যে ব্যক্তি নফল রোযা রাখে, তার জন্য তা ভাঙ্গা বা দিনের যে কোন অংশে তা ছেড়ে দেওয়া বৈধ। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘নফল রোযাদার নিজের আমীর। ইচ্ছা হলে সে রোযা থাকতে পারে, আবার ইচ্ছা না হলে সে তা ভাঙ্গতেও পারে।’’[1]

মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমাদের কাছে (খাবার) কিছু আছে কি?’’ বললেন, ‘জী না।’ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন, ‘‘তাহলে আজকে আমি রোযা থাকলাম।’’ অতঃপর আর একদিন আমাদেরকে হাইস (খেজুর, পনীর ও ঘি একত্রিত করে প্রস্ত্তত খাদ্য বিশেষ) উপহার দেওয়া হয়েছিল। আমি তার থেকে কিছু অংশ তাঁর জন্য লুকিয়ে রেখেছিলাম। আর তিনি হাইস ভালোবাসতেন। আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আজ আমাদেরকে হাইস উপহার দেওয়া হয়েছে। আর আমি আপনার জন্য কিছুটা লুকিয়ে রেখেছি।’ তিনি বললেন, ‘‘আমার কাছে নিয়ে এস। আমি সকাল থেকে রোযা অবস্থায় ছিলাম।’’ এ কথা বলে তিনি তা খেলেন এবং বললেন, ‘‘নফল রোযাদারের উদাহরণ ঐ লোকের মত যে নিজ মাল থেকে (নফল) সাদকাহ বের করে। অতঃপর সে চাইলে তা দান করে, না চাইলে রেখে নেয়।’’[2]

রোযা ভেঙ্গে ফেললে তা কাযা করা ওয়াজেব নয়। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, একদা আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য খাবার তৈরী করলাম। তিনি তাঁর অন্যান্য সহচর সহ আমার বাড়িতে এলেন। অতঃপর যখন খাবার সামনে রাখা হল, তখন দলের মধ্যে একজন বলল, ‘আমার রোযা আছে।’ তা শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তোমাদের ভাই তোমাদেরকে দাওয়াত দিয়ে খরচ (বা কষ্ট) করেছে।’’ অতঃপর তিনি তার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘‘রোযা ভেঙ্গে দাও। আর চাইলে তার বিনিময়ে অন্য একদিন রোযা রাখ।’’[3]

[1] (আহমাদ, মুসনাদ ৬/৩৪১, তিরমিযী, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪৩৯, বাইহাকী ৪/২৭৬ প্রমুখ, সহীহুল জামে’ ৩৮৫৪নং)

[2] (আহমাদ, মুসনাদ ৬/৪৯, ২০৭, মুসলিম ১১৫৪, আবূ দাঊদ ২৪৫৫, নাসাঈ ২৩২১, ইবনে মাজাহ ১৭০১, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ২১৪১নং, দারাকুত্বনী, সুনান, বাইহাকী ৪/২৭৫)

[3] (বাইহাকী ৪/২৭৯, ত্বাবারানী, মু’জাম, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১৯৫২নং)