উত্তর - জীবিত হোক আর মৃত হোক প্রতিটি মুসলিম অত্যন্ত সম্মানের অধিকারী, সুতরাং তার সাথে এমন কোন আচরণ করা উচিৎ হবে না, যা তার জন্য কষ্টকর বা তার আকৃতি বিকৃতির শামিল, যেমন হাড় ভাঙ্গা বা টুকরো টুকরো করা ইত্যাদি। হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«كسر عظم الميت ككسره حيا »( رواه أبوداود)
“মৃতের হাড় ভাঙ্গা তার জীবিত অবস্থায় হাড় ভাঙ্গার ন্যায়”। (আবুদাউদ) উল্লেখিত হাদিস এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, কোন জীবিত ব্যক্তির উপকারার্থে মৃত ব্যক্তির অঙ্গহানি করা, যেমন হৃদপিণ্ড বা কলিজা ইত্যাদি কর্তন করা জায়েয নয়, কারণ এটা হাড় ভাঙ্গা হতেও জঘন্য। মানবঅঙ্গ দান করা জায়েয কি না এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে। কতিপয় আলেম বলেছেন বর্তমান সময়ে অঙ্গদানের অধিক প্রয়োজন দেখা দেয়ার কারণে তা বৈধ। কিন্তু তাদের এ উক্তি সঠিক নয়। পূর্বোল্লিখিত হাদিস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, অঙ্গদান জায়েয নেই। এবং এতে যেমন মৃত ব্যক্তির অঙ্গের সাথে খেল-তামাশা করা হয়, অনুরূপ তাকে অপমানও করা হয়।
বাস্তব সত্য হল এই যে, মৃতের ওয়ারিসগণ সম্পদের লোভে মৃতের মানহানীর বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করে না, তা ছাড়া ওয়ারিসগণ তো শুধু মৃতের মালের ওয়ারিস হয় তার দেহের ওয়ারিস তো কেউ হয় না।
উত্তর - এ বিষয়টি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ, যদি মৃত কাফের জিম্মি অথবা চুক্তিভুক্ত বা নিরাপত্তাকামী হয়, তাহলে তার হাড় বিচ্ছিন্ন করা জায়েয হবে না, কারণ সে মুসলিমদের ন্যায় সম্মানী, আর যদি সে যুদ্ধরত দেশের হয় তাহলে জায়েয হবে।
উত্তর - ওয়াজিব নয়, কারণ কিসাস তো চলে শর্তসাপক্ষে শুধু জীবিতদের মাঝে।
উত্তর – পূর্বের ফতোয়ার কারণে তার অসিয়ত বাস্তবায়ন করা হবে না। যদিও সে অসিয়ত করে যায়, কারণ তার দেহের মালিক সে নিজে নয়।
উত্তর - মৃতের ত্যাজ্য সম্পদ হতে সর্বপ্রথম কাফন দাফন যেমন লাশের গোসল দেয়া, কবর খনন করা ইত্যাদির খরচ বের করা হবে, অতপর বন্ধকের বিনিময়ে গৃহিত ঋণ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সাধারণ কর্জ পরিশোধ করা হবে, অতঃপর সম্পদের এক তৃতীয়াংশ হতে ওয়ারিস ব্যতীত অন্যদের জন্য কৃত অসিয়ত পূরণ করা হবে।
উত্তর – না, তাকে মৃত বলা যাবে না, তাকে মৃত ঘোষণা করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবে না, বরং মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। অনেক সময় ডাক্তারগণ রুগির কলিজা ইত্যাদি কেটে নেয়ার জন্য এ বিষয়ে তাড়াহুড়ো করে, এবং মৃতকে নিয়ে যাই ইচ্ছা তাই করতে থাকে এগুলো সম্পুর্ণ নাজায়েয।
উত্তর - তাদের এ দাবি নির্ভরযোগ্য নয়। আমাদের নিকট এমন অনেক তথ্য আছে যে, ব্রেইন স্ট্রোককৃত মানুষ জীবন ফিরে পেয়েছে এবং দীর্ঘদিন জীবিত ছিল। মূল কথা হচ্ছে ব্রেইন স্ট্রোককৃত ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত বলা যাবে না, যতক্ষণ না তার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
উত্তর - যেহেতু হাদিস শরিফে সূরা ইয়াসিন পড়ার কথা এসেছে তাই ঐ সূরা পড়াই উত্তম, কিন্তু তার সাথে অন্য সূরা পড়লেও কোন সমস্যা নেই।
উত্তর – মৃত ব্যক্তিকে পুরুষ বা এমন মহিলা চুম্বন করতে পারবে যার সাথে বিয়ে বন্ধন চিরতরের জন্য হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল হলে সাহাবি আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার কপালে চুমু দিয়েছিলেন।
উত্তর - প্রয়োজনে ছয়মাস বা ততোধিক সময় দেরি করা যেতে পারে।