সালামের পর তিনি তিন বার ইসেত্মগফার করতেন অর্থাৎ আস্তাগফিরুল্লাহ্ বলতেন। অতঃপর তিনি বলতেন-
اللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَام وَمِنْك السَّلَام تَبَارَكْت يَا ذَا الْجَلَال وَالْإِكْرَام
উচ্চারণ: (আল্লা-হুম্মা আনতা সালা-মু ওয়া মিনকাস সালা-মু তাবা-রাকতা ইয়া-যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম) ‘‘হে আল্লাহ্! তুমিই সালাম (শান্তিময়)। তোমার পক্ষ হতেই শান্তি আগমণ করে। তুমি সুমহান, সম্মানিত এবং মর্যাদাবান।’’[1]
এই দু’আটি পড়তে যতটুকু সময় লাগে তিনি কেবল ততটুকু সময়ই কিবলামুখী হয়ে বসতেন। অতঃপর বিলম্ব না করে তিনি মুক্তাদীদের দিকে ফিরে বসতেন। সালামের পর তিনি কখনও ডান দিক থেকে আবার কখনও বাম দিক থেকে ঘুরে বসতেন। অতঃপর তিনি মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন। মুখ ফিরানোর বেলায় মুসল্লিদের এক দিক বাদ দিয়ে অন্য দিককে প্রাধান্য দিতেন না। ফজরের সলাতের পর সূর্য উঠার পূর্ব পর্যন্ত তিনি জায়সলাতে বসে থাকতেন। তিনি প্রত্যেক ফরজ সলাতের পর এই দু’আটি পাঠ করতেনঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللّٰهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِىَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
‘‘এক মাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নেই। সকল রাজত্ব তাঁরই। সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করো, তা প্রতিহত করার কেউ নেই এবং তুমি যা রোধ কর, তা দান করারও কেউ নেই। আর কোন মর্যাদাবানের মর্যাদা ও সম্পদশালীর সম্পদ তোমার শাস্তি থেকে কাউকে রক্ষা করতে পারেনা’’।[2]
আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত গুনাহ হতে বিরত থাকা সম্ভব নয় এবং আল্লাহর তাওফীক ব্যতীত আনুগত্য করার ক্ষমতা লাভ করা যায়না। আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। আর আমরা তাঁরই ইবাদত করি। সকল নিয়ামাত তাঁরই, সকল অনুগ্রহ তাঁরই এবং তাঁরই জন্য সকল উত্তম প্রশংসা।
আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই। তার নিমিত্তেই আমরা একনিষ্ঠভাবে দ্বীন পালন করি। যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।’’
তিনি তাঁর উম্মাতের জন্য প্রত্যেক সলাতের পর নিম্নের দু’আগুলো পাঠ করা মুস্তাহাব হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেনঃ
سُبْحَانَ اللهِ (সুব্হানাল্লাহ) ৩৩ বার اَلْحَمْدُ للهِ (আল্হামদুলিল্লাহ) ৩৩ বার
اَللهُ اَكْبَرُ (আল্লাহু আকবার) ৩৩ সাথে নিম্নের কালিমা পড়া-
এবং একশত বার পূর্ণ করার জন্য এই দু’আটি বলবে-
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ দাহু লা- শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়া হুয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, তাঁর জন্য রাজত্ব এবং তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।[3]
(সহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি অত্র দুয়াটি বলবে তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনা রাশি পরিমান হয়।[4])
সহীহ ইবনে হিববানে হারেছ বিন মুসলিম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নাবী (ﷺ) বলেছেন- যখন তুমি ফজরের সলাত আদায় করবে তখন কথা বলার পূর্বে সাতবার এই দু’আ পড়বেঃ
اللّٰهُمَّ أَجِرْنِى مِنَ النَّارِ
‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচাও’’।[5] অতঃপর তুমি যদি সেই দিন মারা যাও, তাহলে আল্লাহ্ তোমাকে জাহান্নামের আগুন হতে পরিত্রাণ দিবেন। (এছাড়া ফরয সলাতের পর পাঠ করার জন্য আরও অনেক দু’আসমূহ সহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে)
[2]. অর্থাৎ কোন মর্যাদাবানের মর্যাদা আল্লাহর নিকট থেকে কারও জন্য কিছু আদায় করে দিতে পারেনা অথবা আল্লাহর পক্ষ হতে কোন বিপদ আসলে কোন বিত্তশালীর বিত্ত তা প্রতিহত করতে পারেনা। (আল্লাহই ভাল জানেন) বুখারী, তাও. হা/৮৪৪, ইফা. হা/৮০৪, আপ্র. হা/৭৯৬, মুসলিম, হাএ. হা/১২২৫, ইফা. হা/১২১৪, আবু দাউদ,আলএ. হা/১৫০৫, নাসায়ী, মাপ্র. হা/১৩৪১, মিশকাত, হা/৯৬২
[3]. মুসলিম, হাএ. হা/১২৩৯, ইফা. হা/১২২৮, ইসে. হা/১২৪০, আবু দাউদ, আলএ. হা/১১০৪, সহীহ আত-তিরমিযী, মাপ্র. হা/৩৪১৩, নাসায়ী, মাপ্র. হা/১৩৩৯, মিশকাত, হা/৯৬২, সহীহ, তাহক্বীক্ব: আলবানী।
[4] . মুসলিম, হাএ. হা/১২৩৯, মুসনাদে আহমাদ হা/৮৮২০, মিশকাত, হাএ. হা/৯৬৭
[5]. আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহঃ) হাদীসটি যাদুল মাআদে উল্লেখ করেছেন। অন্যান্য ইমামগণ হাদীসটিকে সহীহ বা হাসান বললেও ইমাম আলবানী রহঃ) এ ব্যাপারে বিশাল আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে হাদীসটি যঈফ।