তারাবীহর নামাযে কুরআন খতম করার ব্যাপারে শায়খ ইবনে বায (রঃ) বলেন, এ ব্যাপারে প্রশস্ততা আছে। তবে আমার এমন কোন দলীল জানা নেই, যাকে কেন্দ্র করে বলা যায় যে, তারাবীহর নামাযে কুরআন খতম উত্তম। অবশ্য কিছু উলামা বলেন যে, ইমামের জন্য পূর্ণ কুরআন শুনানো উত্তম; যাতে করে জামাআতের জন্য (অন্ততপক্ষে বছরে একবার) পূর্ণ কুরআন শোনার সৌভাগ্য লাভ হয়। কিন্তু এ যুক্তি স্পষ্ট দলীল নয়।
সুতরাং যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল, ইমাম তাঁর ক্বিরাআতে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করবেন, ধীর ও শান্তভাবে কুরআন তেলাঅত করবেন খতম করতে না পারলেও; বরং অর্ধেক বা দুই-তৃতীয়াংশ পড়তে না পারলেও মুক্তাদীরা যাতে উপকৃত হয় সেই চেষ্টাই করবেন। যেহেতু কুরআন খতম করা কোন জরুরী কাজ নয়; জরুরী হল লোকদেরকে তাদের নামাযের ভিতরে ক্বিরাআতের মাধ্যমে বিনয়-নম্রতা সৃষ্টি করে উপকৃত করা। যাতে তারা সেই নামায ও ক্বিরাআতে লাভবান ও তৃপ্ত হতে পারে। অবশ্য এর সাথে যদি কুরআন খতম করা সম্ভব হয়, তাহলে আল-হামদু লিল্লাহ। সম্ভব না হলে তিনি যা পড়েছেন তাই যথেষ্ট; যদিও কুরআনের কিছু অংশ বাকী থেকে যায়। কারণ, কুরআন খতম করা অপেক্ষা ইমামের মুক্তাদীগণের প্রতি সবিশেষ যত্ন নেওয়া, তাদেরকে নামাযের ভিতরে বিনয়াবনত হতে সর্বতঃ প্রয়াস রাখা এবং তাদেরকে নামাযে পরিতৃপ্ত করে উপকৃত করা বেশী গুরুত্ব রাখে। এতদ্সত্ত্বেও যদি কোন প্রকার কষ্ট-অসুবিধা ছাড়াই কুরআন খতম করেন এবং পূর্ণ কুরআন তাদেরকে শোনাতে সক্ষম হন, তাহলে তা অবশ্যই উত্তম।[1]
বলা বাহুল্য, ইমামের জন্য জরুরী হল, মুক্তাদীদের অবস্থার খেয়াল রাখা। কেননা, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যখন তোমাদের কেউ লোকেদের নামায পড়ায়, তখন সে যেন হাল্কা করে পড়ে। কেননা, তাদের মধ্যে রোগী, দুর্বল ও বৃদ্ধ লোক থাকে। অবশ্য যখন তোমাদের কেউ একা নামায পড়ে, তখন সে যত ইচ্ছা লম্বা করতে পারে।’’[2]
[2] (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী ৭০৩নং, মুসলিম ৪৬৭নং, তিরমিযী)