উত্তর: ইহরাম অবস্থায় মাথা আঁচড়ানো উচিৎ নয়। কেননা ইহরামকারীর উচিৎ হচ্ছে এলোকেশ ও ধুলোমলিন থাকা। তবে গোসল করতে কোনো অসুবিধা নেই। তাছাড়া মাথা আঁচড়ালে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ইহরামকারী মাথা বা শরীর প্রভৃতি চুলকালে যদি কোনো চুল পড়ে যায়, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। কেননা সে ইচ্ছাকৃত চুল উঠায়নি। জেনে রাখা উচিৎ যে, ইহরাম অবস্থায় যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ যদি কেউ ভুলক্রমে করে ফেলে, তবে কোনো অসুবিধা নেই। কেননা আল্লাহ বলেন,
﴿وَلَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٞ فِيمَآ أَخۡطَأۡتُم بِهِۦ وَلَٰكِن مَّا تَعَمَّدَتۡ قُلُوبُكُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمًا﴾ [الاحزاب: ٥]
“তোমরা কোনো ভুল করলে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই। কিন্তু সে ব্যাপারে তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকলে অপরাধ হবে। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম করুণাময়।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৫]
আল্লাহ আরো বলেন,
﴿رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَآ إِن نَّسِينَآ أَوۡ أَخۡطَأۡنَا﴾ [البقرة: ٢٨٦]
“হে আমাদের রব! যদি আমাদের ভুল হয় বা ত্রুটি হয় তজ্জন্যে আমাদেরকে ধৃত করবেন না।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৮৬]
ইহরামের অন্যতম নিষিদ্ধ কাজ শিকার করা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡتُلُواْ ٱلصَّيۡدَ وَأَنتُمۡ حُرُمٞۚ وَمَن قَتَلَهُۥ مِنكُم مُّتَعَمِّدٗا فَجَزَآءٞ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ ٱلنَّعَمِ يَحۡكُمُ بِهِۦ ذَوَا عَدۡلٖ مِّنكُمۡ﴾ [المائدة: ٩٥]
“হে মুমিনগণ! তোমরা ইহরাম অবস্থায় বন্য শিকারকে হত্যা করো না; আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক তাকে হত্যা করবে, তার ওপর তখন জরিমানা ওয়াজিব হবে, যা মূল্যের দিক দিয়ে সেই জানোয়ারের সমতুল্য হয়, যাকে সে হত্যা করেছে। তার অনুমানিক মূল্যের মীমাংসা তোমাদের মধ্যে হতে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোক করে দিবে।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৯৫]
এ আয়াতে ‘ইচ্ছাপূর্বক’ শব্দ উল্লেখ করাতে বুঝা যায়- যদি অনিচ্ছাকৃত হত্যা করে ফেলে, তবে তাকে কোনো জরিমানা দিতে হবে না। এ বিধানই ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কেননা দীন ইসলাম ক্ষমা ও সহজতার বৈশিষ্ট্যে অনন্য।
অতএব, কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই ইহরাম অবস্থায় যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজ যদি কেউ অজ্ঞতাবশতঃ বা ভুলবশতঃ করে ফেলে, তবে তার বিরুদ্ধে কোনো বিধান প্রযোজ্য হবে না, কোনো ফিদইয়া আবশ্যক হবে না- এমনকি স্ত্রী সহবাস করে ফেললেও হজ বিনষ্ট হবে না। উল্লিখিত শরী‘আতের দলীলের দাবী অনুযায়ী এটাই বিশুদ্ধ কথা।