ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম ঈমান শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি
প্রশ্ন: (৫) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভবিষ্যৎ বাণী করে গেছেন যে, তাঁর মৃত্যুর পর উম্মত বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে। সম্মানিত শাইখের কাছে এর ব্যাখ্যা জানতে চাই।

উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহীহ হাদীসের[1] মাধ্যমে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইয়াহূদীরা ৭১ দলে বিভক্ত হয়েছে, নাসারারা বিভক্ত হয়েছে ৭২ দলে, আর এ উম্মাতে মুহাম্মাদী বিভক্ত হবে ৭৩ দলে। একটি দল ব্যতীত সমস্ত দলই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এটি হলো সেই দল, যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণের সুন্নাহর ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এ দলটি দুনিয়াতে বিদ‘আতে লিপ্ত হওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকবে এবং পরকালে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে। এটিই হলো সাহায্যপ্রাপ্ত দল, যা কিয়ামত পর্যন্ত হকের ওপর বিজয়ী থাকবে।

এ তিয়াত্তর ফের্কার মধ্যে কবেল একটিই হকের ওপর রয়েছে, বাকীরা সবাই বাতিল পথে রয়েছে। কোনো কোনো আলিম এ জাহান্নামী ৭২ ফিরকার পরিচয় নির্ধারণ করার প্রয়াস পেয়েছেন। প্রথমত: বিদ‘আতীদেরকে পাঁচভাগে ভাগ করেছেন এবং প্রত্যেক ভাগ থেকে শাখা-প্রশাখা বের করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ঘোষিত ৭২ টি ফিরকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিছু কিছু আলিম ফিরকাগুলো নির্ধারণ না করাই উত্তম মনে করেছেন। কারণ, যারা গণনা করেছেন তাদের গণনাকৃত ফিরকার বাইরেও বহু ফিরকা রয়েছে যারা পূর্বে পথভ্রষ্ট হওয়া লোকদের থেকেও বেশি পথভ্রষ্ট হয়েছেন। আর এ বাহাত্তর ফিরকা গণনার পরেও অনেক ফিরকার উৎপত্তি হয়েছে। তারা আরও বলেন, এ সংখ্যা শেষ হবার নয়।

বরং শেষ যামানায় কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে এর সর্বশেষ সংখ্যা সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়। সুতরাং উত্তম হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন, তা সংক্ষিপ্তভাবেই রাখা। আমরা এভাবে বলব যে, এ উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। ৭২ দল জাহান্নামে যাবে এবং মাত্র একদল জান্নাতে যাবে। অতঃপর বলব, যে দলটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীদের সুন্নাহর বিরোধিতা করবে, সে এ ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত হবে। হয়ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতদসংক্রান্ত এমন কিছু মূলনীতির দিকে ইঙ্গিত করেছেন তন্মধ্যে আমরা কেবল দশটিই জানি। আবার হতে পারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন কিছু মূলনীতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যার সাথে বহু শাখা-প্রশাখা জড়িত; যা কারও কারও মত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

>
[1] আবু দাউদ, কিতাবুস সুন্নাহ, তিরমিযী, কিতাবুল ঈমান, ইবন মাজাহ, কিতাবুল ফিতান।