ফরয বা নির্দিষ্ট নফল (যেমনঃ অভ্যাসগত শুক্লপক্ষের দিন, আরাফা বা আশূরার) রোযা ছাড়া কেবল শনিবার সাধারণ অনির্দিষ্ট নফল রোযা রাখা বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তোমরা ফরয ছাড়া শনিবার রোযা রেখো না। তোমাদের কেউ যদি ঐ দিন আঙ্গুরের লতা বা গাছের ডাল ছাড়া অন্য কোন খাবার নাও পায়, তাহলে সে যেন তাই চিবিয়ে খায়।’’[1]

ত্বীবী বলেন, ‘ফরয’ বলতে রমাযানের ফরয রোযা, নযর মানা রোযা, কাযা রোযা, কাফ্ফারার রোযা এবং একই অর্থে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ রোযা, যেমনঃ আরাফা, আশূরা এবং অভ্যাসগত (শুক্লপক্ষের দিনের) রোযা শামিল।[2] অর্থাৎ ঐসব রোযা অন্যান্য দলীলের ভিত্তিতে শনিবারে রাখতে নিষেধ নয়। যেহেতু তারীখের সাথে নির্দিষ্ট সুন্নত রোযাসমূহ যে কোন দিনেই রাখা যাবে।

যেমন তার আগে বা পরে একদিন রোযা রাখলে শনিবার রাখা বৈধ। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) জুয়াইরিয়াকে বললেন, ‘‘তুমি কি আগামী দিন (অর্থাৎ, শনিবার) রোযা রাখবে?’’ আর তার মানেই হল, শুক্র ও শনিবার রোযা রাখলে মকরূহ হবে না।[3]

এই দিনে রোযা রাখা নিষেধ হওয়ার পশ্চাতে যুক্তি ও হিকমত এই যে, ইয়াহুদীরা এই দিনের তা’যীম করত, এই দিন উপবাস করত এবং কাজ-কর্ম ছেড়ে ছুটি পালন করত। সুতরাং সেদিন রোযা রাখলে তাদের সাদৃশ্য প্রকাশ পায়। পক্ষান্তরে আগে বা পরে একদিন মিলিয়ে অথবা নযর বা কাযা রোযা রাখলে সেদিন রোযা রাখা মকরূহ হবে না।[4]

কিন্তু উম্মে সালামাহ (রাঃ) বলেন যে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) শনিবার রোযা রাখতেন।’[5] বাহ্যতঃ এই হাদীসটি পূর্ববর্ণিত আমলের বিরোধী। তবুও সামঞ্জস্য সাধনের জন্য বলা যায় যে, যখন অবৈধকারী ও বৈধকারী দুটি হাদীস পরস্পর-বিরোধী হয়, তখন অবৈধকারী হাদীসকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। তদনুরূপ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর কথা ও আমল পরস্পর-বিরোধী হলে তাঁর কথাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অতএব এই নীতির ভিত্তিতে কেবল শনিবার রোযা রাখা মকরূহ হবে।[6]

অথবা উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাঁকে কোন অভ্যাসগত রোযা রাখতে দেখেছেন।

[1] (আহমাদ, মুসনাদ ৪/১৮৯, ৬/৩৬৮, সহীহ আবূ দাঊদ ২১১৬, তিরমিযী ৫৯৪, সহীহ ইবনে মাজাহ, আলবানী ১৪০৩, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ২১৬৪, দারেমী, সুনান ১৬৯৮নং)

[2] (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩/৩৭২)

[3] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৬৬)

[4] (ফাইযুর রাহীমির রাহমান, ফী আহকামি অমাওয়াইযি রামাযান ৭৯পৃঃ)

[5] (আহমাদ, মুসনাদ ৬/৩২৩, ৩২৪, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ২১৬৭, ইবনে হিববান, সহীহ ৯৪১নং, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪৩৬, বাইহাকী ৪/৩১৩)

[6] (তামামুল মিন্নাহ, আল্লামা আলবানী ৪০৭পৃঃ)