অতঃপর নাবী (ﷺ) আরোহী অবস্থায় যোহরের পূর্বে মক্কায় ফেরত আসলেন এবং তাওয়াফে ইফাযাহ (হজ্জের তাওয়াফ) করলেন। এটিই হচ্ছে তাওয়াফে যিয়ারত। এ ছাড়া তিনি আর কোন তাওয়াফ করেন নি। এর সাথে তিনি সাঈ করেন নি।[1] এটিই হচ্ছে সঠিক কথা। এতে এবং বিদায়ী তাওয়াফেও তিনি রমল করেন নি। তিনি শুধু তাওয়াফে কুদুমে রমল করেছেন।

অতঃপর তিনি যমযমের কাছে আসলেন। সেখানে লোকেরা পানি পান করছিল। তিনি বললেন- যদি এই আশঙ্কা না থাকত যে লোকেরা তোমাদেরকে পরাস্ত করে ফেলবে, তাহলে আমি নিজে নেমেও তোমাদের সাথে লোকদেরকে পানি পান করাতাম। লোকেরা তাঁকে পানির বালতি দিল। তিনি দাঁড়িয়ে তা থেকে পান করলেন। এই হাদীস দ্বারা কতক আলেম দলীল দিয়ে বলে থাকেন যে, বিনা প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে পান করা নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজন বশতঃ দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয আছে। এটিই অধিক সুস্পষ্ট ও সঠিক মত। সহীহ বুখারীতে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, বিদায় হজ্জের বছর উটের উপর আরোহন করে নাবী (ﷺ) কাবা ঘরের তাওয়াফ করেছেন। এ সময় লাঠি দিয়ে তিনি হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করতেন। ঐ হাদীছে এও রয়েছে যে, লোকেরা যাতে তাঁকে দেখতে পারে এবং মাসআলা জিজ্ঞেস করতে পারে সেই জন্যই তিনি আরোহন করে ছিলেন। কারণ লোকেরা তাঁকে ঘিরে রেখেছিল। এটি বিদায়ী তাওয়াফের ঘটনা ছিলনা। কারণ তিনি রাত্রে এ তাওয়াফ করেছেন। এটি তাওয়াফে কুদুমও ছিলনা। কারণ তাওয়াফে কুদুমে তিনি রমল করেছেন। আর এ কথা কেউ বলেন নি যে, উটের উপর আরোহন করে তিনি রমল করেছেন। অতঃপর তাওয়াফ শেষে তিনি মিনায় ফিরে গেলেন।

তিনি যোহরের সলাত কোথায় পড়েছেন? মক্কায়? না মিনায়? এ নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। আয়িশা (রাঃ) ও সেই দিন মাত্র একটি তাওয়াফ এবং মাত্র একটি সাঈ করেছেন। তাঁর হাজ্জ এবং উমরাহর জন্য একটি তাওয়াফ ও একটি সাঈ যথেষ্ট ছিল। সেই দিন সাফিয়াও তাওয়াফ করেছিলেন। তাওয়াফ শেষে তাঁর ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেল। এই তাওয়াফই তাঁর বিদায়ী তাওয়াফের জন্য যথেষ্ট ছিল। সুতরাং তারা আলাদাভাবে বিদায়ী তাওয়াফ করার সুযোগ পেলেন না। এর ফলে রসূল (ﷺ) এর পবিত্র সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল যে, কোন মহিলা যদি তাওয়াফে কুদুমের পূর্বে ঋতুবতী হয়ে যায়, তাহলে সে হজ্জে কিরান করবে। তার জন্য মাত্র একটি তাওয়াফ ও মাত্র একটি সাঈ যথেষ্ট। আর যদি তাওয়াফে ইফাযার পরে ঋতুবতী হয়ে যায়, তাহলে তার বিদায়ী তাওয়াফ করার প্রয়োজন নেই।

[1]. এ থেকেই দলীল নেয়া হয় যে, কেরান ও ইফরাদ হজ্জকারীর একটি সাঈ যথেষ্ট। চাই তাওয়াফে ইফাযার পূর্বে করা হউক বা পরে। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওয়াফে কুদুমের সাথে তা করেছিলেন এবং সেটাকেই যথেষ্ট মনে করেছিলেন।