উত্তর: একথার দ্বারা যদি উদ্দেশ্য হয় যে, আপনার আগমণের কারণে আমরা বরকত লাভ করলাম, তাহলে অসুবিধা নেই। কারণ, বরকতকে মানুষের দিকে সম্পৃক্ত করা জায়েয আছে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর গলার হার হারিয়ে যাওয়ার কারণে যখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হলো, তখন উসাইদ ইবন হুজায়ের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আবু বকর পরিবারের নারী! এটিই আপনাদের প্রথম বরকত নয়।[1] বরকতের অনুসন্ধান দু’ভাবে হতে পারে।
১) শরী‘আত সম্মত বলে কোনো জিনিস থেকে বরকত হাসিল করা: যেমন, আল-কুরআনুল কারীম। আল্লাহ বলেন,
﴿وَهَٰذَا كِتَٰبٌ أَنزَلۡنَٰهُ مُبَارَكٞ﴾ [الانعام: ٩٢]
“এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি অবতীর্ণ করেছি”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৯২]
কুরআনের বরকত হলো, যে ব্যক্তি তাকে জীবন বিধান হিসেবে গ্রহণ করবে এবং কুরআন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করবে, তার জন্য বিজয় অনিবার্য। এর মাধ্যমে আল্লাহ অনেক জাতিকে শির্ক থেকে মুক্তি দিয়েছেন। কুরআনের অন্যতম বরকত হলো, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি অক্ষর পাঠ করবে, সে দশটি নেকী অর্জন করবে।
২) বাহ্যিক কোনো জানা জিনিস থেকে বরকত হাসিল করা: যেমন, দীনি ইলম। কোনো ব্যক্তির ইলম এবং কল্যাণের পথে দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে বরকত হাসিল করা। উসায়েদ ইবন হুজায়ের বলেন, হে আবু বকরের বংশধর! এটিই তোমাদের প্রথম বরকত নয়। কেননা কোনো কোনো মানুষের হাতে এমন বরকত প্রকাশিত হয়, যা অন্যের হাতে প্রকাশিত হয় নি। মৃত ব্যক্তি বা মিথ্যুকদের কল্পিত ওলী থেকে বরকত লাভের ধারণা করা সম্পূর্ণ বাতিল। এর কোনো অস্তিত্ব নেই। কখনো বরকতের নামে শয়তানের সহযোগীতায় ভন্ডরা মানুষকে গোমরাহ করার জন্য কিছু কিছু অলৌকিক কাণ্ড দেখিয়ে থাকে। সঠিক বরকত এবং ভণ্ডামীর মধ্যে পার্থক্য করার মূলনীতি হলো, যার কাছ থেকে কারামাত প্রকাশিত হলো, তার ব্যক্তিত্বের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সে যদি আল্লাহর ওলীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই সুন্নাহর অনুসারী হবে এবং বিদ‘আত থেকে মুক্ত হবে, আল্লাহ তার হাতে এমন বরকত প্রকাশ করবেন, যা অন্যের হাতে প্রকাশ করবেন না। আর যদি কুরআন-সুন্নাহর বিরোধীতাকারী হয় অথবা বাতিলের দিকে আহ্বানকারী হয় এবং তা সত্বেও তার হাতে বাহ্যিকভাবে কোনো ভালো জিনিস প্রকাশিত হয়, তাহলে বুঝতে হবে এটি শয়তানের পক্ষ থেকে বাতিলের সহযোগিতা মাত্র।
>