নিঃসন্দেহে লাইলাতুল কদর রামাযান মাসে হয়ে থাকে। আল্লাহ্ বলেনঃ
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
“নিশ্চয় আমি উহা অবতীর্ণ করেছি কদরের রাত্রিতে।” (সূরা কদরঃ ১) অন্য আয়াতে পবিত্র কুরআন রামাযান মাসে নাযিল হয় একথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ্ বলেনঃ
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
“রামাযান সেই মাস যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫) নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করার জন্য রামাযানের প্রথম দশকে ই’তেকাফ করেছেন। তারপর দ্বিতীয় দশকে এ’তেকাফ করেছেন। অতঃপর তা দেখেছেন রামাযানের শেষ দশকে। এরপর ছাহাবীদের (রাঃ) একটি দল স্বপ্নে দেখেছেন লাইলাতুল কদর রামাযানের শেষ সাত দিনে। তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ
“আমি দেখছি তোমাদের সবার স্বপ্ন একরকম হয়েছে শেষ সাত দিনে। অতএব কেউ যদি লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন শেষ সাত রাতে অনুসন্ধান করে।” লায়লাতুল কদরের সময় নির্ধারণের ব্যাপারে সর্বনিম্ন যা বলা হয়েছে তা হচ্ছে এই।
লায়লাতুল কদরের ব্যাপারে প্রমাণিত দলীল সমূহ যদি আমরা গভীরভাবে অনুসন্ধান করি, তবে দেখা যাবে যে, তা বিভিন্ন রাতে হয়ে থাকে। প্রতি বছর নির্দিষ্টভাবে এক রাতে নয়। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা রাত্রে লায়লাতুল কদর স্বপ্নে দেখলেনঃ পানি ও ভিজা মাটিতে সিজদা করলেন। সে রাতটি ছিল একুশে রাত। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
“তোমরা রামাযানের শেষ দশকে লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান কর।” এদ্বারা বুঝা যায় উহা নির্দিষ্ট একটি রাতে নয়। এজন্য মু’মিন শেষ দশকের প্রতিটি রাতেই অনুসন্ধান করবে ও যে কোন রাতে তা পেয়ে যাওয়ার জন্য আশা করবে।
যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদরে ঈমানের সাথে ও ছাওয়াবের আশায় ক্বিয়ামুল্লাইল করবে, সে নিশ্চিতভাবে তার প্রতিদান লাভ করবে। চাই সে জানতে পারুক বা না পারুক। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ছাওয়াবের আশায় লায়লাতুল কদরে ক্বিয়াম করে, তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করা হবে।” এরূপ বলা হয়নি যে, কখন লায়লাতুল কদর হবে জানতে পারলে এই ছওয়াব হাসিল হবে। অতএব ছাওয়াব পাওয়ার জন্য নির্দিষ্টভাবে কখন লায়লাতুল কদর হচ্ছে তা জানা শর্ত নয়। কিন্তু যে ব্যক্তি রামাযানের শেষ দশকের প্রতিটি রাতেই কিয়াম করবে, সে নিশ্চিতভাবে লায়লাতুল কদর পাবে। চাই তা শেষ দশকের প্রথম দিকে হোক বা মধ্যখানে বা শেষের দিকে হোক।