ঈশ্বর ও তাঁর ভাববাদীর এ নির্দেশ অনুসারে ‘কুমারী’ বা ‘অবিবাহিত সতী মেয়ে’ ছাড়া সকল নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়। অবিবাহিতা মেয়েটা ‘সতী’ কি ‘অসতী’ তা নিশ্চিত করার জন্য কী পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল তা বাইবেল উল্লেখ করেনি। তবে বাইবেল বলছে যে, ৩২ হাজার ‘অবিবাহিতা’ মেয়ে সতী বা কুমারী ছিলেন বলে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছিলেন এবং তাদেরকে ‘নিজেদের জন্য’ বাঁচিয়ে রেখেছিলেন: ‘‘সৈন্যদের লুট থেকে যা বাকী রইল তা হল ছয় লক্ষ পঁচাত্তর হাজার ভেড়া ও ছাগল, বাহাত্তর হাজার গরু, একষট্টি হাজার গাধা এবং বত্রিশ হাজার অবিবাহিত সতী (কুমারী) মেয়ে।’’ (শুমারী ৩১/৩২-৩৫)
সুপ্রিয় পাঠক, তৎকালীন সমাজে ছোট বয়সেই মেয়েদের বিবাহ হয়ে যেত। এজন্য অবিবাহিত কুমারী মেয়েদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকত। প্রশ্ন হল, মাদিয়ানীয়দের যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে কুমারীর সংখ্যাই যদি হয় ৩২ হাজার তবে যুদ্ধবন্দি বিবাহিত, বিধবা ও বৃদ্ধা নারীদের সংখ্যা কত ছিল? নিঃসন্দেহে লক্ষাধিক! প্রত্যেক বিবাহিত নারীর জন্য একটা শিশু-কিশোর সন্তান ধরলে নিহত শিশু কিশোরদের সংখ্যাও ছিল লক্ষাধিক। এদের সকলকেই ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়। প্রায় দু’ লক্ষ নারী ও শিশু কোরবানি! আর যুদ্ধবন্দি শিশু ও নারীর সংখ্যা যদি দু’লক্ষ হয় তবে অবিবাহিত যুবক ও বিবাহিত পুরুষ মিলিয়ে নিহত পুরুষদের সংখ্যাও লাখ দুয়েক ছিল। এভাবে আমরা দেখছি যে, ১২ হাজার বনি-ইসরাইল মাদিয়ানীয়দের উপর আক্রমণ করে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ হত্যা করল। তাদের মধ্যে নিরস্ত্র নিরীহ প্রায় দু’ লক্ষ নারী ও শিশু যুদ্ধবন্দি!
কেন ঘটল এ মহা হত্যাযজ্ঞ? মাদিয়ানীয়রা কি আক্রমণ করেছিল বনি-ইসরাইলদের? যুদ্ধের হুমকি বা উস্কানি দিয়েছিল? বাইবেল বলছে, এ জাতীয় কোনো কিছুই ঘটে নি। শুধু তাদের কতিপয় মানুষের কারণে বনি-ইসরাইলের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। আর এর শাস্তি হিসেবে ৪ লাখ নিরপরাধ এবং বাহ্যত নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হল!