হ্যাঁ, ছহীহ্ মুসলিমে একটি হাদীছ রয়েছে। ইবনু ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামাযে বসতেন... তিনি বলেন, তিনি আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন।” অন্য শব্দে বলা হয়েছেঃ “যখন তিনি তাশাহুদে বসতেন।” প্রথম বাক্যটি আ’ম বা ব্যাপক অর্থবোধক। আর দ্বিতীয় বাক্যটি খাছ বা বিশেষ অর্থবোধক। কায়েদা বা মূলনীতি হচ্ছে খাছ বিষয়কে যদি এমন ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয় যা আ’মের অর্থ বহন করে, তখন আ’ম বিষয়কে আর খাছ করা হবে না। উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। আপনি জনৈক ব্যক্তিকে বললেন, ছাত্রদের সম্মানিত করুন। এবং তাকে বললেন, মুহাম্মাদকে সম্মানিত করুন। মুহাম্মাদ ছাত্রদেরই অন্তর্ভুক্ত। এখানে একথা প্রমাণ হয় না যে, অন্যান্য ছাত্রদেরকে সম্মানিত করা হবে না। উছুলবিদ বিদ্বানগণ একথা বলেছেন। শায়খ শানক্বীতী (আযওয়াউল বায়ান) গ্রনে' এ মূলনীতিটি উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু যদি বলে থাকে ছাত্রদেরকে সম্মানিত কর। তারপর বলল, ক্লাস রূমে যারা ঘুমায় তাদের সম্মানিত করো না। এখানে খাছ বা বিশেষ করে দেয়া হল। কেননা আ’ম বা ব্যাপকের বিধানের বিপরীত বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
তাছাড়া মাসআলাটির ব্যাপারে আলাদা হাদীছও পাওয়া যায়। ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেন, ‘ফতহুর্ রাব্বানী’ গ্রনে'র (১/১৪৭) লিখক তার সনদকে হাসান বলেন। যাদুল মা’আদের টিকা লিখকদের কেউ কেউ তার সনদ ছহীহ্ বলেও মন্তব্য করেছেন। “রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’সিজদার মধ্যে বসলে আঙ্গুলসমূহ মুষ্টিবদ্ধ করতেন এবং তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন।”
আঙ্গুল নড়াতে হবে না এ ব্যাপারে যারা কথা বলেন তাদের কাছে আমাদের প্রশ্ন, তবে ডান হাত কি অবস্থায় থাকবে? যদি জবাবে বলা হয়, রানের উপর ছড়িয়ে রাখতে হবে। প্রশ্ন হবে, একথার দলীল কি? কোন হাদীছে তো একথা বলা হয়নি যে, তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডান হাতকে উরুর উপর ছড়িয়ে রাখতেন। এরূপ কোন হাদীছ থাকলে ছাহাবীগণ তার বর্ণনা দিতেন যেমনটি বর্ণনা পাওয়া যায় বাম হাতকে উরুর উপর ছড়িয়ে রাখার ব্যাপারে।