম বুখারি, আবুল আলিয়া থেকে এ অর্থ নিয়েছেন। অতএব যখন আপনি বললেন:صلى الله على محمد তার অর্থ: اللهم اثن على محمد في الملأ الأعلى ثناءً حسناً. “হে আল্লাহ ঊর্ধ্ব জগতে আপনি মুহাম্মদের উপর সুন্দর প্রশংসা করুন”। এ অর্থের প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
﴿أُوْلَٰٓئِكَ عَلَيۡهِمۡ صَلَوَٰتٞ مِّن رَّبِّهِمۡ وَرَحۡمَةٞۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُهۡتَدُونَ ١٥٧﴾ [البقرة: ١٥٧]
“তাদের উপর রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে অনেক প্রশংসা ও রহমত এবং তারাই হিদায়েত প্রাপ্ত”।[7] এ আয়াতে সালাত অর্থ রহমত মানলে অর্থ হয়: ‘তাদের উপর তাদের রবের পক্ষ থেকে অনেক রহমত ও রহমত’। এ অর্থ সুন্দর ও যথাযথ নয়, কারণ অলঙ্কার শাস্ত্রের নিয়মানুযায়ী বাক্যে ব্যবহৃত দু’টি শব্দ থেকে একার্থ নেয়ার চেয়ে ভিন্নার্থ নেয়া অধিক শ্রেয়। কারণ صلوات শব্দের অর্থ রহমত হলে একার্থ বিশিষ্ট দু’টি শব্দ একটির সাথে অপরটি যোগ বা আত্ফ করা হয়, যা বিনা প্রয়োজনে শুদ্ধ নয়, তাই ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ্ পেশ করা অর্থ অধিক বিশুদ্ধ। এভাবে তাকিদের পরিবর্তে তাসিস তথা নতুন অর্থ হাসিল হয়। অতএব আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত পাঠ করি, তার অর্থ আমরা তার জন্য আল্লাহর প্রশংসা তলব করি। যখন স্বয়ং আল্লাহ তার উপর সালাত পাঠ করেন, তার অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে মালায়েকার মাঝে তিনি তার প্রশংসা করেন।[8]
শায়খ আব্দুল হামিদ ইব্ন বাদিস রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন: “পূর্ববর্তী ও পরবর্তী অনেক আলেম সালাতের বিভিন্ন অর্থ করেছেন: রহমত, মাগফেরাত, মালায়েকার মাঝে প্রশংসা করা, আল্লাহর ইহসান, অনুগ্রহ ও তার সম্মান ইত্যাদি। মূলত এসব ব্যাখ্যায় কোন বৈপরীত্য নেই, কারণ মাগফেরাত একপ্রকার রহমত, প্রশংসা একপ্রকার রহমত, ইহসান ও অনুগ্রহ একপ্রকার রহমত, সম্মান দেওয়া একপ্রকার রহমত। তবে সালাতের প্রকৃত অর্থ রহমত, অন্যান্য অর্থ আনুষঙ্গিক”।[9]
محمد নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম, তিনি বলেছেন:
«أَنَا مُحَمَّدٌ، وَأَنَا أَحْمَدُ، وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يُمْحَى بِيَ الْكُفْرُ، وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى عَقِبِي، وَأَنَا الْعَاقِبُ، وَالْعَاقِبُ الَّذِي لَيْسَ بَعْدَهُ نَبِيٌّ»
“আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ; আমি ধ্বংসকারী, যার দ্বারা কুফর ধ্বংস করা হয়; আমি হাশের, মানুষদেরকে আমার পশ্চাতে জমা করা হবে; এবং আমি আকেব, যার পরবর্তী কোনো নবী নেই সে আকেব”।[10]
কুরআনুল কারিমে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’টি নাম রয়েছে: আহমদ ও মুহাম্মদ। ঈসা ‘আলাইহিস সালাম স্বীয় কওম বনি ইসরাইলের নিকট আহমদ নামে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিচয় পেশ করেছেন। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এ নামের অহি তথা প্রত্যাদেশ পেয়েছেন, কিংবা বনি ইসরাইলের মাঝে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য এ নাম নির্বাচন করেছেন। কারণ আহমদ অর্থ ‘সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী’, যে সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ এ কথা বনি ইসরাইল জানত। অতএব আহমদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ।
محمد কর্মবাচক বিশেষ্য, অর্থ প্রশংসিত সত্ত্বা। أحمد অগ্রাধিকার সূচক বিশেষণ, অর্থ সবচেয়ে বেশী প্রশংসাকারী। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে আল্লাহর বেশী প্রশংসাকারী, অতএব তিনি বেশী প্রশংসার হকদার। তাই তার নাম মুহাম্মদ ও আহমদ যথাযথ হয়েছে।
ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন: “ইব্ন ফারেস প্রমুখগণ বলেছেন: আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারকে ইলহাম করেছেন, যার ফলে তারা মুহাম্মদ ও আহমদ নামের তৌফিক লাভ করেছেন”।[11]
خير نبي أرسلا লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ নবুওয়ত ও রিসালাত উভয় জমা করেছেন। نبي কর্তাবাচক বিশেষ্য, فعيلٌ এর ওজনে نبأ ধাতু থেকে উৎপত্তি, অর্থ সংবাদদাতা, অথবাنبا ينبوا ক্রিয়ার ধাতু نبوة থেকে উৎপত্তি, অর্থ উঁচু হওয়া। প্রথম অর্থ হিসেবে তিনি আল্লাহর সংবাদবাহক। দ্বিতীয় অর্থ হিসেবে তিনি উঁচু মর্যাদার অধিকারী। তার উঁচু মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
﴿تِلۡكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۘ مِّنۡهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعۡضَهُمۡ دَرَجَٰتٖۚ ٢٥٣﴾ [البقرة: ٢٥٣]
“ঐ রাসূলগণ, আমি তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, তাদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কারো কারো মর্যাদা উঁচু করেছেন”।[12] অন্যত্র তিনি ইরশাদ করেন:
﴿ٱنظُرۡ كَيۡفَ فَضَّلۡنَا بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖۚ وَلَلۡأٓخِرَةُ أَكۡبَرُ دَرَجَٰتٖ وَأَكۡبَرُ تَفۡضِيلٗا ٢١﴾ [الاسراء: ٢١]
“ভেবে দেখ, আমি তাদের কতককে কতকের উপর কিভাবে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। আর আখিরাত নিশ্চয় মর্যাদায় মহান এবং শ্রেষ্ঠত্বে বৃহত্তর”।[13] অন্যত্র তিনি ইরশাদ করেন:
﴿ وَلَقَدۡ فَضَّلۡنَا بَعۡضَ ٱلنَّبِيِّۧنَ ٥٥ ﴾ [الاسراء: ٥٥]
“আর আমি তো কতক নবীকে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি”।[14] তার আরেকটি বিশেষ মর্যাদা হচ্ছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে ‘মাকামে মাহমুদ’ তথা প্রশংসিত স্থান দান করবেন। তিনি বলেন:
﴿وَمِنَ ٱلَّيۡلِ فَتَهَجَّدۡ بِهِۦ نَافِلَةٗ لَّكَ عَسَىٰٓ أَن يَبۡعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامٗا مَّحۡمُودٗا ٧٩﴾ [الاسراء: ٧٩]
“আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় কর তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। আশা করা যায়, তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন”।[15] নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
«أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
“আমি কিয়ামতের দিন মানুষের সরদার”।[16] অতএব তিনি যেরূপ সংবাদদাতা, সেরূপ উঁচু মর্যাদার অধিকারী। তাই উভয় অর্থ হিসেবে ‘নবী’ নাম তার জন্য যথাযথ হয়েছে।
[2] সূরা আনআম: (১)
[3] বুখারি: (২০২০), মুসলিম: (২৭৭০)
[4] তিরমিযি: (১০২০), তিনি বলেন: এ হাদিসটি হাসান, সহি ও গরিব।
[5] তিরমিযি: (৩৪২৪), আবু দাউদ: (১২৬৪), তিরমিযি রহ. বলেন: এ হাদিসটি হাসান ও সহি।
[6] সূরা আহযাব: (৫৬)
[7] সূরা বাকারা: (১৫৭)
[8] মানযুমাহ বায়কুনিয়ার ব্যাখ্যাকার খালেদ ইব্ন আব্দুল্লাহ আল-মুসলিহ বলেন: “সালাত অর্থ কেউ বলেন: রহমত, কেউ বলেন: উর্ধ্বজগতের মজলিসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশংসা করা। কেউ বলেন: তার জন্য অফূরন্ত কল্যাণ তলব করা। তৃতীয় অর্থ অধিক সুন্দর। কারণ, আবুল আলিয়ার বাণী ব্যতীত সালাত অর্থ ‘উর্ধ্ব জগতে প্রশংসা’র স্বপক্ষে কোনো দলিল নেই। এ জাতীয় অর্থ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করা প্রয়োজন, তিনি সাহাবি নন বিধায় তার বাণীকে আমরা মারফূর হুকুমে মানতে পারি না”। শারহুল মানযূমাহ আল-বায়কুনিয়াহ: (পৃ.৬)
[9] মাজালেসুত তাজকির মিন হাদিসিল বাশিরিন নাজির: (পৃ.২২০-২২১)
[10] বুখারি: (৪৫৪২) ও মুসলিম: (৪৩২৯)
[11] ‘শারহুল মানযুমাতুল বাইকুনিয়াহ’: (১২) লি শায়খ ইয়াহইয়া ইব্ন আলি আল-হাজুরি।
[12] সূরা বাকারা: (২৫৩)
[13] সূরা ইসরা: (২১)
[14] সূরা ইসরা: (৫৫)
[15] সূরা ইসরা: (৭৯)
[16] বুখারি: (৪৩৬৮), মুসলিম: (২৯২)