উত্তর: আমরা বলব কবরের আযাব কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে সত্য বলে প্রমাণিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ﴾ [غافر: ٤٦]
“সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয় এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফির‘আউন গোত্রকে কঠিনতম আযাবে প্রবেশ করাও।” [সূরা গাফির, আয়াত: ৪৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«فَلَوْلا أَنْ لا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ»
“তোমরা যদি দাফন না করতে, তাহলে আমি তোমাদেরকে কবরের আযাব শুনানোর জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করতাম, যা আমি নিজে শ্রবণ করে থাকি। অর্থাৎ তোমরা যেহেতু একে অপরকে দাফন করে থাক, তাই আমি তোমাদেরকে কবরের আযাব শুনানোর জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করা বাদ দিলাম। কারণ, তোমরা কবরের আযাব শুনতে পেলে দাফন করা বাদ দিবে। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে জাহান্নামের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর। সাহাবীগণ বললেন, نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّار ‘আমরা আল্লাহর কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। সাহাবীগণ বললেন, نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّار ‘আমরা আল্লাহর কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”[1]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন,
«يُفْسَحُ لَهُ فِى قَبْرِهِ مَدَّ بَصَرِهِ»
“তার কবরকে চোখের দৃষ্টি সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।”[2]
এমনি আরো অনেক দলীল রয়েছে, যা শুধুমাত্র ধারণার ওপর ভিত্তি করে প্রত্যাখ্যান করা মোটেই জায়েয নয়; বরং তা নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে নেওয়া আবশ্যক। তাছাড়া কবরের আযাব হবে রূহের উপরে। শরীরের উপরে নয়। শরীরের উপরে হলে তা দেখা যেত, তখন বিষয়টি গায়েবের ওপর ঈমানের অন্তর্ভুক্ত হতো না; কিন্তু কবরের আযাবের বিষয়টি আলমে বরযখের তথা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। দুনিয়ার প্রকাশ্য বিষয়াদি দ্বারা এটাকে উপলব্ধি করা যাবে না। কবরের আযাব, শান্তি, কবরের প্রশস্ততা এবং সংকীর্ণতা এসব বিষয় কেবল মৃত ব্যক্তিই অনুভব করতে পারে, অন্য কেউ নয়। কখনো কখনো মানুষ স্বপ্নে দেখে যে, সে কোথাও যাচ্ছে, আকাশে উড়ছে, কাউকে প্রহার করছে কিংবা তাকে কেউ প্রহার করছে। আরো দেখে যে, সে এক সংকীর্ণময় স্থানে আছে অথবা প্রশস্ত কোনো স্থানে আনন্দময় জীবন যাপন করছে। অথচ ঘুমন্ত ব্যক্তির পাশের লোকেরা কিছুই অনুভব করতে পারে না। সুতরাং আমাদের উচিৎ এ সমস্ত বিষয়ে শ্রবণ করা, বিশ্বাস করা এবং সেগুলোর আনুগত্য করা।
>[2] সহীহ বুখারী, অধ্যায়: জানাযা।