যুলকা’দা মাসের সাধারণ দুটি মর্যাদা রয়েছে: (ক) তা ৪টি হারাম মাসের একটি এবং (খ) তা হজ্জের মাসগুলির দ্বিতীয় মাস। এ ছাড়া এ মাসের বিশেষ কোনো ফযীলত হাদীসে বর্ণিত হয় নি। তবে জালিয়াতগণ এ বিষয়ে কিছু মিথ্যা ও বানোয়াট কথা প্রচার করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
‘‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফরমান, তোমরা যিলক্বদ মাসকে সম্মান করিবে, যেহেতু ইহা মর্যাদাবান মাসসমূহের মধ্যে প্রথম মাস। ... যেই ব্যক্তি যিলক্বদ মাসের ভিতরে একদিন রোজা রাখিবে, আল্লাহ তা‘আলা উহার প্রতি ঘন্টার পরিবর্তে একটি হজ্জের সাওয়াব তাহাকে দান করিবেন।... যেই ব্যক্তি এই মাসের যে কোন জুমুয়ার দিবসে দুই দুই রাকয়া'তের নিয়তে চার রাকয়া’ত নামায আদায় করিবে, যাহার প্রতি রাকয়া'তে সূরা ফাতিহার পরে ১০ বার করিয়া সূরা ইখলাছ পাঠ করিবে, আল্লাহ তা‘আলা তাহাকে একটি হজ্জ ও একটি ওমরার সাওয়াব দান করিবেন। ... যেই ব্যক্তি যিলক্বদ মাসের প্রত্যেক রজনীতে দুই রাকয়া’ত করিয়া নামায আদায় করিবে এবং ইহার প্রতি রাকয়াতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাছ তিনবার করিয়া পাঠ করিবে, আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তির আমলনামায় একজন হাজী ও একজন শহীদের পূণ্যের তুল্য সাওয়াব দান করিবেন এবং রোজ কেয়ামতে সেই ব্যক্তি আল্লাহর আরশের ছায়ায় স্থান লাভ করিবে।...’’ ‘‘... এই মাসের রোজাদারের প্রত্যেক নিঃশ্বাসে একটি গোলাম আজাদ করবার সাওয়াব প্রদান করেন। ... এই মাসকে গনীমত মনে করবে। যেহেতু যে ব্যক্তি এই মাসে একদিন এবাদত করে উহা হাজার বৎসর হতেও উৎকৃষ্ঠ। ... যিলক্বদ মাসের সোমবারের রোজা হাজার বৎসরের এবাদত হতেও উৎকৃষ্ঠ। ... এই চাঁদে যে একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ পাক তার জন্য প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে এক একটি মকবুল হজ্জের সাওয়াব দান করবেন। ... ইত্যাদি ইত্যাদি....।’’[1]
এগুলো সবই দুঃসাহসিক নির্লজ্জ জালিয়াতগণের কথা। তারা এগুলো রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে বানিয়ে প্রচার করেছে এবং জাহান্নামে নিজেদের আবাসস্থল তৈরি করেছে। দুঃখজনক হলো, অনেক আলিম বা লেখক যাচাই না করেই এ সমস্ত আজগুবি মিথ্যা কথাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাদীস বলে উল্লেখ করছেন। অন্তত কোন্ গ্রন্থে হাদীসটি সংকলিত তা যাচাই করলেও এগুলোর জালিয়াতি ধরা পড়ে যেত। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাযত করুন।