ইমামের আওয়াজ ক্ষীণ হলে অথবা জামাআত বড় হলে ইমামের তকবীর সকল মুসল্লী পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে মুক্তাদীর উচ্চস্বরে তকবীর বলা বৈধ।
একদা মহানবী (ﷺ) অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বসে বসে নামায পড়েন। তাঁর আওয়াজ ছিল ক্ষীণ। হযরত আবূ বাক্র (রাঃ) তাঁর তকবীর শুনে তকবীর বলছিলেন এবং লোকেরা আবূ বাকরের তকবীর শুনে তকবীর বলছিল। (বুখারী ৭১২-৭১৩, মুসলিম, সহীহ)
মুক্তাদীদের মধ্যে যে মুবাল্লেগ নির্বাচিত হবে সে ইমামের তকবীর বলার পরই তকবীর বলবে। তাঁর আগে-আগে বা সাথে-সাথে বলবে না। ইমাম ‘সামিআল্লাহু লিমানহামিদাহ্’ বললে মুবাল্লেগ ‘রাব্বানা অলাকালহাম্দ’ বলবে।
প্রকাশ থাকে যে, মুবাল্লেগ হল প্রয়োজনের ক্ষেত্রে। অপ্রয়োজনে অর্থাৎ যেখানে সকল নামাযী ইমামের তকবীর শুনতে পায় সেখানে মুবাল্লেগের তকবীর পড়া ঘৃণিত বিদআত। (ফিকহুস সুন্নাহ্ আরাবী ১/২১৬, মুখতাসারু মুখালাফাতু ত্বাহারাতি অসস্বালাহ, আব্দুল আযীয সাদহান ৬২পৃ:, মু’জামুল বিদা’ ৯৪পৃ:)
মাইক যন্ত্র মুসলিমদের জন্য এক বড় নেয়ামত। আওয়াজকে দূরে ও জোরে পৌঁছানোর জন্য তার অবদান বিরাট। আর এটি আযান, ইকামত, খোতবা ও নামাযের জন্য ব্যবহার করা বিদআত নয়। যেমন বিদআত নয় বিশাল জনসভা ও ইজতেমায় তার মাধ্যমে বক্তৃতা ও ওয়ায-নসীহত করা। বলা বাহুল্য, যেখানে মাইকের মাধ্যমে সকল মুক্তাদী ইমামের তকবীরের শব্দ অনায়াসে শুনতে পারে সেখানে মুবাল্লেগের প্রয়োজন নেই। আর যেখানে মাইক ব্যবহার করা বিদআত নয় সেখানে বিশাল জামাআতে ৫০টা বা তারও বেশী সংখ্যক মুবাল্লেগ রেখে নামায পড়া অযৌক্তিক ও অতিরঞ্জন। এর ফলে ইমামের আওয়াজ শেষ কাতারে পৌঁছতে পৌঁছতে এমন হয় যে, ইমাম যখন সিজদা থেকে মাথা তুলেন, শেষের কাতারের মুসল্লীরা তখন রুকূ থেকে মাথা তোলে! ফলে জামাআতের মাঝে বিরাট বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হয়। (মু’জামুল বিদা’ ২৫, ৩৩৪পৃ:) আশ্চর্যের বিষয় যে, উক্ত প্রকার ইজতেমায় ওয়ায-নসীহত মাইকে হয়, কিন্তু নামায হয় বিনা মাইকে। হয়তো বা ওঁদের নিকট প্রথমটা বিদআত নয় এবং দ্বিতীয়টি বিদআত! কি জানি এ কোন্ বিচার?