উত্তর: প্রশ্নকারী যখন এ আশ্চর্য বিষয় দেখেছে, আমি এর চাইতে অধিক আশ্চর্যজনক বিষয় দেখেছি। আমি দেখেছি কিছু লোক ফরয সালাতান্তে এক দিকে সালাম ফেরানো হলে দ্বিতীয় সালাম ফেরানোর পূর্বে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করার জন্য দৌড় দেয়। এতে তো তার ফরয সালাতই বাতিল হয়ে গেল। যে সালাত কিনা ইসলামের অন্যতম প্রধান রুকন। অথচ সে এমন একটি কাজ করতে ছুটেছে যা ওয়াজিব নয়। এমনকি তাওয়াফ অবস্থায় না থাকলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা শরী‘আতসম্মতও নয়। নিঃসন্দেহে এটি একটি বিরাট ধরনের দুঃখজনক অজ্ঞতা। তাওয়াফ ছাড়া হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা সুন্নাত নয়। এব্যাপারে আমার কোনো দলীল জানা নেই। আমি এ স্থান থেকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, আমার জ্ঞানের বাইরে যদি কারো কাছে এমন কোনো দীলল জানা থাকে যে, তাওয়াফ না করলেও হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করা শরী‘আতসম্মত, তবে সে যেন আমাদের কাছে তা পৌঁছিয়ে দেয়। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।
অতএব, হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা তাওয়াফের সুন্নাতের অন্তর্গত। তাছাড়া এটা তখনই সুন্নাত হিসেবে সাব্যস্ত হবে যখন তা চুম্বন করতে গিয়ে তাওয়াফকারী কষ্ট পাবে না বা অন্য কাউকে কষ্ট দেওয়া হবে না। যদি তাওয়াফকারীর কষ্ট হয় বা অন্য কাউকে কষ্ট দেওয়া হয়, তবে দ্বিতীয় পদক্ষেপ অবলম্বন করবে এবং তা হাত দ্বারা স্পর্শ করে হাতকে চুম্বন করবে। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিখিয়েছেন। যদি একাজও কষ্ট করা ও কষ্ট দেওয়া ছাড়া আদায় করা সম্ভব না হয়, তবে আমরা তৃতীয় স্তরে উপনীত হয়ে দূর থেকে হাজরে আসওয়াদকে এক হাত দ্বারা ইশারা করব। কিন্তু সে হাতকে চুম্বন করব না। এটাই হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করার সুন্নাতী পদ্ধতি।
হাজরে আসওয়াদকে চুম্বনের বিষয়টি আরো জটিল ও কঠিন হবে- যেমনটি প্রশ্নকারী উল্লেখ করেছেন- নারীদেরকে পাথর চুম্বন করার জন্য ঠেলে দেওয়া, হতে পারে সে নারী গর্ভবতী বা বৃদ্ধা বা দুর্বল যুবতী অথবা শিশুকে উপরে উঠিয়ে চুম্বনের জন্য এগিয়ে দেওয়া, তবে এসব কাজ গর্হিত ও নাজায়েয। কেননা এতে দুর্বল লোকদেরকে ভয়ঙ্কর এক অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যেখানে আছে সংকীর্ণতা ও পুরুষদের ভীড়ের প্রচণ্ডতা। তাই বিষয়টি মাকরূহ অথবা হারামের অন্তর্গত। আল্লাহর রহমতে অন্য ব্যবস্থা থাকতে কোনো মানুষের পক্ষে এদিকে অগ্রসর হওয়া উচিৎ নয়। আপনি যদি কঠিনভাবে ইসলামের বিধান পালন করতে চান, তবে পরাজিত হবেন।