‘‘উঠ, আলেকিত হও, কেননা তোমার আলো উপস্থিত, মাবুদের মহিমা তোমার উপরে উদিত হল। কেননা, দেখ, অন্ধকার দুনিয়াকে, ঘোর অন্ধকার জাতিদেরকে আচ্ছন্ন করছে, কিন্তু তোমার উপরে মাবুদ উদিত হবেন এবং তাঁর মহিমা তোমার উপরে দৃষ্ট হবে। আর জাতিরা (Gentiles: অ-ইহুদিরা) তোমার আলোর কাছে আগমন করবে, বাদশাহরা তোমার অরুণোদয়ের আলোর কাছে আসবে। কিন্তু চারদিকে চোখ তুলে দেখ, ওরা সকলে একত্র হয়ে তোমার কাছে আসছে; তোমার পুত্ররা দূর থেকে আসবে, তোমরা কন্যাদের কোলে করে আনা হবে। তখন তুমি তা দেখে আনন্দে উজ্জ্বল হবে, তোমার অন্তর স্পন্দিত ও বিকশিত হবে; কেননা সমুদ্রের দ্রব্যরাশি তোমার দিকে ফিরিয়ে আনা যাবে, জাতিদের ঐশ্বর্য তোমার কাছে আসবে। তোমাকে আবৃত করবে উটের বহর, মাদিয়ান (Midian) ও ঐফার (Ephah) দ্রুতগামী সমস্ত উট; সাবা দেশ থেকে সকলেই আসবে; তারা সোনা ও কুন্দুরু আনবে এবং মাবুদের প্রশংসার সুসংবাদ তবলিগ করবে। কায়দারের (Kedar) সমস্ত ভেড়ার পাল তোমার কাছে একত্রীকৃত হবে, নবায়োতের (Nebaioth) ভেড়াগুলো তোমার পরিচর্যা করবে। আমার কোরবানগাহর উপরে কোরবানী হিসেবে তাদের কবুল করা হবে, আর আমি নিজের ভূষণস্বরূপ গৃহ বিভূষিত করবো (I will glorify the house of my glory)।’’ (মো.-১৩)
এ বক্তব্যটাও বাহ্যত মুহাম্মাদ (ﷺ) বিষয়ক ভবিষ্যদ্বাণী। এখানে বাহ্যত মক্কাকে সম্বোধন করা হয়েছে এবং মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর মাধ্যমে আরব দেশ, বিশেষত মক্কার পবিত্র ঘরের বিশ্বব্যাপী মর্যাদা লাভ ও বিশ্বের সর্বত্র থেকে মানুষের হজ্জে আগমনের কথা বলা হয়েছে। ইসমাইল (আ)-এর প্রথম পুত্র নবায়োত ও দ্বিতীয় পুত্র কায়দারের উল্লেখের মাধ্যমে ইসমাইল বংশের সাথে এ ভবিষ্যদ্বাণীটার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা হয়েছে। মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর আগমনের পরে এভাবেই পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে সম্পদ ও উপহার মক্কা-মদীনায় আগমন করেছে। একমাত্র মক্কার ‘আপনার ভূষণস্বরূপ গ্রহ’ পবিত্র কাবাঘর ছাড়া অন্য কোথাও কায়দারের বা কেদরের, অর্থাৎ আরব জাতির সমস্ত মেষপাল একত্রীকৃত হয়নি। যিরূশালেমের ধর্মধামেও না, খৃস্টানদের মহাচার্চ, ভ্যাটিকান বা অন্য কোথাও নয়। মজার ব্যাপার হলো, নবায়োত ও কায়দারের মেষপাল, অর্থাৎ আরব উপদ্বীপের মানুষেরা কখনোই ইহুদি বা খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করার মাধ্যমে শলোমনের মন্দির বা ভ্যাটিকানের চার্চে একত্রিত হয়নি।