إستنجاء শব্দটি বাবে إستفعال এর মাসদার। এর আভিধানিক অর্থ: পরিত্রাণ পাওয়া বা কর্তন করা। যেমন বলা হয় نجوت الشجرة অর্থাৎ: আমি গাছ কর্তন করেছি। একে إستنجاء এজন্যই বলা হয় যে, এর মাধ্যমে কষ্ট কর্তন বা দূরিভূত করা হয়।
পরিভাষায়: পানি, পাথর, কাগজ বা অনুরূপ কিছু দ্বারা দু’রাস্তা (অগ্র ও পশ্চাদ) দিয়ে নির্গত নাপাক দূর করাকে ইসতিনজা বলে। ইসতিনজাকে ইসতিজমার নামেও অবহিত করা হয়। কেননা অনেক সময় ইসতিনজা করার ক্ষেত্রে ছোট পাথর ব্যবহার করা হয়। অনুরূপভাবে একে ইসতিতাবাও বলা হয়। কেননা এর মাধ্যমে শরীর থেকে নাপাকী দূর করার পর পবিত্রতা অর্জন করা হয়।[1]
ইসতিনজার হুকুম:
ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)[2] ব্যতীত জমহুর আলিমদের মতে, দু’রাস্তা দিয়ে স্বভাবত যা নির্গত হয়; যেমন: পেশাব, মযি বা পায়খানা ইত্যাদির ক্ষেত্রে ইসতিনজা করা ওয়াজিব।
যেমন মহানাবী (ﷺ) এর বাণী:
«إِذَا ذَهَبَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْغَائِطِ، فَلْيَذْهَبْ مَعَهُ بِثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ فَلْيَسْتَطِبْ بِهَا؛ فَإِنَّهَا تَجْزِي عَنْهُ»
তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় গমন করে, তখন সে যেন তার সাথে তিনটি পাথর (কুলুখ) নিয়ে যায়, যা দ্বারা সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।[3]
এটা আদেশ সূচক বাণী। আর এ আদেশটি ওয়াজিব বা আবশ্যকতার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এর পর মহানাবী (ﷺ) এর বাণী فَإِنَّهَا تَجْزِي এর মধ্যে تَجْزِي (যথেষ্ট) শব্দটি ওয়াজিব অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। মহানাবী (ﷺ)আরও বলেন: لا يستنجي أحدكم بدون ثلاثة أحجار -অর্থাৎ: তোমরা কেউ তিনটি পাথরের কম পাথর দ্বারা ইসতিনজা করবে না।[4]
এখানে তিনটি পাথরের কম ব্যবহার করার নিষেধাজ্ঞা এটাই প্রমাণ করে যে, এর চেয়ে কম ব্যবহার করা হারাম। যেহেতু নাপাকীর ক্রিয়দাংশ পরিত্যাগ করা হারাম, সেহেতু তার সম্পূর্ণটা পরিত্যাগ করা আরও বেশি হারাম।
[2] ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, ইসেত্মঞ্জা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, যতÿণ না নির্গত নাজাসাত থেকে মুক্ত না হওয়া যায়। তাদের দলীল হল, "من إستجمر فليوتر, من فعل فقد أحسن, ومن لا فلا حرج" অর্থাৎ, ‘‘যে ইসেত্মঞ্জা করার জন্য ঢিলা নিবে সে যেন বেজড় ঢিলা নেই। যে এটি করল সে ভাল কাজ করল। আর যে করল না তার কোন ÿতি নাই’’। হাদীসটি যঈফ। যঈফুল জামে (৫৪৬৮)
[3] শাওয়াহেদের কারণে হাসান; আবূ দাউদ হা/ ৪০; নাসাঈ ১/১৮; আহমাদ ৬/১০৮-১৩৩ সনদ যঈফ, তবে শাওয়াহেদ থাকার কারণে তা শক্তিশালী হয়েছে। দেখুন, ইরওয়া (৪৪)
[4] মুসলিম হা/ ২৬২; নাসাঈ ১/১২; তিরমিযী (১৬); আবূ দাউদ।
নিম্নে উল্লেখিত দু’টি বস্ত্ত দ্বারা ইসতিনজা করা বৈধ। যথা:
১। পাথর এবং অনুরূপ জমাটবদ্ধ পদার্থ, যেগুলো দ্বারা নাপাক দূর করা যায় ও যা ব্যবহার হারাম নয়। যেমন: কাগজ, নেকড়া, শুকনো কাঠ এবং যা দ্বারা নাপাকমুক্ত করা যায় এমন বস্ত্ত।
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) বলেন:
«إِذَا ذَهَبَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْغَائِطِ، فَلْيَذْهَبْ مَعَهُ بِثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ فَلْيَسْتَطِبْ بِهَا؛ فَإِنَّهَا تَجْزِي عَنْهُ»
তোমাদের কেউ যখন পায়খানায় গমন করে, তখন সে যেন তার সাথে তিনটি পাথর (কুলুখ) নিয়ে যায়, যা দ্বারা সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।[1]
বিশুদ্ধ মতে তিনটি পাথরের কমে ইসতিনজা করা বৈধ নয়:
عَنْ سَلْمَانَ، قَالَ: لَقَدْ نَهَانَا أَنْ نَسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةَ لِغَائِطٍ، أَوْ بَوْلٍ، أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِيَ بِالْيَمِينِ، أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِيَ بِأَقَلَّ مِنْ ثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ، أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِيَ بِرَجِيعٍ أَوْ بِعَظْمٍ
(ক) সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয় নাবী কারীম (ﷺ) আমাদেরকে কিবলামুখী হয়ে পেশাব পায়খানা করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন: আমরা যেন ডান হাত দিয়ে ইসতিনজা না করি, তিনটি পাথরের কমে যেন ইসতিনজা না করি এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা যেন ইসতিনজা না করি।[2]
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ إِذَا اسْتَجْمَرَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْتَجْمِرْ ثَلَاثًا
(খ) জাবির ইব্নে আবদুলাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুলাহ (ﷺ) বলেছেন: তোমরা কেউ যখন ঢিলা কুলুখ ব্যবহার করবে তখন, সে যেন তিনটি ঢিলা ব্যবহার করে।[3]
عن خلاد الجهني عن أبيه السائب أن النبي ﷺ قال إذا دخل أحدكم الخلاء فليتمسح بثلاثة أحجار
(গ) খিলাদ আল জাহনী তার পিতা সায়েব এর সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেন: যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় প্রবেশ করবে ,তখন সে যেন তিনটি পাথর নেয়।[4]
আমার বক্তব্য: যদি তিনটি পাথর দ্বারা নাপাকমুক্ত হয় তাহলে ভাল কথা। আর না হলে তিনটির বেশি নেয়া ওয়াজিব হবে, যতক্ষণ না নাপাকমুক্ত হবে।
[2] মুসলিম হা/ ২৬২; নাসাঈ ১/১২; তিরমিযী (১৬); আবূ দাউদ।
[3] সহীহ; আহমাদ, ইবনে আবী শায়বা, ইবনে খুযায়মা। হুয়ায়নী (অলস্নাহ তাঁকে হিফাযত করুন!) ‘বাযলুল ইহসান’ এর ১/৩৫১ পৃঃ তে বলেন, এর সনদ সহীহ।
[4] হাসান ; তবরানী কাবীর ৮/৬৬২৩, দেখুন, ‘বযল’ এর ১/৩৫২ পৃঃ ।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: لَا تَسْتَنْجُوا بِالرَّوْثِ، وَلَا بِالْعِظَامِ، فَإِنَّهُ زَادُ إِخْوَانِكُمْ مِنَ الْجِنِّ
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: তোমরা গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ইসতিনজা করো না। কেননা তা তোমাদের ভাই জিনদের খাবার।[1]
عن عَبْدَ اللَّه ابن مسعودِ قال: أَتَى النَّبِيُّ ﷺ الغَائِطَ فَأَمَرَنِي أَنْ آتِيَهُ بِثَلاَثَةِ أَحْجَارٍ، فَوَجَدْتُ حَجَرَيْنِ، وَالتَمَسْتُ الثَّالِثَ فَلَمْ أَجِدْهُ، فَأَخَذْتُ رَوْثَةً فَأَتَيْتُهُ بِهَا، فَأَخَذَ الحَجَرَيْنِ وَأَلْقَى الرَّوْثَةَ وَقَالَ: هَذَا رِكْسٌ
আবদুলাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নাবী (ﷺ) একবার শৌচ কাজে যাবার সময় তিনটি পাথর কুড়িয়ে দিতে আমাকে আদেশ দিলেন। তখন আমি দু’টি পাথর পেলাম এবং তৃতীয়টির জন্য খোঁজাখুঁজি করলাম কিন্তু পেলাম না। তাই এক খণ্ড শুকনো গোবর নিয়ে তার কাছে গেলাম। তিনি পাথর দু‘টি নিলেন এবং গোবর খণ্ড ফেলে দিয়ে বললেন, এটা অপবিত্র।[2]
[2] বুখারী হা/ ১৫৬; প্রভৃতি। এ হাদীস পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
عن أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ،قال: كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَدْخُلُ الْخَلَاءَ فَأَحْمِلُ أَنَا، وَغُلَامٌ نَحْوِي، إِدَاوَةً مِنْ مَاءٍ، وَعَنَزَةً فَيَسْتَنْجِي بِالْمَاءِ
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) পায়খানায় প্রবেশ করতেন, আর আমি ও আমার মত আরেকটি ছেলে তখন পানির পাত্র ও বর্শার ন্যায় লাঠিসহ তার পানি নিয়ে যেতাম। এই পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য করতেন।[1]
পাথর দ্বারা ইসতিনজা করার চাইতে পানি দ্বারা ইসতিনজা করাই উত্তম। মহান আল্লাহ্ পানি দ্বারা ইসতিনজা করার জন্য কুবা বাসীদের প্রশংসা করেছেন। যেমন: আবূ হুরাইরা হতে মারফূ সূত্রে বর্ণিত:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ ، قَالَ: " نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِي أَهْلِ قُبَاءٍ: (فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا) قَالَ: كَانُوا يَسْتَنْجُونَ بِالْمَاءِ، فَنَزَلَتْ فِيهِمْ هَذِهِ الْآيَةُ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন: এ আয়াতটি কুবা বাসীদের প্রশংসায় বর্ণিত হয়েছে, ‘এখানে কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতাকে পছন্দ করে’’ (সূরা তাওবা-১০৮), রাসূল (ﷺ) বলেন, তারা পানি দ্বারা ইসতিনজা করে। ফলে আল্লাহ্ তাদের ব্যাপারে এই আয়াত অবতীর্ণ করেন।[2]
ইমাম তিরমিজী (১/৩১) বলেন: এর উপরই বিদ্বানগণ আমল করে থাকেন। তারা পানি দ্বারা ইসতিনজা করাকেই পছন্দ করেন, যদিও পাথর দ্বারা ইসতিনজা করা তাদের নিকট বৈধ। তারা পানি দ্বারা ইসতিনজা করাকে উত্তম মনে করেছেন। এটি সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, ইমাম শাফেঈ, আহমাদ ও ইসহাকের অভিমত।
[2] শাওয়াহেদের কারণে হাসান; আবূ দাউদ হা/ ৪৪; তিরমিযী ৩১০০; ইবনে মাজাহ ৩৫৭; সনদ যঈফ, তবে শাওয়াহেদ থাকার কারণে তা শক্তিশালী হয়েছে। দেখুন, ইরওয়া (৪৫)।
যার বায়ু নির্গত হবে অথবা ঘুম থেকে জাগ্রত হবে, তার উপর ইসতিনজা আবশ্যক নয়। ইবনে কুদামা বলেন: এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে বলে আমরা জানি না। আবূ আবদুল্লাহ বলেন: আল্লাহ্র কিতাবে এবং তাঁর রাসূলের সুন্নায় বায়ু নির্গত হলে ইসতিনজা করার বিধান নেই। এ ক্ষেত্রে শুধু ওযূ আবশ্যক।
যায়েদ ইবনে আসলামা থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহ্র নিম্নোক্ত বাণীর ব্যাপারে বলেন:
﴿إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ﴾
যখন তোমরা সালাতে দ-ায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ধৌত কর। (মায়েদা-৬)
এখানে এর অর্থ হলো: যখন তোমরা ঘুম থেকে জাগ্রত হবে (তখন তোমরা মুখমণ্ডল ধৌত করবে)। ধৌত করা ব্যতীত অন্য কিছুর আদেশ এখানে দেয়া হয় নি। সুতরাং এটা প্রমাণিত হয় যে, তা (ইসতিনজা) ওয়াজিব নয়। কেননা ওয়াজিব সাব্যাস্ত হবে শরীয়াত কর্তৃক। এখানে ইসতিনজার ব্যাপারে কোন দলীল বর্ণিত হয় নি। এমন কি অর্থগতভাবেও কোন দলীল পাওয়া যায় না। কেননা নাপাকী দূর করার জন্য ইসতিনজার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। অথচ এ ক্ষেত্রে নাপাকীর কোন অবস্থা পাওয়া যায় না।[1]
যে সব কারণে ওযূ আবশ্যক যেসব কারণে ইসতিনজা আবশ্যক নয়। এটা সুন্নাতও নয় মুস্তাহাবও নয়, যেমনটি অনেক মানুষ ধারণা করে থাকেন। বরং এটা একক ইবাদত। ইসতিনজা করার উদ্দেশ্য হলো: স্থান নাপাকমুক্ত করা। এ ব্যাপারে কেউ বর্ণনা করেন নি যে, রাসূল (ﷺ) যখনই ওযূ করতেন তখনই ইসতিনজা করতেন। আর তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশও দেন নি।
ইসতিনজা করার কিছু বিধিমালা রয়েছে যা পালন করা বাঞ্ছনীয়।
(১) ডান হাত দ্বারা ইসতিনজা করবে না:
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: لَا يُمْسِكَنَّ أَحَدُكُمْ ذَكَرَهُ بِيَمِينِهِ وَهُوَ يَبُولُ، وَلَا يَتَمَسَّحْ مِنَ الْخَلَاءِ بِيَمِينِهِ، وَلَا يَتَنَفَّسْ فِي الْإِنَاءِ
আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: তোমাদের কেউ যেন পেশাব করার সময় ডান হাত দিয়ে পুরুষাঙ্গ না ধরে, পায়খানার পর ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য না করে এবং পানি পান করার সময় পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে।[1]
عَنْ سَلْمَانَ، قَالَ: قِيلَ لَهُ لَقَدْ عَلَّمَكُمْ نَبِيُّكُمْ كُلَّ شَيْءٍ حَتَّى الْخِرَاءَةَ، قَالَ: أَجَلْ لَقَدْ «نَهَانَا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةَ بِغَائِطٍ أَوْ بَوْلٍ، وَأَنْ لَا نَسْتَنْجِيَ بِالْيَمِينِ، وَأَنْ لَا يَسْتَنْجِيَ أَحَدُنَا بِأَقَلَّ مِنْ ثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ،
সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা তাকে বলা হলো: তোমাদের নাবী তোমাদের প্রত্যেক জিনিস শিক্ষা দেন, এমন কি পেশাব পায়খানার বিধান শিক্ষা দেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ আমাদের নাবী (ﷺ) আমাদেরকে নিষেধ করেছেন, আমরা যেন পেশাব পায়খানার সময় কিবলাকে সামনে না করি। ডান হাত দিয়ে যেন ইসতিনজা না করি এবং যেন তিনটি পাথরের কমে ইসতিনজা না করি।[2]
(২) ডান হাত দ্বারা লজ্জাস্থান স্পর্শ করবে না: এর দলীল হলো, পূর্বে উল্লেখিত আবূ ক্বাতাদাহ এর হাদীস।
(৩) ইসতিনজার পর মাটিতে হাত মাজবে অথবা সাবান বা এ জাতীয় কিছু দ্বারা হাত ধৌত করবে:
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ كَانَ النَّبِىُّ - ﷺ - إِذَا أَتَى الْخَلاَءَ أَتَيْتُهُ بِمَاءٍ فِى تَوْرٍ أَوْ رَكْوَةٍ فَاسْتَنْجَى ثُمَّ مَسَحَ يَدَهُ عَلَى الأَرْضِ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: যখন নাবী কারীম (ﷺ) পায়খানায় গমন করতেন তখন আমি তার জন্য পিতল বা চামড়ার পাত্রে পানি নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি ইসতিনজা করে মাটিতে হাত মলতেন।[3]
মায়মূনা বর্ণিত হাদীসও এ বিধানটিকে শক্তিশালী করে -
« ثُمَّ صَبَّ عَلَى فَرْجِهِ فَغَسَلَ فَرْجَهُ بِشِمَالِهِ ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ الأَرْضَ فَغَسَلَهَا»
অর্থাৎ: অতঃপর রাসূল (ﷺ) তার লজ্জাস্থানে পানি ঢাললেন এবং তার লজ্জাস্থান ধৌত করলেন। তার পর তার হাতকে মাটিতে মললেন এবং ধুয়ে ফেললেন।[4]
(৪) সন্দেহ দূর করার জন্য পেশাবের পর কাপড় ও লজ্জাস্থান বরাবর পানি ছিটিয়ে দিবে:
«عن بن عباس : أن النبي ﷺ توضأ مرة مرة ونضح فرجه»
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসূল (ﷺ) একবার করে ওযূ করতেন এবং তার লজ্জাস্থান বরাবর পানি ছিটিয়ে দিতেন।[5]
বহুমূত্র বা এ জাতীয় রোগী কিভাবে ইসতিনজা করবে?
যে ব্যক্তি বহুমূত্র বা এ জাতীয় সমস্যায় ভুগবে, সে ইসতিনজা করবে ও প্রত্যেক সালাতের জন্য ওযূ করবে। এরপর অন্য সালাতের ওয়াক্ত আসা পর্যন্ত যতটুকুই তা নির্গত হোক না কেন, তাতে কোন সমস্যা নেই। এটাই বিদ্বানদের সবচেয়ে বিশুদ্ধ মতামত। ইমাম আবূ হানীফা, শাফেঈ আহমাদ, ইসহাক ও আবূ সাওরসহ অন্যান্য বিদ্বানগণ এমতামত পেশ করেছেন। বহুমূত্র রোগে ভুক্তভোগীর হুকুম মুসত্মাহাযার হুকুমের ন্যায়।
আর মহানাবী (ﷺ) মুসত্মাহাযার ব্যাপারে বলেন:
«إِنَّمَا ذَلِكَ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ، فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلَاةَ، فَإِذَا ذَهَبَ قَدْرُهَا فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ وَصَلِّي»
এ তো ধমনি নির্গত রক্ত, হায়েয নয়। তোমার যখন হায়েয আসবে তখন সালাত ছেড়ে দিও। আর যখন তা বন্ধ হয়ে যাবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর সালাত আদায় করবে।[6]
বুখারীতে রয়েছে, বর্ণনাকারী বলেন, আমার পিতা বলেছেন:
»ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلاَةٍ، حَتَّى يَجِيءَ ذَلِكَ الوَقْتُ»
তারপর এভাবে আরেক হায়েয না আসা পর্যন্ত প্রত্যেক সালাতের জন্য ওযূ করবে।[7]
আমি মনে করি: এটা ওযরের হুকুমের অন্তর্গত। এটা করা হয়ে থাকে জটিলতা দূর করার জন্য। আর শরীয়াতে উম্মতের উপর থেকে জটিলতা দূর করার বিধান এসেছে।
যেমন আল্লাহ্ বলেন:
﴿يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ﴾
অর্থাৎ: আল্লাহ্ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। (সূরা বাকারাহ-১৮৬)
ইমাম মালিক ও অন্যরা মনে করেন: এ ক্ষেত্রে ইসতিনজা ও ওযূ কোনটিই আবশ্যক নয়, যতক্ষণ না ওযূ নষ্টের অন্য কোন কারণ পাওয়া যায়।
আমার বক্তব্য: যারা ওযূ নষ্টের কারণ না পাওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক সালাতের জন্য ওযূ আবশ্যক নয় বলে মনে করেন, তারা সম্ভবতঃ পূর্বোলেস্নখিত হাদীসের- «تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلاَةٍ » ‘‘প্রত্যেক সালাতের জন্য ওযূ করবে’’ অংশটিকে যঈফ মনে করেন। তবে বিশুদ্ধ মতামত হলো: প্রত্যেক সালাতের জন্য ওযূ করতে হবে। যেমনটি হায়েজ অধ্যায়ে আলোচনা হবে।
[2] মুসলিম (২৬২) , আবূ দাউদ (৮), তিরমিযী (১৬), নাসাঈ (১/১৬)
[3] হাসান লি গায়রিহী; আবূ দাউদ হা/৪৫; ইবনে মাজাহ হা/ ৬৭৮; নাসাঈ ১/৪৫; দেখুন, মেশকাত হা/৩৬০
[4] বুখারী হা/ ২৬৬; মুসলিম হা/৩১৭
[5] দারেমী হা/৭১১; বায়হাকী ১/১৬১; আলবানী ‘তামামুল মিন্নাহ’ এর ৬৬ পৃঃ বলেন, শায়খাইনের (বুখারী ও মুসলিম) শর্ত অনুযায়ী এর সনদ সহীহ।
[6] বুখারী হা/ ২২৮; মুসলিম হা/৩৩; প্রভৃতি, নাসাঈ (১/১৮৫ পৃঃ) و توضئى শব্দ অতিরিক্ত করে "فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ و توضئى وَصَلِّي" এ শব্দে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। এটা শায এর অমত্মর্গত। নাসাঈ ও বাইহাক্বী (১/৩২৭) এটাকে মুয়ালস্নাল বলেছেন। ইমাম মুসলিম এটাকে মুয়ালস্নাল (ত্রম্নটিযুক্ত) হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইমাম বুখারী এর তাখরীজ করেন নি। দেখুন! মুসত্মফা বিন আদাবী (আলস্নাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করুন!) প্রণীত ‘জামিউ আহকামুন নিসা’ (১/২২৩-২২৬) ।
[7] এটা মহানবী (ছাঃ) এর মারফূ বাণী হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। অথবা আয়েশা থেকে বর্ণনাকারী রাবী উরওয়াহ বিন যুবাইরের উক্তি হতে পারে। এর দ্বারা তিনি সে মহিলাটিকে ফতওয়াহ দিয়েছেন যে মহিলাটি তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিল, যেমনটি দারেমীতে বর্ণিত হয়েছে (১/১৯৯)। ফতহুল বারীতে ১/৩৩২) হাফেজ ১ম সম্ভবনার দিকে ধাবিত হয়েছেন। আর সুনানে (১/৩৪৪) ইমাম বাইহাকী (রহঃ) ২য় সম্ভবনার দিকেই মত প্রকাশ করেছেন। আমাদের শায়েখ মুসত্মফা বিন আদাবী (আলস্নাহ তার হিফাযত করুন!) ‘জামিউ আহকামুন নিসা’ (১/২২৭) তে এটাকে প্রধান্য দিয়েছেন।
যে ব্যক্তি পেশাব অথবা পায়খানা করার ইচ্ছা করবে তার জন্য নিম্নোক্ত বিধিমালা মেনে চলা বাঞ্ছনীয়:
(১) জনসাধারণের সান্নিধ্য থেকে দূরে এবং আড়ালে যেতে হবে, বিশেষত খোলা জায়গা হলে:
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ فِي سَفَرٍ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَأْتِي الْبَرَازَ حَتَّى يَتَغَيَّبَ فَلَا يُرَى
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদা আমরা এক সফরে রাসূল (ﷺ) এর সাথে বের হলাম, রাসূল (ﷺ) মলমূত্র ত্যাগের জন্য এতদূর যেতেন যে, তাকে কেউ দেখতে পেত না।[1]
(২) আল্লাহ্র যিকর বা নাম লিখিত আছে এমন কোন জিনিস মলমূত্র ত্যাগকারীর সাথে নিয়ে যাবে না:[2] যেমন- এমন আংটি যাতে আল্লাহ্র নাম লিখিত আছে অথবা অনুরূপ কিছু। কেননা ইসলামী শরীয়াতে আল্লাহ্র নামকে সম্মান করা জরুরী।
আল্লাহ্ বলেন:
﴿ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ﴾
যে আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহকে সম্মান করে, নিঃসন্দেহে তা অন্তরের তাকওয়া থেকেই (সূরা হাজ্জ-৩২)।
এ ব্যাপারে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে-
«كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا دَخَلَ الْخَلَاءَ وَضَعَ خَاتَمَهُ»
অর্থাৎ: মহানাবী (ﷺ) যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন তখন তার আংটিটি খুলে রাখতেন।[3] কিন্তু হাদীসটি মুনকার। হাফেজ এ হাদীসটিকে ত্রুটিযুক্ত বলেছেন। এ কথা সবারই জানা যে, মহানাবী (ﷺ) এর আংটিতে محمد رسول الله (মুহাম্মাদূর রাসুলুল্লাহ) কথাটি খোদিত ছিল।[4]
আমি মনে করি: যদি আংটি বা অনুরূপ কিছুকে আবৃতকারী কোন কিছু দ্বারা আবৃত করে রাখা সম্ভব হয় তথা পকেটে বা অনুরূপ কিছুর মধ্যে, তাহলে তা নিয়ে পায়খানায় প্রবেশ করা বৈধ হবে। আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: চাইলে তা হাতের তালুর মধ্যে রেখে দিবে। যদি বাইরে রাখলে হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে তাহলে জরুরী প্রয়োজনে তা নিয়েই প্রবেশ করা বৈধ। আল্লাহ্ই সর্বাধিক অবগত।
(৩) পায়খানায় প্রবেশের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করবে ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে: এটা মলমূত্র ত্যাগের ঘরে প্রবেশের সময় এবং খোলা ময়দানে কাপড় তোলার সময় বলতে হবে। রাসূল (ﷺ) বলেন:
«سِتْرُ مَا بَيْنَ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِي آدَمَ إِذَا دَخَلَ الْكَنِيفَ أَنْ يَقُولَ: بِسْمِ اللَّهِ»
অর্থাৎ: জিন ও মানুষের গোপন অঙ্গের মাঝে পর্দা হলো, যখন সে পায়খানায় প্রবেশ করবে তখন সে যেন বলে: « «بِسْمِ اللَّهِ অর্থাৎ: আমি আল্লাহ্র নামে শুরু করছি।[5]
عَنْ أَنَسِ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ ﷺ إِذَا دَخَلَ الخَلاَءَ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الخُبُثِ وَالخَبَائِثِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: মহানাবী (ﷺ) যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন বলতেন:
»اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الخُبُثِ وَالخَبَائِثِ»
অর্থাৎ: হে আল্লাহ্! আমি পুরুষ ও মহিলা জিন (-এর অনিষ্ট) হতে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।[6]
(৪) পায়খানায় প্রবেশের সময় বাম পা আগে ও বের হওয়ার সময় ডান পা আগে রাখতে হবে:
এ ব্যাপারে আমি মহানাবী (ﷺ) এর পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোন দলীল পাই নি। তবে ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) আস-সাইলুল জারার (السيل الجرار) গ্রন্থে (১/৪৬) তা উল্লেখ করেছেন। প্রবেশের সময় বাম পা আগে ও বের হওয়ার সময় ডান পা আগে রাখার কারণ হলো, সম্মানিত কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা হয় আর অসম্মানিত কাজ বাম দিক থেকে শুরু করা হয়। এর প্রমাণ বর্ণিত আছে।
(৫) মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য বসার সময় ক্বিবলাকে সামনে বা পেছনে রাখবে না:
عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ: إِذَا أَتَيْتُمُ الغَائِطَ فَلاَ تَسْتَقْبِلُوا القِبْلَةَ، وَلاَ تَسْتَدْبِرُوهَا وَلَكِنْ شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا» قَالَ أَبُو أَيُّوبَ: فَقَدِمْنَا الشَّأْمَ فَوَجَدْنَا مَرَاحِيضَ بُنِيَتْ قِبَلَ القِبْلَةِ فَنَنْحَرِفُ، وَنَسْتَغْفِرُ اللَّهَ تَعَالَى
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী (ﷺ) বলেছেন: যখন তোমরা পায়খানা করতে যাও, তখন কিবলার দিকে মুখ করবে না কিংবা পিঠও দিবে না, বরং তোমরা পূর্ব দিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে। আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) বলেন: আমরা যখন সিরিয়ায় এলাম তখন পায়খানাগুলো কিবলামুখী বানানো পেলাম। আমরা কিছুটা ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতাম।[7]
কিন্তু ইবনে উমার (রাঃ) থেকে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন:
«لَقَدْ ارْتَقَيْتُ يَوْمًا عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ لَنَا، فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ عَلَى لَبِنَتَيْنِ، مُسْتَقْبِلًا بَيْتَ المَقْدِسِ لِحَاجَتِهِ»
অর্থাৎ: আমি একদিন আমাদের ঘরের ছাদের উপর উঠলাম। তারপর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে দেখলাম বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে দু’টি ইটের উপর তার প্রয়োজনে বসেছেন।[8] অর্থাৎ: যখন তিনি মদিনায় থাকা অবস্থায় বাইতুল মুকাদ্দামের দিকে মুখ ফিরিয়ে হাজাত সারছিলেন তখন কা‘বা তার পিছনে ছিল।
আমার বক্তব্য: এ হাদীস দু’টি অনুধাবনের ক্ষেত্রে বিদ্বানগণ চারটি প্রসিদ্ধ অভিমত পেশ করেছেন।[9]
১ম অভিমত: ক্বিবলাকে সামনে বা পেছনে রাখার নিষেধাজ্ঞা সাধারণভাবে করা হয়েছে। চাই তা প্রাচীর বেষ্টিত ঘর হোক বা খোলা ময়দান হোক। এটা ইমাম আবূ হানীফা, আহমাদ ও ইবনে হাযমের অভিমত। শাইখুল ইসলাম মতামতটিকে পছন্দ করেছেন। আর ইবনে হাযম তা নকল করেছেন: আবূ হুরাইরা, আবূ আইয়ূব, ইবনে মাসউদ, সোরাকাহ ইবনে মালিক, আত্বা, নাখঈ, সাওরী, আওযায়ী ও আবূ সাওর থেকে। তারা এ ব্যাপারে পূর্বোলেস্নখিত আবূ আইয়ূব (রাঃ) এর হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করে থাকেন।[10]
আর তারা ইবনে উমার (রাঃ) এর হাদীসটির বিভিন্নভাবে জবাব দিয়ে থাকেন-
(ক) নিষিদ্ধ বিষয় বৈধ বিষয়ের উপর প্রাধান্য পাবে।
(খ) এখানে একথা বলা হয় নি যে, এটা কিবলাকে সামনে বা পিছনে রাখার নিষেধাজ্ঞার পরের বিধান।
(গ) রাসূল (ﷺ) এর কর্ম উম্মতের জন্য সংশ্লিষ্ট বাণীর পরিপন্থি হয় না, তবে এটা ব্যতীত, যা এ মর্মে দলীল প্রদান করে যে, তিনি ঐ বিষয়ে তার অনুসরণের ইচ্ছা করেন। আর যদি তা না হয় তাহলে শুধু তার কর্ম তার সাথে নির্দিষ্ট হবে।
আমার বক্তব্য:শেষোক্ত কথাটির সমর্থনে বলা যায়, ইবনে উমার (রাঃ) রাসূল (ﷺ) কে ইচ্ছা ছাড়াই দেখেছিলেন। এর দ্বারা বুঝা যায়, রাসূল (ﷺ) যেন শরীয়াতের নতুন বিধান বর্ণনা না করারই ইচ্ছা করেছেন।
২য় অভিমত: এই নিষেধাজ্ঞা শুধু খোলা ময়দানের জন্য নির্দিষ্ট। প্রাচীরের মধ্যে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। এটা ইমাম মালিক ও শাফেঈ’র অভিমত। আহমাদ ও ইসহাক এর দু’টি অভিমতের একটি বিশুদ্ধ অভিমত। উভয় দলীলের মাঝে তারা সমন্বয় সাধন করে বলেন: নিয়ম হলো, কর্মের উপর কথা প্রাধান্য পায়। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বিষয়কে নির্ধারিত করা অবস্থায় এর উপর আমল করা হয়। এ ক্ষেত্রে তার কোন দলীল থাকে না।
৩য় অভিমত: কিবলাকে সামনে করা ছাড়া শুধু পেছনে করা জায়েয আছে। এটা আবূ হানীফা ও আহমাদ থেকে বর্ণিত আছে। আবূ আইয়ূবের হাদীসের সাথে উমারের হাদীসটির প্রকাশ্য আমলের জন্য।
৪র্থ অভিমত: সাধারণভাবে কিবলাকে সামনে ও পেছনে রাখা বৈধ। এটা আয়িশা, উরওয়াহ, রাবিয়াহ ও দাউদ এর অভিমত। তাদের দলীল হলো: হাদীসগুলো যেহেতু একটি অপরটির বিরোধী তাই মূলত এটা বৈধ।
আমি মনে করি: প্রথমোক্ত কথাটি তথা সাধারণ ভাবে কিবলাকে সামনে ও পেছনে করা হারাম, এটিই দলীলের দিক দিয়ে বেশি শক্তিশালী ও আমল করার দিক দিয়ে সতর্কতা মূলক। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
(৬) প্রয়োজন ছাড়া কোন কথা-বার্তা বলা থেকে বিরত থাকবে:
«عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَجُلًا مَرَّ وَرَسُولُ اللهِ ﷺ وهو يَبُولُ، فَسَلَّمَ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ»
আবদুলাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত (তিনি বলেছেন): একদা রাসূলুলাহ (ﷺ) পেশাব করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম দিলে তিনি তার সালামের জবাব দিলেন না।[11]
সালামের জওয়াব দেয়া ওয়াজিব। অথচ মহানাবী (ﷺ) পেশাব করার সময় সালামের উত্তর দিলেন না। সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, এ অবস্থায় কথা বলা হারাম। বিশেষত এ সময় আল্লাহ্র যিকর থেকে বিরত থাকবে। তবে একান্ত জরুরী কথা বলা যাবে। যেমন: কোন ব্যক্তিকে পথের সন্ধান দেয়া, পানি চেয়ে নেয়া অথবা অনুরূপ কিছু। এটা জরুরী ভিত্তিতে বৈধ। আল্লাহ্ই সর্বাধিক অবগত।
(৭) মানুষ চলাফেরা করার রাস্তায় বা যে সকল গাছের ছায়ায় মানুষ বিশ্রাম নেয় অথবা অনুরূপ স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকবেঃ
«عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ: اتَّقُوا اللَّعَّانَيْنِ قَالُوا: وَمَا اللَّعَّانَانِ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: الَّذِي يَتَخَلَّى فِي طَرِيقِ النَّاسِ، أَوْ فِي ظِلِّهِمْ»
আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: তোমরা এমন দু’টি কাজ হতে বিরত থাক যা অভিশপ্ত। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসুলুল্লাহ! সেই অভিশপ্ত কাজ দু’টি কি? জবাবে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন: যে ব্যক্তি মানুষের যাতায়াতের পথে কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানে (বৃক্ষর ছায়ায় যেখানে মানুষ বিশ্রাম গ্রহণ করে) পেশাব পায়খানা করে।[12]
(৮) গোসলখানায় পেশাব করা থেকে বিরত থাকবে: বিশেষত যে স্থানে পানি জমা হয়ে থাকে। যেমন: বাথটাব অথবা গোসলের চৌবাচ্চা বা অনুরূপ কিছু। মহানাবী (ﷺ) নিষেধ করেছেন, কোন ব্যক্তি যেন গোসল খানায় পেশাব না করে।[13]
(৯) প্রবহমান নয় এমন আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা থেকে বিরত থাকবে:
«عَنْ جَابِرٍ: عَنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ أَنَّهُ نَهَى أَنْ يُبَالَ فِي الْمَاءِ الرَّاكِدِ»
জাবির (রাঃ) রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন: নিশ্চয়ই রাসূল (ﷺ) আবদ্ধ পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।[14]
(১০) পেশাব করার সময় নরম ও নীচু জায়গা খুঁজে নিবে। শক্ত জায়গা নির্বাচন করবে না, যাতে নাপাকী শরীরে ছিটকে না আসে।
(১১) পূর্বোলেস্নখিত ইসতিনজার বিধিমালা মেনে চলবে।
(১২) মলমূত্র ত্যাগের পর বের হওয়ার সময় বলবে:
»غُفْرَانَكَ «
অর্থাৎ: হে আল্লাহ্ আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাই।
عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنَ الغَائِطِ قَالَ: «غُفْرَانَكَ»
আয়িশা থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) মলমূত্র ত্যাগের পর বের হওয়ার সময় বলতেন: غُفْرَانَكَ ।[15]
[2] মাজমূ (২/৮৭), মুগনী ( ১/২২৭), আওসাত্ব (১/৩৪২)।
[3] যঈফ ; আবুদাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ। আলবানী (রাহিমাহুলস্নাহ) হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন।
[4] বুখারী হা/৫৮৭২, মুসলিম হা/২০৯২, প্রভৃতি
[5] আল বানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, দেখুন ‘সহীহুল জা‘মে’ ৩৬১১
[6] বুখারী হা/ ১৪২; মুসলিম হা/৩৭৫।
[7] বুখারী হা/ ৩৯৪; মুসলিম হা/২৬৪; প্রভৃতি
[8] বুখারী হা/১৪৫; মুসলিম হা/২৬৬, প্রভৃতি
[9] ইমাম নববী মাজমূতে উল্লেখ করেছেন (২/৮২), হাফেজ তার ফতহুল বারীতে ( ১/২৯৬) আরো তিনটি মতামত উল্লেখ করেছেন।
[10] মুহালস্না (১/১৯৪), ফাতফ (১/২৯৬), আল-ওয়াসত (১/৩৩৪), সাইলুল জিরার (১/৬৯), ইখতিইয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ (৮)।
[11] সহীহ ; মুসলিম হা/৩৭০; আবূ দাউদ ১৬; তিরমিযী, নাসাঈ ১/১৫; ইবনে মাজাহ হা/ ৩৫৩
[12] মুসলিম হা/ ২৬৯; আবূ দাউদ হা/ ২৫
[13] সহীহ; নাসাঈ ১/১৩০; আবূ দাউদ হা/ ২৮।
[14] সহীহ;মুসলিম হা/২৮১; নাসাঈ ১/৩৪।
[15] হাসান লি গাইরিহী; তিরমিযী (৮) আবূ দাউদ হা / ৩০; আহমাদ ২/১৫৫।
এ ব্যাপারে আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) এর পক্ষ হতে ৫ টি হাদীস পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৩টি সহীহ। এর একটিতে হযরত আয়িশা (রা.) রাসূল (ﷺ) এর দাঁড়িয়ে পেশাব করাকে অস্বীকার করেছেন। ২য়টিতে রাসূল (ﷺ) এর দাঁড়িয়ে পেশাব করার ঘটনা বিবৃত হয়েছে। আর ৩য়টিতে বসে পেশাব করার ঘটনা বিবৃত হয়েছে। আর ২টি হাদীস যঈফ। তার একটিতে দাঁড়িয়ে পেশাব করার নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে। অপরটিতে দাঁড়িয়ে পেশাব করাকে অহমিকার সাথে বিশেষিত করা হয়েছে।
হাদীসগুলো নিম্নে বর্ণিত হলো:
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: مَنْ حَدَّثَكُمْ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ يَبُولُ قَائِمًا فَلَا تُصَدِّقُوهُ، مَا كَانَ يَبُولُ إِلَّا قَاعِدًا
(১) আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: তোমাদের মধ্যে যদি কেউ বলে যে, রাসূল (ﷺ) দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন, তাহলে তোমরা তা বিশ্বাস করো না।[1]
عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ ﷺ فَانْتَهَى إِلَى سُبَاطَةِ قَوْمٍ، فَبَالَ قَائِمًا فَتَنَحَّيْتُ فَقَالَ: ادْنُهْ فَدَنَوْتُ حَتَّى قُمْتُ عِنْدَ عَقِبَيْهِ فَتَوَضَّأَ فَمَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ
(২) হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: একদিন আমি নাবী (ﷺ) এর সঙ্গে ছিলাম। এক সময় তিনি লোকজনের আবর্জনা ফেলার স্থানে পৌঁছলেন এবং সেখানে দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন। এ দেখে আমি কিছুটা দূরে সরে দাঁড়ালাম। কিন্তু তিনি আমাকে নিকটে আসতে বললেন। আমি তার কাছে এগিয়ে গেলাম। এমনকি একেবারে তার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনি প্রয়োজন সেরে ওযূ করলেন এবং মোজার উপর মাসাহ করলেন।[2]
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ابْنِ حَسَنَةَ قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ ﷺ وَفِي يَدِهِ كَهَيْئَةِ الدَّرَقَةِ، فَوَضَعَهَا ثُمَّ جَلَسَ خَلْفَهَا، فَبَالَ إِلَيْهَا.
(৩) আব্দুর রহমান ইবনে হাসানাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল (ﷺ) একদা আমাদের কাছে আগমন করলেন। তাঁর হাতে চামড়ার তৈরি ঢালের মত একটি বস্ত্ত ছিল। তিনি তা স্থাপন করলেন। এরপর তার পেছনে বসলেন এবং সেদিকে ফিরে পেশাব করলেন।[3]
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ: " رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ ﷺ وَأَنَا أَبُولُ قَائِمًا، فَقَالَ: يَا عُمَرُ لَا تَبُلْ قَائِمًا فَمَا بُلْتُ قَائِمًا بَعْدُ
(৪) ইবনে উমার বর্ণনা করেন: উমার (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ﷺ) আমাকে দাঁড়িয়ে পেশাব করতে দেখলে তিনি আমাকে বললেন: হে উমার! দাঁড়িয়ে পেশাব করো না। উমার (রাঃ) বলেন, এর পর থেকে আমি আর কখনও দাঁড়িয়ে পেশাব করি নি।[4]
عن بريدة أن النبى ﷺ قال " ثلاثة من الجفاء: أن يبول الرجل قائما, أو يمسح جبهته قبل أن يفرغ من صلاته, أو ينفخ فى سجوده"
(৫) বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন: তিনটি কাজ অহমিকার অন্তর্ভর্ুক্ত। দাঁড়িয়ে পেশাব করা, সালাত সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই কপাল মুছা ও সাজদার সময় ফুঁক দেয়া।[5]
আমার বক্তব্য: এ সমস্ত হাদীসগুলোর কারণে বিদ্বানগণ দাঁড়িয়ে পেশাব করার হুকুমের ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনটি অভিমত পাওয়া যায়[6]
১ম অভিমত: কোন ওযর ছাড়া দাঁড়িয়ে পেশাব করা মাকরূহ। এটা আয়িশা, ইবনে মাসউদ ও উমার এর দু’টি অভিমতের মধ্যে একটি অভিমত। আবূ মূসা, শা’বী, ইবনে উয়াইনা, হানাফী ও শাফেঈগণ এ অভিমত পোষণ করেছেন।
২য় অভিমত: এটা সাধারণভাবে জায়েয। উমার (রাঃ) অন্য এক বর্ণনা মতে এ অভিমত পোষণ করেছেন। আলী, যায়েদ বিন ছাবিত, ইবনে উমার, সাহল ইবনে সাদ, আনাস, আবূ হুরাইরা ও হুযাইফা (রাঃ) এ মতামত ব্যক্ত করেছেন। হাম্বলীগণ এ মতের অনুসারী।
৩য় অভিমত: যদি এমন নরম জায়গায় পেশাব করা হয় যেখান থেকে পেশাব শরীরে ছিটকে আসা সম্ভব নয় তাহলে দাঁড়িয়ে পেশাব করা যাবে। নচেৎ যাবে না। এটা ইমাম মালিকের অভিমত। ইবনে মুনযির এ মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
আমার বক্তব্য: বিশুদ্ধ মতামত হলো, যদি পেশাব শরীরে ছিটকে এসে পড়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে দাঁড়িয়ে পেশাব করা মাকরূহ নয়। এর কারণ নিম্নরূপ-
(১) এর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে মহানাবী (ﷺ) থেকে কোন সহীহ বর্ণনা পাওয়া যায় না।
(২) মহানাবী (ﷺ) এর বসে পেশাব করাটা দাঁড়িয়ে পেশাব করা জায়েয হওয়াকে বাধা দেয় না। বরং উভয়টিই বৈধ হওয়াকেই সমর্থন করে।
(৩) মহানাবী (ﷺ) থেকে দাঁড়িয়ে পেশাব করার হাদীস সাব্যাস্ত হয়েছে।
(৪) মূলতঃ আয়িশা এর পক্ষ থেকে মহানাবী (ﷺ) এর দাঁড়িয়ে পেশাব করার ব্যাপারে যে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা হয়েছে তা ছিল তাঁর বাড়িতে থাকা অবস্থায়। তাই তিনি শুধু দাঁড়িয়ে পেশাব না করার ব্যাপারেই জানতেন। সুতরাং তা বাইরে দাঁড়িয়ে পেশাব করার ঘটনাকে না বোধক করে না। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কোন বিষয়ে জ্ঞান না থাকাটা কোন জ্ঞানকে না বোধক করে না। এ বিষয়ে হুযাইফাসহ অন্যরা জানতেন। সুতরাং, এটা যারা জানতেন না তাদের উপর প্রমাণ। আর হাঁ বোধক বিষয় না- বোধকের উপর প্রধান্য পায়। আল্লাহ্ই ভাল জানেন!
[2] বুখারী হা/ ২২৬; মুসলিম হা/২৭৩; প্রভৃতি।
[3] সহীহ; আবূ দাউদ হা/ ২২, নাসাঈ ১/২৭; ইবনে মাজাহ হা/ ৩৪৬; আহমাদ ৪/১৯৬।
[4] যঈফ: ইবনে মাজাহ ৩০৮; বায়হাক্বী ১/২০২; হাকেম ১/১৮৫;ইমাম তিরমিযী (রহঃ) মুয়ালস্নাক্ব সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং তাকে যঈফ বলেছেন (আহওয়াযী ১/৬৭)।
[5] মুনকার; ইমাম বুখারী তারীখে (৪৯৬) উল্লেখ করেছেন, বায্যার (১/৫৪৭), ইমাম বুখারী ও তিরমিযী (রহঃ) হাদীসটিকে মুনকার বলেছেন। মূলতঃ এটা ইবনে মাসউদের উক্তি হিসেবে সাব্যসত্ম।
[6] মাজমূ (২/৯৮), ওয়াসত (১/৩৩৩)।