পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে, ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করলে সে নামাযের কাযা নেই। অতএব তওবার পর কাযা উমরী বলে শরীয়তে কোন নামায নেই। বিধায় তা বিদআত।
অবশ্য এই তওবাকারী ব্যক্তির উচিৎ, বেশী বেশী করে নফল নামায পড়া এবং অন্যান্য নফল ইবাদতও বেশী বেশী করে করা। (দারেমী, সুনান ২/৪২) তার জন্য ওয়াজেব এই যে, সে সর্বদা নামায ত্যাগ করার ঐ অবহেলাপূর্ণ পাপ ও ক্ষতির কথা মনে রেখে তার প্রতিকারের উদ্দেশ্যে (নফল ইবাদতের মাধ্যমে) সদা সচেতন থাকবে। সম্ভবত: তার ঐ হারিয়ে দেওয়া দিনের কিছু ক্ষতিপূরণ অর্জন হয়ে যাবে। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ২/১৩৫)
রসূল (ﷺ) বলেন, “কিয়ামতের দিন বান্দার নিকট থেকে তার আমল সমূহের মধ্যে যে আমলের হিসাব সর্বাগ্রে নেওয়া হবে, তা হল নামায। নামায ঠিক হলে সে পরিত্রাণ ও সফলতা লাভ করবে। নচেৎ (নামায ঠিক না হলে) ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং (হিসাবের সময়) ফরয নামাযে কোন কমতি দেখা গেলে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা ফিরিশ্তাদের উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘দেখ, আমার বান্দার কোন নফল (নামায) আছে কি না।’ অতএব তার নফল নামায দ্বারা ফরয নামাযের ঘাটতি পূরণ করা হবে। অতঃপর আরো সকল আমলের হিসাব অনুরুপ গ্রহণ করা হবে।” (আবূদাঊদ, সুনান ৭৭০, তিরমিযী, সুনান ৩৩৭, ইবনে মাজাহ্, সুনান ১১৭নং, সহিহ তারগিব ১/১৮৫)
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তির নামায অনিচ্ছা সত্ত্বেও ছুটে যায়, তার জন্য কাযা আছে। আল্লাহ বান্দার অন্তরের খবর রাখেন। তার মনে অবহেলা ও শৈথিল্য না থাকলে তিনি তার কাযা গ্রহণ করবেন। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “(এই কাযা আদায় করা ছাড়া) এর জন্য আর অন্য কোন কাফফারা নেই।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৬০৩নং)
পক্ষান্তরে কাযা আদায় করার সময় ও সুযোগ না পেলে কোন পাপ হয় না। সুতরাং এ কথা সুস্পষ্ট হয় যে, মরণের সময় অথবা পরে বেনামাযী অথবা কিছু নামায ত্যাগকারীর তরফ থেকে নামায-খন্ডনের উদ্দেশ্যে রাকআত হিসাব করে কাফফারা স্বরুপ কিছু দান-খয়রাত ইত্যাদি করা নিরর্থক ও নিষ্ফল। বরং এই উদ্দেশ্যে পাপ-খন্ডনের ঐ অনুষ্ঠান ও প্রথা এক বিদআত। (ইসলাহুল মাসাজিদ, আল্লামা আলবানীর টীকা সহ্ উর্দু তর্জমা মালেক, মুঅত্তা ২৯৬পৃ:, আহ্কামুল জানাইয, আলবানী ১৭৪, ২৭৫পৃ:, মু’জামুল বিদা’ ১৬৪পৃ:) বলা বাহুল্য এমন পাপস্খলনের রীতি তো অমুসলিমদের; যারা ইয়া বড় বড় পাপ করে কোন পানিতে ডুব দিলে অথবা কিছু অর্থ ব্যয় করলে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে!