নামাযের পর আল্লাহ্র যিকির করার ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলা আদেশ করেছেন। তিনি বলেনঃ
فَإِذَا قَضَيْتُمْ الصَّلاةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ
“যখন তোমরা নামায সমাধা করবে, তখন আল্লাহ্র যিকির করবে দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায়।” (সূরা নিসা- ১০৩) আল্লাহ্র এই নির্দেশের বর্ণনা দিয়েছেন নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কর্ম ও বাণীর মাধ্যমে। অতএব সালাম ফেরানোর পর নিম্ন লিখিত দু’আ সমূহ পাঠ করবেঃ
১) তিনবার ইস্তেগফার করবে। অর্থাৎ- আস্তাগফিরুল্লাহ্ পাঠ করবে
২) এবং বলবেঃ
اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ السَّلامُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আন্তস্সালাম ওয়ামিন কাস্সালাম তাবারাকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
৩) অতঃপর বলবেঃ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
উচ্চারণঃ লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লাশারীকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
আল্লাহুম্মা লা-মা-নেআ লিমা আত্বাইতা ওয়াল মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।
অর্থঃ এক আল্লাহ ছাড়া কোন হক উপাস্য নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরীক নাই। মালিকানা তাঁরই, সমুদয় প্রশংসা তাঁরই জন্য।
হে আল্লাহ! আপনি যা দান করেন তা প্রতিরোধকারী কেউ নেই। এবং আপনি যা রোধ করেন তা দানকারী কেউ নেই। আর কোন মর্যাদাবানের মর্যাদা আপনার নিকট থেকে কোন উপকার আদায় করে দিতে পারে না।
৪) অতঃপর বলবেঃ
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
“আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই। তারই জন্য রাজত্ব, তারই জন্য সমস্ত প্রশংসা। তিনি সকল বস্তর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত গুনাহ হতে বিরত থাকা ও আনুগত্য করার ক্ষমতা লাভ করা যায় না। আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। আর আমরা তাঁকে ছাড়া অন্যের ইবাদত করি না। একমাত্র তাঁর অধিকারে সমস্ত নেয়ামত, তাঁরই জন্য সমস্ত সম্মান মর্যাদা, আর তাঁরই জন্য উত্তম স্ততি। আল্লাহ ব্যতীত কোন হক উপাস্য নেই। তার নিমিত্তে আমরা ধর্ম পালন করি একনিষ্ঠ ভাবে। যদিও কাফেররা তা মন্দ ভাবে।
৫) তাসবীহ পাঠ করবে অর্থ্যাৎ ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে ৩৩ বার, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলবে ৩৩ বার এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে ৩৩ বার। এবং একশ এর পূর্ণতা স্বরূপ এই দু‘আটি বলবে।
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণঃ লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লাশারীকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থঃ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই তিনি এক তাঁর কোন শরীক নাই। মালিকানা তাঁরই সমুদয় প্রশংসা তাঁরই জন্য।
যে ব্যক্তি অত্র তাসবীহ্ ও দু‘আটি বলবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশী পরিমাণ হয় না কেন।
পূর্বোল্লিখিত তাসবীহ্গুলো যে কোনটা দ্বারা শুরু করতে পারবে। আর সুুবহানাল্লাহ, আল হামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার একসাথে ৩৩ বার বলবে অথবা প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা ৩৩ বার করে বলবে কোন অসুবিধা নেই।
অনুরূপভাবে উক্ত তাসবীহ্ সমূহ ৩৩ বারের পরিবর্তে ১০ বার করে বলতে পারবে।
৬) সুবহানাল্লাহ্ ওয়াল হামদুলিল্লাহ্ ওয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার- এই চারটি তাসবীহ্ ২৫ বার পাঠ করবে। সর্বমোট ১০০ বার।
উল্লেখিত তাসবীহ্গুলোর যে কোন একটি প্রকার পাঠ করলেই হবে। কেননা ইসলামী মূলনীতি হচ্ছে, (কোন ইবাদত যদি কয়েকভাবে প্রমাণিত হয়, তবে তার প্রত্যেক প্রকার থেকে কখনো এটা কখনো ওটা বাস্তবায়ন করা সুন্নাত।) এই তাসবীহ সকল নামাযের ক্ষেত্রে প্রজোয্য। ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব ও এশা। তবে ফজর ও মাগরিব নামায বাদ নিম্নলিখিত দু’আটি ১০ বার পাঠ করবেঃ ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লাশারীকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।’ অনুরূপভাবে উক্ত দু’নামাযের পর সাত বার পাঠ করবে এই দু’আঃ
رَبِّ أجِرْنِيْ مِنَ الناَّرِ
‘হে আমার পালনকর্তা! আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর।’
৭) অতঃপর আয়াতুল কুরসী (সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত) পাঠ করবে। যে ব্যক্তি প্রতেক ফরয নামাযানে- অত্র আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করা হতে বাধা দানকারী একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
৮) তারপর একবার করে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করবে। তবে ফজর বা মাগরীব নামায এর ব্যতিক্রম- এই দুই নামাযের পর অত্র তিনটি সূরা তিনবার করে পাঠ করবে। (আবু দাউদ, নাসাঈ)