শলোমন তার প্রেমিকার প্রেমে শুধু কাম-অঙ্গগুলোর আকর্ষণীয় ও উদ্দীপক বর্ণনা দিয়েই ক্ষান্ত হননি; উপরন্তু তিনি উদ্দীপক ভেষজের কথাও উল্লেখ করেছেন। শলোমন তার প্রিয়াকে বলছেন: “Come, my beloved, let us go forth into the field; let us lodge in the villages. Let us get up early to the vineyards; let us see if the vine flourish, whether the tender grape appear, and the pomegranates bud forth: there will I give thee my loves. The mandrakes give a smell...” কিতাবুল মোকাদ্দসের অনুবাদ: ‘‘প্রিয় আমার, চল আমরা মাঠে যাই, মেহেদী ঝোপের মধ্যে গিয়ে রাত কাটাই। চল, আমরা ভোর বেলাতেই আংগুর ক্ষেতে যাই, দেখি, আংগুর লতায় কুঁড়ি ধরেছে কি না, তাতে ফুল ধরেছে কি না আর ডালিমের ফুল ফুটেছে কি না; আমি সেখানেই তোমাকে আমার ভালবাসা দান করব। দুদাফল তার সুগন্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছে..।’’ (পরমগীত/ সেলায়মানের গজল ৭/১১-১৩)
শলোমন এখানে প্রেমিকাকে নিয়ে মাঠে মেহেদী ঝোপের মধ্যে রাত কাটানো এবং সেখানে তাকে প্রেম প্রদানের কথা বলেই ক্ষান্ত হননি; উপরন্তু বিশেষ কিছু ফলের কথাও বলেছেন। আংগুর এবং মদের কথা আমরা আগেই জেনেছি। এখানে শলোমন তার প্রেমিকার জন্য আরো দুটো ফলের কথা উল্লেখ করেছেন: ডালিম (pomegranates) ও দুদাফল (mandrakes)। প্রথমটা জন্মনিরোধক এবং দ্বিতীয়টা যৌন উদ্দীপক। খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতকের প্রসিদ্ধ গ্রিক চিকিৎসা-বিজ্ঞানী গালেন (Galen: Aelius Galenus/ Claudius Galenus/ Galen of Pergamon c 130-200 CE) লেখেছেন যে, ডালিমের মধ্যে জন্মনিরোধক উপাদান বিদ্যমান। প্রাচীন কালে অনেক মহিলাই এটাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করতেন। আধুনিক যুগেও বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, জন্ম নিরোধক বড়ির মতই ডালিম ফল প্রজনন উর্বরতা (fertility) কমায়।
তৎকালীন যুগে mandrake (দুদাফল) নামক উদ্ভিদ বর্তমান যুগের ‘ভায়াগ্রার’-র মতই প্রসিদ্ধ ছিল। এখনো পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ বিশ্বাস করেন যে, পুরুষত্বহীনতা ও দুর্বলতার জন্য এটা মহা-প্রতিষেধক এবং শক্তিশালী যৌন উদ্দীপক (powerful aphrodisiac)। এমনকি এর শেকড় দেখতে অবিকল পুংজননেন্দ্রিয়ের মত। বাইবেলে থেকে mandrakes বা দুদাফলের প্রতি নারীদের অতি আকর্ষণ জানতে দেখুন আদিপুস্তক/ পয়দায়েশ ৩০/১৪-১৬ ।