সিয়ামের মধ্যে মানুষের জীবনে কী কী উপকার রয়েছে?

এর উপকারিতা বহুবিধ যার অংশবিশেষ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

(ক) প্রথমতঃ মানসিক উপকারিতা

[১] সিয়াম তাকওয়া অর্জন ও আল্লাহ ভীরু হতে সহায়তা করে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [البقرة: ١٨٣]

[১] ঈমানদারগণ!, তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। (বাকারাহ : ১৮৩)

[২] শয়তানী শক্তি ও কু-প্রবৃত্তির ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। মানবদেহের শরীরের যে শিরা উপশিরা দিয়ে শয়তান চলাচল করে সিয়ামের ফলে সেগুলো নিস্তেজ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে।

[৩] সিয়াম হল আল্লাহর নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পন ও ইবাদতের প্রশিক্ষণ।

[৪] আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য ধারণ ও হারাম বস্ত্ত থেকে দূরে থাকার সহনশীলতার প্রশিক্ষণ দেয় এ সিয়াম।

[৫] ঈমান দৃঢ়করণ এবং বান্দার প্রতি আল্লাহর সার্বক্ষণিক নজরদারীর অনুভূতি সৃষ্টি করে দেয়। এজন্য রোযাদার লোকচক্ষুর আড়ালে গোপনেও কোন কিছু খায় না।

[৬] দুনিয়ার ভোগ বিলাসের মোহ কমিয়ে সিয়াম পালনকারীকে আখিরাতমূখী হওয়ার দীক্ষা দেয় এবং ইবাদতের প্রতি তার ক্ষেত্র প্রসারিত করে দেয়।

[৭] সিয়াম সাধনার ফলে বান্দা সৎ গুণাবলী ও সচ্চরিত্রের অধিকারী হয়ে থাকে।

[৮] সিয়ামে ক্ষুধার অনুভূতিতে অভাবী ও দরীদ্র জনগোষ্ঠীর দূরাবস্থা অনুধাবন করতে শিখায়। ফলে তাকে বঞ্চিত ও অনাহারী মানুষের প্রতি দয়াদ্র ও সহানুভুতিশীল করে তুলে।

[৯] সৃষ্ট জীবের সেবা করার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।

[১০] সিয়াম পালন আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে।

[১১] এ রমযান বান্দাকে নিয়ম-শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা শিক্ষা দেয়।

(খ) দ্বিতীয়তঃ দৈহিক উপকারিতা :

[১] সিয়াম মানব দেহে নতুন সূক্ষ্ম কোষ (ঈবষষ) গঠন করে থাকে।

[২] সিয়াম পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম দিয়ে থাকে। ফলে এগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং তা আবার সতেজ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।

[৩]মোটা মানুষের স্থূলতা কমিয়ে আনতে সিয়াম সাহায্য করে।

[৪] মাত্রাতিরিক্ত ওজন কমিয়ে এনে অনেক রোগবালাই থেকে হিফাযত করে।

[৫] অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে ডাইবেটিস ও গ্যাস্ট্রিক রোগ নিরাময়ে সিয়াম ফলদায়ক ও এক প্রকার সহজ চিকিৎসা।