اَلْحَمْدُ ِللهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَأَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه” لَا شَرِيْكَ لَه” وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًاعَبْدُه” وَرَسُوْلُه” أَمَّابَعْدُ:

আল্লাহ্ তা‘আলা সকল সৃষ্টির একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। আর তিনিই মাখলুক হতে যা ইচ্ছা নির্বাচন করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ وَيَخْتَارُ مَا كَانَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ سُبْحَانَ اللهِ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْركُون

‘‘হে রসূল! তোমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং ইখতিয়ার (বাছাই) করেন। এ ব্যাপারে তাদের কোন ইখতিয়ার নেই। আল্লাহ্ পবিত্র এবং তারা যাকে তাঁর শরীক সাব্যস্ত করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে’’।[1]

এই আয়াতে ইখতিয়ার দ্বারা নির্বাচন, বাছাই ও চয়ন করা উদ্দেশ্য। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

ما كان لهم الخيرة অর্থাৎ (আল্লাহ্ তা‘আলার ইখতিয়ার বা নির্বাচনে) বান্দার কোন অধিকার নেই। আল্লাহ্ তা‘আলা যেমন একাই সকল মাখলুক সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তিনি একাই সৃষ্টি থেকে যা ইচ্ছা বাছাই ও পছন্দ করেছেন। সুতরাং নির্বাচন, বাছাই ও চয়ন করার ক্ষেত্রসমূহ সম্পর্কে তিনিই অধিক অবগত আছেন। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

اللهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ

‘‘আল্লাহ্ এ বিষয়ে সুপরিজ্ঞাত যে, কোথায় স্বীয় রিসালাত প্রেরণ করতে হবে’’।[2] আল্লাহ্ তা‘আলা আরও বলেন-

وَقَالُوا لَوْلا نزلَ هَذَا الْقُرْآنُ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْقَرْيَتَيْنِ عَظِيمٍ أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَةَ رَبِّكَ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُمْ مَعِيشَتَهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِيَتَّخِذَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا سُخْرِيًّا وَرَحْمَةُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ

‘‘তারা বলে, কুরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হল না? তারা কি তোমার পালনকর্তার রহমত বণ্টন করে? আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে। তারা যা সঞ্চয় করে, তোমার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম’’।[3]

এখানে আল্লাহ্ তা‘আলা মুশরিকদের ইখতিয়ারের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তিনি সংবাদ দিয়েছেন যে, আল্লাহর পছন্দ ও বাছাইয়ে তাদের কোন দখল নেই। এ বিষয়টি শুধু সেই সত্তার অধিকারে, যিনি তাদের রিযিক বণ্টন করেছেন এবং বয়স নির্ধারণ করেছেন। আর তিনিই সম্মানিত বান্দাদের মাঝে স্বীয় অনুগ্রহ ও রহমত ভাগ করেন। তিনি ভাল করেই জানেন কে নবুওয়াত, রিসালাত এবং অনুগ্রহ পাওয়ার হকদার আর কে এগুলো পাওয়ার হকদার নয়। তিনি স্বীয় বান্দাদের কাউকে অন্য কারও উপর মর্যাদা দিয়েছেন। মুশরিকরা যে শিরক ও যে প্রস্তাব ইখতিয়ার করেছিল, আল্লাহ্ তা‘আলা তার অনেক উর্ধ্বে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

مَا كَانَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ سُبْحَانَ اللهِ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ

‘‘আল্লাহর ইখতিয়ারে (বাছাইয়ে) তাদের কোন দখল নেই। আল্লাহ্ পবিত্র এবং তারা যাকে তাঁর সাথে শরীক সাব্যস্ত করে, তিনি তার উর্ধ্বে’’।[4] যেহেতু মুশরিকদের শিরকের দ্বারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন স্রষ্টার অসিত্মবত্ব প্রমাণিত হয়না, তাই উপরোক্ত আয়াতে শুধু অন্য সৃষ্টিকর্তা থাকার প্রতিবাদ করা হয়নি; বরং তাদের শিরকী প্রস্তাবেরও প্রতিবাদ করা হয়েছে। মোট কথা, মক্কার মুশরিকরা এটি দাবী করতনা যে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন সৃষ্টিকর্তা আছে; বরং তারা বিশ্বাস করত, সৃষ্টিকর্তা এবং রিযিক দাতা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলা। এই অর্থেই আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

إِنَّ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللهِ لَنْ يَخْلُقُوا ذُبَابًا وَلَوِ اجْتَمَعُوا لَهُ وَإِنْ يَسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئًا لا يَسْتَنْقِذُوهُ مِنْهُ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوبُ مَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِنَّ اللهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ

‘‘তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবেনা, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবেনা। প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন। তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা বুঝেনি। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শক্তিধর, পরাক্রমশীল’’।[5] আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-

وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ فَيَقُولُ مَاذَا أَجَبْتُمُ الْمُرْسَلِينَ فَعَمِيَتْ عَلَيْهِمُ الأنْبَاءُ يَوْمَئِذٍ فَهُمْ لا يَتَسَاءَلُونَ فَأَمَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَعَسَى أَنْ يَكُونَ مِنَ الْمُفْلِحِينَ وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ وَيَخْتَارُ مَا كَانَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ سُبْحَانَ اللهِ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ

‘‘যেদিন আল্লাহ্ তাদেরকে ডেকে বলবেন, তোমরা রসূলগণকে কি জবাব দিয়েছিলে? অতঃপর তাদের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাদের একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেনা। তবে যে তাওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে’’ আপনার প্রতিপালক যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং পছন্দ করেন। এ ব্যাপারে তাদের কোন ইখতিয়ার নেই। আল্লাহ্ পবিত্র এবং তারা যাকে তাঁর শরীক সাব্যস্ত করে, তিনি তার অনেক ঊর্ধ্বে।’’[6] সুতরাং আল্লাহ্ তা‘আলা যেমন একাই সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তাঁর সৃষ্ট বান্দাদের মধ্য হতে যারা তাওবা করে, ঈমান আনয়ন করে এবং সৎ আমল করে আল্লাহ্ তা‘আলার সর্বোত্তম বান্দায় পরিণত হয় এবং সফলকাম হয়, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদেরকে পছন্দ ও নির্বাচন করেন। এই পছন্দ ও বাছাই করার বিষয়টি সম্পূর্ণ আল্লাহর হাতে। তিনি স্বীয় হিকমত ও ইলম অনুপাতে যাকে যোগ্য পান, তাকেই পছন্দ করেন ও নির্বাচন করেন। এই সমস্ত মুশরিকদের ইচ্ছা ও প্রস্তাব মোতাবেক তিনি কাউকে বাছাই করেন না। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের শিরক ও শরীকসমূহ থেকে পবিত্র এবং এগুলোর অনেক উর্ধ্বে।

সুতরাং আল্লাহ্ তা‘আলা যেমন মানুষ সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তাদের থেকে নাবী-রসূলদেরকে বাছাই ও নির্বাচন করেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলার মহান হিকমতের দাবী অনুযায়ী এবং বনী আদমের স্বার্থেই এই বাছাই ও নির্বাচন। এতে আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারও পরামর্শ, প্রস্তাব এবং বাছাইয়ের কোন দখল নেই। আল্লাহ্ তা‘আলার এই বাছাই, পছন্দ ও নির্বাচন পৃথিবীতে তাঁর রুবূবীয়াতের বিরাট এক নিদর্শন, তাঁর একত্বের সর্ব বৃহৎ দলীল, তাঁর পরিপূর্ণ গুণাবলীর প্রমাণ এবং রসূলদের সত্যায়নের সুস্পষ্ট দলীল।

আল্লাহ্ তা‘আলা সাতটি আসমান সৃষ্টি করেছেন। এগুলোর মধ্যে হতে সর্বশেষ ও উপরেরটিকে তাঁর নিকটবর্তী ফিরিস্তাদের অবস্থানের স্থান হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। এটিকে তাঁর কুরসী ও আরশের নিকটে রেখেছেন এবং তাঁর সৃষ্টির মধ্যে হতে যাকে ইচ্ছা এখানে বসবাস করিয়েছেন। সুতরাং অন্যান্য আকাশের উপর এই আকাশের রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট ও ফযীলত। তা ছাড়া আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়াই সপ্তম আকাশের ফযীলতের জন্য যথেষ্ট।

আল্লাহ্ তা‘আলার মাখলুক সমূহের কোনটিকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দেয়ার ধারাবাহিকতায় সমস্ত জান্নাতের উপর জান্নাতুল ফেরদাউসকে আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদান করেছেন এবং আল্লাহ্ তা‘আলা আরশকে এর ছাদ হিসাবে নির্ধারণ করেছেন।

এই নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় আল্লাহ্ তা‘আলা ফিরিস্তাদের থেকে কতিপয়কে বাছাই ও পছন্দ করেছেন। যেমন জিবরীল, মিকাঈল এবং ইসরাফীল (আঃ) কে ফিরিস্তাদের থেকে বাছাই করেছেন এবং অন্যদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। নাবী (ﷺ) বলেন-

اللّٰهُمَّ رَبَّ جِبْرِيلَ وَمِيكَائِيلَ وَإِسْرَافِيلَ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ أَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ اهْدِنِى لِمَا اخْتُلِفَ فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِكَ إِنَّكَ أَنْتَ تَهْدِى مَنْ تَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

‘‘হে আল্লাহ্! তুমি জিবরীল, মিকাঈল এবং ইসরাফীলের প্রভু, আসমান-যমিনের সৃষ্টিকারী, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বস্ত্ত সম্পর্কে অবগত, তুমি তোমার বান্দাদের মতভেদের বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালাকারী। যে হকের ব্যাপারে লোকেরা মতভেদে লিপ্ত রয়েছে, তোমার তাওফীকে আমাকে তাতে দৃঢ়পদ রাখ। তুমি যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করে থাক।[7]

এমনিভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা আদমের সন্তানদের থেকে আম্বীয়ায়ে কেরামদেরকে মুন্তাখাব (চয়ন) করেছেন। তাদের থেকেও আবার কতককে রসূল হিসাবে নির্বাচন করেছেন।

রসূলদের মধ্য হতে আবার পাঁচজন উলুল আয্মকে (সুদৃঢ় ইচ্ছা শক্তি সম্পন্ন রসূলকে) বাছাই করেছেন। এই পাঁচ জনের আলোচনা সূরা আহযাব ও সূরা শুরায় করা হয়েছে। এই পাঁচজন থেকে আবার ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ (ﷺ) কে খলীল (খাস বন্ধু) হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

এই নির্বাচন ও বাছাইয়ের ধারাবাহিকতায় আল্লাহ্ তা‘আলা আদমের সকল সন্তান থেকে ইসমাঈল (আঃ) এর বংশধরকে বাছাই করেছেন। তাদের থেকে বাছাই করেছেন বনী কেনানার সন্তানদেরকে। বনী কেনানার সন্তানদের থেকে বাছাই করেছেন কুরাইশ সম্প্রদায়কে এবং কুরাইশ থেকে বনী হাশেমকে। সর্বশেষে বনী হাশেম থেকে আদমের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মুহাম্মাদ (ﷺ) কে সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল হিসাবে মনোনীত করেছেন, পৃথিবীর সর্বোত্তম দেশকে তাঁর আবাসস্থল বানিয়েছেন এবং তাঁর উম্মাতকে অন্যান্য সকল উম্মাতের উপর শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য দিয়েছেন।

এই উম্মাতের প্রথম সারির লোকদেরকে মুহাম্মাদ (ﷺ) এর সাথী নির্বাচন ও নির্ধারণ করেছেন। তাদের মধ্যে আবার বদর যুদ্ধে ও বায়আতুর রিযওয়ানে অংশ গ্রহণকারীগণ ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। দ্বীন পালনে তারা ছিলেন অগ্রগামী, শরীয়তের হুকুম-আহকাম বাস্তবায়নে তারা ছিলেন সর্বাধিক অগ্রসর এবং তাদের আখলাক-চরিত্র ছিল সর্বাধিক পবিত্র ও উন্নত।

মুসনাদে আহমাদে মুআবীয়া বিন হায়দাহ (রাঃ) হতে মারফু সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রসূল (ﷺ) বলেন- তোমাদের দ্বারা সত্তরটি উম্মাত পূর্ণ হবে। তার মধ্যে তোমরাই আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সর্বোত্তম এবং সর্বাধিক সম্মানিত।

উম্মাতে মুহাম্মাদীয়ার লোকদের আখলাক, আমল এবং তাওহীদের প্রভাব তাদের প্রাধান্য ও ফযীলতের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে। জান্নাতে ও হাশরের ময়দানেও তাদের মর্যাদা হবে সুস্পষ্ট। রসূল (ﷺ) বলেন- কিয়ামতের দিন আমার সমস্ত উম্মাতকে একটি উঁচু স্থানে রাখা হবে। আর বাকী উম্মাতদের রাখা হবে অন্য একটি টিলায়। তবে আমার উম্মাতের স্থানটি অধিকতর উঁচু হবে। তারা আমার উম্মাতের দিকে মাথা উঠিয়ে তাকাবে। তিরমিযী শরীফে বুরায়দা বিন হুসাইব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, রসূল (ﷺ) বলেন-

أَهْلُ الْجَنَّةِ عِشْرُوْنَ وَمِائَة صف ثَمَانُوْنَ مِنْهَا مِنْ هذِهِ الْأُمَّةِ وَأَرْبَعُوْنَ مِنْ سَائِرِ الْأُمَمِ

‘‘জান্নাতবাসীগণ একশত বিশ কাতার হবে। এই উম্মাত (উম্মাতে মুহাম্মাদী) থেকে আশি কাতার। আর বাকী সমস্ত উম্মাত থেকে হবে চল্লিশ কাতার’’।[8] ইমাম তিরমিযী বলেন- এই হাদীসটি হাসান। অন্য হাদীছে রয়েছে, নাবী (ﷺ) বলেন- আল্লাহর শপথ! আমি আশা করি, তোমরা হবে জান্নাত বাসীদের অর্ধেক। এই হিসাবে ষাট কাতার হওয়ার কথা। এর বেশী নয়। উভয় বর্ণনার মধ্যকার দ্বন্ধের সমাধানে একাধিক কথা রয়েছে। অর্ধেকের বর্ণনাটিই অধিকতর সঠিক। অথবা বলা যায় যে, প্রথমে নাবী (ﷺ) চেয়েছিলেন, জান্নাতবাসীদের অর্ধেক তাঁর উম্মাত থেকে হোক। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রিয় খলীলকে জানিয়ে দিলেন যে, জান্নাত বাসীদের একশত বিশ কাতারের মধ্যে হতে তাঁর উম্মাত হবে আশি কাতার। সুতরাং উভয় হাদীছের মধ্যে কোন দ্বন্দ অবশিষ্ট রইলনা। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।

[1]. সূরা কাসাস-২৮:৬৮

[2]. সূরা আনআম-৬:১২৪

[3]. সূরা যুখরুফ-৪৩:৩১-৩২

[4]. সূরা কাসাস-২৮:৬৮

[5]. সূরা হাজ্জ-২২:৭৩-৭৪

[6]. সূরা কাসাস-২৮:৬৭

[7]. সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ রাতের সলাতের দুআ, মুসলিম, হাএ. হা/১৬৯৬ ইফা. হা/১৬৮১, আপ্র. হা/১৬৮৮

আবু দাউদ, আলএ. হা/৭৬৭,নাসাঈ, মাপ্র. হা/১৬২৫ সহীহ আত-তিরমিযী, মাপ্র. হা/৩৪২০

[8]. মিশকাতুল মাসাবীহ, অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জান্নাতীদের বৈশিষ্ট্য হাএ. হা/৫৬৪৪। ইমাম আলবানী রহঃ) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। সহীহ আত-তিরমিযী, মাপ্র. হা/২৫৪৬, সহীহ ইবনে মাজাহ,তাও.হা/৪২৮৯