স্ত্রী-সঙ্গম অথবা স্বপ্নদোষ হওয়ার পরেও সময় অভাবে গোসল না করে নাপাক অবস্থাতেই রোযাদার রোযার নিয়ত করতে এবং সেহরী খেতে পারে। এমন কি সেহরীর সময় শেষ হয়ে গেলেও আযানের পর গোসল করতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোযার শুরুর কিছু অংশ নাপাকে অতিবাহিত হলেও রোযার কোন ক্ষতি হবে না। অবশ্য নামাযের জন্য গোসল জরুরী।
মা আয়েশা ও উম্মে সালামাহ (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর (কখনো কখনো) স্ত্রী-মিলন করে অপবিত্র অবস্থায় ফজর হয়ে যেত। তারপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা রাখতেন।’[1]
তাছাড়া মহান আল্লাহ ফজর উদয় হওয়ার সময় পর্যন্ত স্ত্রী-মিলনের অনুমতি দিয়েছেন এবং তার পর থেকে রোযা রাখার আদেশ দিয়েছেন। আর তার মানেই হল যে, রোযাদারের জন্য (ফজর উদয়ের পূর্বে) মিলনের পর (ফজর উদয়ের পরে) নাপাকীর গোসল করা বৈধ।[2]
তদনুরূপ নিফাস ও ঋতুমতী মহিলার রাত্রে খুন বন্ধ হলে (রোযার নিয়ত করে এবং সেহরী খেয়ে) ফজরের পর রোযায় থেকে পরে গোসল করে নামায পড়তে পারে। উপর্যুক্ত নাপাক পুরুষ ও মহিলার জন্য নাপাকীর গোসলকে সকাল বা দুপুরের সময় পর্যন্ত বিলম্বিত করা বৈধ নয়। বরং সূর্য উদয়ের পূর্বেই গোসল করে যথাসময়ে নামায আদায় করা তাদের জন্য ওয়াজেব। যেমন পুরুষের জন্য ওয়াজেব এমন সময়ের ভিতরে সত্বর গোসল করা, যাতে ফজরের নামায জামাআত সহকারে মসজিদে আদায় করতে সক্ষম হয়।[3]
জ্ঞাতব্য যে, রমাযানের দিনের বেলায় রোযাদারের স্বপ্নদোষ হয়ে গেলে তার রোযা বাতিল নয়। কেননা, তা তার এখতিয়ারকৃত নয়। অতএব তার জন্য জরুরী হল, নাপাকীর গোসল করা। অবশ্য ফজরের নামায পড়ার পর ঘুমাতে গিয়ে স্বপ্নদোষ হলে, সঙ্গে সঙ্গে গোসল না করে যদি যোহরের আগে পর্যন্ত বিলম্ব করে গোসল করে, তাহলে তাতে দোষ হবে না।[4] অবশ্য উত্তম হল, নাপাকে না থেকে সম্ভব হলে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করে বিভিন্নভাবে আল্লাহর যিক্র করা।
[2] (দ্রঃ মুহাল্লা ৬/২২০, ফাইযুর রাহীমির রাহমান, ফী আহকামি অমাওয়াইযি রামাযান ৬১পৃঃ)
[3] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪১১, ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ ৫১পৃঃ, রিসালাতানি মু’জাযাতানি ফিয যাকাতি অস্সিয়াম ২৩পৃঃ)
[4] (ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ ৫১ পৃঃ)