নবী মুবাশ্শির (ﷺ) অধিকাংশ মাটির উপরই সিজদাহ করতেন। কারণ, তাঁর মসজিদের মেঝেই ছিল মাটির। না ছিল তা পলস্তরা করা। আর না ছিল চাটাই, চট বা গালিচা বিছানো। ঐ মসজিদের ছাদও ছিল খেজুর ডালের। বৃষ্টির সময় কখনো কখনো ছাদ বেয়ে মসজিদের ভিতরে পানি পড়ত। এক রমযানের ২১ তারীখের রাতে তিনি পানি ও কাদাতেই সিজদাহ করেছিলেন। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর কপাল ও নাকে পানি ও কাদার চিহ্ন আমার উভয় চক্ষু প্রত্যক্ষ করেছে।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ২০৮৬ নং)
পক্ষান্তরে তিনি কখনো কখনো চাটাই-এর উপরেও নামায পড়েছেন, কখনো সিজদাহ করেছেন (সিজদার জন্য চেহারা রাখার মত) ছোট চাটাই-এর উপর। (বুখারী ৩৮০, ৩৮১নং, মুসলিম, সহীহ)
সাহাবাগণ রসূল (ﷺ) এর সাথে প্রচন্ড গরমে নামায পড়েছেন। সিজদার স্থান গরম থাকায় কপাল-নাক রাখতে না পারলে তাঁরা নিজের কাপড় সিজদার জায়গায় বিছিয়ে নিয়ে তার উপর সিজদাহ করতেন। (বুখারী ৩৮৫নং, মুসলিম, সহীহ)
হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন, সাহাবাগণ পাগড়ী ও টুপীর উপর (কপালে রেখে) এবং হাত দু’টিকে আস্তিনের ভিতরে রেখে সিজদাহ করতেন। (বুখারী, ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ১/৫৮৭)
বলাই বাহুল্য যে, কতক ‘দরবেশ-পন্থী’দের উক্তি ‘শয়তানের সিজদার জায়গায় সিজদাহ করতে নেই। সে আসমানে-জমীনে সিজদাহ করে তিল বরাবরও স্থান বাকী রাখেনি। অতএব মাটিতে সিজদাহ বৈধ নয়---’ ভিত্তিহীন এবং নামাযের প্রতি বিতৃষ্ণা ও অনীহার বড় দলীল। মুসলিম এমন কথায় ধোকা খায় না।